পত্রবাহক বিড়াল
পত্রবাহক বিড়াল
দূরের ঐ বন, যেখানে কোমল ঝর্ণার স্রোতধারা, দুরন্ত মাঠের কচি ঘাস, সে বলে এক বিড়াল আরেক ছোট্ট ইঁদুরের সাথে ছিল খুব বন্ধুত্ব। ইঁদুর বিড়ালকে খাবারের সন্ধান দিত ,ফলস্বরূপ বিড়াল ইঁদুরকে অন্য বিড়াল থেকে রক্ষা করতো। কিন্তু একদিন বিড়ালের এত খিদে পেল যে সে ইঁদুরকে বলল"আজ তোকে খাব!"ইঁদুর দেখল পালানোর পথ নেই। কী আর করা? তাই ইঁদুর কাকতি-মিনতি করে বলল"মরবো তো অবশ্যই। তবে আমি যে মরবো, সেটা তো আমার বউ-ছেলেদের জানা দরকার। আমাকে মারার আগে এই চিঠিটা পাঠিয়ে দাও।"বিড়াল রাজি হলো। পত্র দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে রওনা দিল ইঁদুরের বাড়ি। পথে দেখা হল কাঠবিড়ালির সাথে। কাঠবিড়ালি বিড়াল কে বলল "
ও বিড়াল মিঁয়াও,
কোথায় তুমি যাও?"
বিড়াল চিঠি মুখে নিয়ে বলল"
ইঁদুরের পত্র নিয়ে ,
ফিরবো তাদের বাসায় দিয়ে।"
কাঠবিড়ালি বলল"বেশ তো! আমার এক বন্ধুকে আমি নেমন্তন্ন করব। তা বন্ধুকে তুমি এই চিঠিটা পাঠিয়ে দাও। ওইদিকে বাসা। তাহলে তোমাকে আমি খাবারের সন্ধান দিব।"বিড়াল রাজি হয়ে ইঁদুর আর কাঠবিড়ালির পত্র নিয়ে আবার রওনা দিল। এবার দেখা হলো হালুম বাঘ মামার সাথে। বাঘ মামার ক'দিন ধরেই রাজা হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে। বনে আর কোনো সিংহ নেই, শুধু সিংহ রাজা ছাড়া। তাই বাঘ ভাবে, এই রাজা পদটা তো আমার হওয়া উচিত! তাই সে বিড়াল কে বলল
"ও বিড়াল মিঁয়াও
কোথায় তুমি যাও?"
বিড়াল বলল
" ইঁদুরের পত্র নিয়ে
তুমি ফিরব তাদের বাসায় দিয়ে।
কাঠবিড়ালি আমায় দেখে
দিল আরেক চিঠি, নিলাম রেখে।"
বাঘ বলল"এটাই আমার সুযোগ! শোনো বিড়াল ভায়া, এই আবেদন পত্রটা সিংহ রাজার কাছে পাঠিয়ে দাও। মাছ খেতে দেবো তোমায়!"বিড়াল রাজি হয়ে রওনা দিল, ইঁদুরের পত্র, কাঠবিড়ালির পত্র আর বাঘ মামার পত্র নিয়ে। এভাবে আরও কয়েকটি পথ নেয়া হয়ে গেল। সে সঠিকভাবে কাজ করলো, ফলে সবার বাড়িতে গিয়ে এমন খাওয়া দাওয়া করল যে তার আর ইঁদুর খাওয়ার কথা মনে রইল না। এভাবেই বিড়াল পত্র বিলি করার কাজই শুরু করল। পুরস্কার স্বরূপ, সে ভালো কিছু খেতেও পেত। সেই ইঁদুর আর খাওয়ার প্রয়োজন পড়ল না তার। তাকে দেখলেই বনের পশু পাখিরা বলে ওঠে, ওই দেখো আমাদের বিড়াল পত্রবাহক যাচ্ছে!
