STORYMIRROR

Marufa Rabbi

Children Stories Classics Fantasy

3  

Marufa Rabbi

Children Stories Classics Fantasy

এক পরাধীন শিম্পাঞ্জির গল্প

এক পরাধীন শিম্পাঞ্জির গল্প

2 mins
46

দূরের এক বন, সেখানে থাকতো এক শিম্পাঞ্জির পরিবার। সুখে দুখে দিন যায়। কিন্তু একবার, তাদের জঙ্গলে শিকারিদের উপদ্রব বেড়ে গেল। তারা অনেক পশুপাখি শিকার করতে লাগলো। শিম্পাঞ্জিদের পরিবারে, একটি ছোট শিম্পাঞ্জি ছিল।

শিকারিরা সে শিম্পাঞ্জিদের পরিবারের সবাইকে হত্যা করলো, শুধু সেই ছোট শিম্পাঞ্জি ছাড়া। তারপর থেকেই শিম্পাঞ্জিটি শিকারীদের থেকে বাঁচার জন্য এখানে সেখানে ঘুরতে লাগলো। সে সবার কাছে সাহায্য চাইলো। কিন্তু কোনো লাভ হল না। একদিন শিম্পান্জিটি বন থেকে বাইরে চলে গেল। সে একটি মানুষকে দেখতে পেল। লোকটার চোখে শিম্পাঞ্জিটি পড়লো। লোকটা আসলে ছিল -একজন চিড়িয়াখানার লোক। লোকটা শিম্পাঞ্জিটিকে ভুলভাল বুঝিয়ে, চিড়িয়াখানায় রেখে দিল। সবার শিম্পাঞ্জি টাকে অনেক ভালো লাগলো। আর চিড়িয়াখানা লোকদের লাভ হতে লাগলো। শিম্পাঞ্জিটি বিরক্ত হয়ে পড়ল।

এক রাতে সে সেখান থেকে পালিয়ে গেল। চিড়িয়াখানার লোকেরা অনেক খুঁজেও তাকে পেলো না। শিম্পাঞ্জিটি দৌড়াতে দৌড়াতে এক জায়গায় বিশ্রাম নেবে, তখন একটা ছোট ছেলেকে দেখতে পেল। ছোট ছেলে শিম্পাঞ্জিটিকে কিছু খাবার খেতে দিল। তারপর তারা বন্ধু হয়ে গেল। ছেলেটির বাবা ছিল একটি সার্কাসের মালিক। লোকটি পশুদের উপর খুব নির্দয় ছিল! এজন্য ছেলেটি শিম্পাঞ্জিটিকে তার ঘরে লুকিয়ে রাখল। কিন্তু একদিন, শিম্পাঞ্জি টি ধরা পড়ে গেল! সাথে সাথে তার বাবা শিম্পাঞ্জি টাকে সার্কাসে কাজ দিয়ে দিল। ছেলেটি অনেক বোঝানোর চেষ্টা করল। কিন্তু তার বাবা মানতে নারাজ। এভাবে অনেকদিন চলে গেল। শিম্পাঞ্জি এখন অনেক কষ্টে আছে।

তার বাবা প্রতিদিন তাকে মারধর করে। একদিন তার বাবা ঘুমিয়ে পড়েছিল। মাঝরাত। ছেলেটা তখন একটা ফন্দি আটলো। কোনো মতে তার বাবার কাছ থেকে একটি চাবি সংগ্রহ করল। তারপর খুব দ্রুত সার্কাসের কাছে গেল। শিম্পাঞ্জি ছেলেটিকে দেখে অনেক অবাক হয়ে গেল। ছেলেটি বলল, শোনো। আমি এখানে তোমাকে মুক্ত করতে এসেছি। তাই এখন চুপ থাকো। ছেলেটি শিম্পাঞ্জিটিকে মুক্ত করে দিল। শিম্পাঞ্জিটি হাসি মুখে বিদায় দিল।

 ছেলেটি একটা হাতুড়ি দিয়ে শিম্পাঞ্জির ঘরের কাঁচ ভেঙে ফেলল। পরদিন তার বাবা শিম্পাঞ্জিটিকে না দেখতে পেয়ে, ছেলেটিকে বলল, আমি জানি এটা তোমার কাজ। ছেলেটিও জবাব দিল, আমি কিছু করিনি! শিম্পাঞ্জিটি কাঁচ ভেঙে পালিয়েছে। যেহেতু শিম্পাঞ্জি লোকটি ফ্রি পেয়েছিল, তাই লোকটা আর কিছু বললো না। শিম্পাঞ্জির সাথে ছেলেটির আর কখনো দেখা হয়নি। শিম্পাঞ্জিটি শুধু দৌড়াচ্ছে, যেখানে পারবে সেখানে যাবে । তার জীবনে সুখ-শান্তি তো হারিয়ে গেছে। এরপরে আর কি হবে, তা আমি জানিনা! তবে গল্পের মূল বিষয়বস্তু ছিল -এরকম কিছু পরাধীন পশু পাখির বিষয়ে সচেতন করা এবং তাদের কষ্টগুলো বোঝা। মনে রাখতে হবে, তারাও স্বাধীন থাকতে চাই। এভাবেই এই অসমাপ্ত গল্পটি শেষ হলো ।


Rate this content
Log in