বিশ্বাস
বিশ্বাস
আরে,না খেয়ে বাইরে যেও না,এতে শরীর খারাপ করবে।
-বড্ড দেরী হয়ে গেছে গো।
-নাও মুখটা খোলো দেখি।জাস্ট দু মিনিট।
-উমমম্.....আমার ফাইলটা?
-ফাইল,টিফিন,ছাতা,জলের বোতল আর ফোন সব ব্যাগে দিয়ে দিয়েছি।দাঁড়াও রুমালটা আনি।
-অর্ধেকটা খেয়ে নিয়েছি।আজকের মিটিং এ তাড়াতাড়ি যেতেই হবে।প্লিজ সোনা আর খাব না।
-ওকে,লাস্ট বাইট।হাঁ করো।
বছর আটেকের তিন্নি এসব দেখছে দরজায় কাছে এসে আর ফিকফিক করে হাসছে।"মা বাবাকে খাইয়ে দিচ্ছে",বলে উঠল একটা সরল হাসি দিয়ে।দুজনেই একটু লজ্জা পেল।রোজ তো আর মালতী বিতানকে খাইয়ে দেয় না,তাই অপ্রস্তুত পরিস্থিতিই হল কিছুটা।
-এ্যাই, দুষ্টু মেয়ে।তোকে তো রোজ খাইয়ে দিই আমি।
-আচ্ছা মালতী আমি আসছি।
-সাবধানে যেও।এখন যা ভীড় রাস্তায়।দুগ্গা দুগ্গা।আজ থেকে বছর দশেক আগে ওদের বিয়ে হয়েছিল।দেখে শুনে বিয়ে হলেও ওদের মধ্যে প্রেমের অভাব হয়নি কোনোদিন।প্রেমের থেকেও অনেক বেশী যেটা সেটা ওদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া।মালতী বিতানকে এত বোঝে যতটা হয়তো ও নিজেও বোঝেনা।ওর হঠাৎ মন খারাপ দেখেই বুঝে যায়।বিতান ও শুধু নেয়নি,মালতীর মতো না হলেও ও নিজেও মালতীর না বলা ইচ্ছাকে পরিপূরণ করার সবরকম চেষ্টা করে গেছে সবসময়।বিতানের মাঝে মাঝে মনে হয় মালতীকে যদি হঠাৎ হারিয়ে ফেলে ওর জীবনটা সবদিক থেকেই অচল হয়ে যাবে।ও ওকে যেন আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলেছে অদৃশ্য বাঁধনে।মালতী আবার কনসিভ করল।তিন্নি ভাই এর জন্য খুব জেদ করছিল।বিতান ভেবে দেখল একটা বাচ্চা এফর্ড করতে পারব ওরা।সমস্যার কিছুই নেই।কাজের লোক আছে দেখাশোনার জন্য।তবে এই দিনগুলো খুব ভারী কাটছে ওর।৪ মাসের পর থেকে কোনোরকম শারীরিক সম্পর্ক একদম বারণ ডাক্তারের।মালতী তো ওর অভ্যেসও,সেই অভ্যেসে ছেদ পড়ল আবার।তিন্নির বেলায় মালতী সারারাত বুকে মাথা রেখে শুতো।ওর গায়ের গন্ধ নিয়েই পুরুষ প্রবৃত্তিকে নিবৃত্ত করত কিছুটা।কিন্তু এবার মালতীর মা এসে ওর সাথে থাকছে কদিন ধরেই।তিন্নির সময় শাশুড়ির দরকার পড়েনি,বিতানের মা বেঁচে ছিল তখন।মালতী এত মিষ্টি যে ওর শাশুড়ি ওর মা এর কম ছিল না কোনোদিনও।বৌ টা পাশে শুয়ে আছে দেখলেও যে শান্তি সেই শান্তিটা গত দুই সপ্তাহে উধাও বিতানের।এসবে কদিন ধরেই একটু মনমরা হয়েই আছে সেটা ও নিজেও বেশ বুঝছে।মালতী তো দুদিন জিজ্ঞেস ও করেছে মাকে বাড়ি যেতে বলবে কিনা।নিজেই তো না করেছে ও।সত্যিই তো তিন্নি,বাড়ির কাজ এগুলো নিয়ে মালতী কাজের লোকে খুব একটা নির্ভর করে না।মা থাকলে হাতে হাত হবে,হঠাৎ যন্ত্রণা হলেও ও তো সবসময় থাকে না দেখার জন্য।তাছাড়া মেয়েটা কোনোদিনো বাপের বাড়ি যেতে চায় না আর পাঁচজনের মতো,যেন ও,তিন্নি আর ওদের ঘর ছাড়া কিছু চেনে না।কদিন না হয় একটু মায়ের আদর খাক।এসব ভেবেই বারণ করে দিয়েছে মালতীকে।বলে দিয়েছে মাকে বরং ৯ মাস ই থাকতে।
মন খারাপের প্রভাবটা কাজেও পড়ছে।আর পাঁচজন কলিগের চোখে ও পড়ছে ব্যাপারটা।কেউ কেউ ঠেস দিচ্ছে,কেউ কারণ জিজ্ঞেস করছে আবার কেউ কেউ জ্ঞান দিচ্ছে।এক বন্ধু রিষভের'ও বৌ প্রেগনেন্ট।ও কিন্তু ভালোই আনন্দে আছে দেখে কৌতুহল হল কিছুটা।তাও যেচে পড়ে জিজ্ঞেস করাটা খারাপ হবে ভেবেই ও কিছু বলেনি।কদিন পর হঠাৎ টিফিন টাইমে রিষভ নিজেই ওর কাছে গল্প করতে এল।
-দাদা,তোমার লাইফে কি কিছু ক্রাইসিস!
-না.....মা...নে কি ক্রাইসিস হবে!(একটু ঘাবড়ে গিয়ে)
-আরে লুকানোর কিছু নেই।তোমার অবস্থা আমার চেয়ে ভালো কে বুঝবে!
-না,মানে আর তো কদিন মাত্র।আমি এমনি ভীষণ খুশি রে।
-হুম,বুঝলাম।আমার সাথে এক বৌদির কাছে চলো।দেখবে মন পুরো ভালো হয়ে যাবে।
-ওসব খারাপ জায়গায় আমি যাই না।আমি মালতীকেই ভালবাসি শুধু।আমার দ্বারা হবে না।
-আরে একদিন চলোই না।ভালো না লাগলে আর যেও না।মেয়েটা ডিভোর্সি।কোনো বেশ্যাখানার মেয়ে নয় গো।তাছাড়া ওকে দেখলে তুমি আর কিছুই বলতে পারবেনা মিলিয়ে নিও।না হয় এটা তোমার চ্যালেঞ্জ।
-চ্যালেঞ্জ!কীসের?ঐ মেয়ে আমার ভালো লাগবে কিনা তার জন্য।
-হুম।আমিও যাব তোমার সাথে।শুধু ওকে দেখতে চলো।শুতে হবে না তোমার।
-আচ্ছা তাই হোক।তবে একা যাবনা।তুই ও থাকবি।
-হ্যাঁ গো কথা দিলাম আমি।
এই প্রথম মিথ্যে বলল ও মালতীকে।কোনোদিন দরকারও পড়েনি কোনো মিথ্যের।বলল অফিস ফেরত এক বন্ধুর মাকে হাসপাতালে দেখতে যাবে।পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনামাফিক বিকেল পাঁচটায় অফিস থেকে বেরিয়েই অটো ধরে নিল।শহরতলী পেরিয়ে যেই জায়গায় এসে বাংলোটা পেলাম সেটা আদৌও খুব একটা প্রত্যাশিত ছিল না ওর কাছে।ওর সত্যিই অবাক লাগছে যে এমন ফাঁকা জায়গায় কোনো মেয়ের একা থাকতে গা ছমছম করে না!রিষভ আর ও দুজনেই দোতলায় উঠল।সেই নারীও এল সঙ্গে সঙ্গেই।অপলক দৃষ্টিতে বিতান হাঁ করে চেয়ে আছে ওর দিকে।কি অসম্ভব সুন্দর শারীরিক গঠন,মুখটা ভীষণ নিষ্পাপ...যেন সদ্য ফোঁটা গোলাপের পাপড়ি,শাড়িটা হালকা মিষ্টি রঙের।সাজটা খুব পরিপাটি,কপালে ছোটো মেরুন টিপ,চোখে হালকা করে কাজল টানা,ঠোঁটের পাপড়িগুলো এমনিই লাল;আলাদা কোনো লালিমার প্রয়োজনই নেই।সবচেয়ে বড় কথা কোনো বেশ্যা হিসাবে ভাবতেই ওর মন চাইছিল না,কিছুতেই না।সাধারণত কারো বাড়িতে গেলে যেমন আতিথেয়তা হয় তেমনটাই হচ্ছিল ওদের সাথেও।রিষভ আর ওর দিকে মেয়েটা চায়ের কাপ,স্ন্যাক্স এগিয়ে দিল।
রিষভ- রূপসারানি.....প্রলয় কর্মকার কবে আসবে তার আদরের এই বাংলোতে?(রূপসা ক্ষমতাসম্পন্ন প্রলয় কর্মকারের রক্ষিতা)
রূপসা- ওর বাড়ি ঘর,যেদিন খুশি আসবে।সেদিন আবার নিষ্পেষিত করবে আমার জীবন-যৌবন,পদদলিত হবে আমার নারীত্বের স্বাধীনতা,খান খান হবে হৃদয়-যমুনার সব জোয়ার,আমি সেই নারী যে শুধুই এক শরীর!মাংসল পেশীতে তাই তো পুরুষের থাবা অবিচল।
(এসব কথাগুলো সবই নতুন আগত ঐ পুরুষকে শুনিয়েই বলল।বাংলোয় আসতেই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আবার সুকান্ত সেনের কবিতা,নবনীতা দেবসেন,বুদ্ধদেব গুহ.....আরও অনেকের গল্পের বই এর তাকটা দেখছিল বিতান,সেটা রূপসার চোখ ফাঁকি দেয়নি।
রিষভ- এসব কাব্যভাষা আমি ছাই বুঝি!বিতান দা কিছু বুঝলে কি?
আমি প্রথম চোখ তুলতেই রূপসার সাথে একেবারে চোখোচোখি হয়ে গেল।কি অদ্ভুত মায়াবী আকর্ষণ,আবেশটা কাটাতেই পারছিলনা বিতান।ও অস্ফুটে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,"কথাগুলো অসম্ভব গভীর।"
হঠাৎ রিষভের ফোন বেজে উঠল।ও বাইরে যাবে বলল মিনিট পাঁচেকের জন্য।ফোনটা দুমিনিট আগে এলে হয়ত বিতান ওর সাথে বেরিয়ে যাওয়াটাই ঠিক মনে করত।কিন্তু তখন রূপসা মেয়েটাকে বেশ রহস্যময়ী লাগছিল।বেশ্যার মুখের কি ভাষা সেটা অন্তত জানাই ছিল।তাই অনেক অবাক ছিল ও।ওর সাথে নিরিবিলিতে দুটো কথা বলতেই ও রয়ে গেল ঘরেই।
রূপসা- কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম কেন!আমি আপনার কাছে যাব না।নিশ্চিন্তে বসুন শোফায়।
আমি- না,মানে তা নয়।আপনি ভুল ভাবছেন,আমি একদম স্বাভাবিক আছি।
রূপসা- (অল্প একটু ব্যঙ্গের সুরে হেসে)বিতানবাবু আমি সেই ছোটো থেকেই পুরুষের চোখ দেখেছি।কখনো রাগ,কখনো ঘৃণা,কখনো লালসাভরা লোলুপদৃষ্টি সব খুব চেনা,খুবই।আমায় না হয় মিথ্যেটা নাই বা বললেন।
-আপনি শিক্ষিত?
-হ্যাঁ,ছোটোবেলায় আমার বাপ মা আমায় পড়ালেখা শিখিয়েছিল তো।এসব বইগুলো পড়ে আমার মতো মেয়েদেরও অবসর কাটে তাই।জানেন কেন এত ভাললাগে এগুলো?
-অনেক গল্প জীবন্ত হয় তাই?
-হুম,তাই অনেক জীবন কাটানো হয়ে যায় গল্পের মধ্যে দিয়ে।আবার গল্পগুলোতেও আমার মতো অনেক অভাগী পাই,ওরাও কোনো না কোনো কষ্টে জর্জরিত।নিজের যন্ত্রণাগুলো তখন ছোটো মনে হয় আমার।এই যে অনেক বড় পাওনা।
-পালিয়ে যাও না কেন?এই বাংলোবাড়িতে রক্ষিতার জীবনটাই কি চেনা অভ্যাস তোমার?
হঠাৎ আহত বাঘিনীর মতো যন্ত্রণায় যেন কঁকিয়ে উঠল।না জেনে হয়তো অনেক ব্যথার জায়গাটাতেই আঘাত করল বিতান।
ওর কানের কাছে মুখ নামিয়ে এনে বলল,১০ বার পালিয়েছি বাবু।
পিছিয়ে গিয়েই আবার বলা শুরু করল,প্রথমে আমার বাবার সৎভাই,স্কুলের স্যার,পাড়ার গোকুল দা,তারপর........।আর বলতে দেয়নি,হাতটা গিয়ে শক্ত করে ধরেছিল ও।আর ও বলল,আসলে বাপ মা অ্যাক্সিডেন্টে মরে যায় যখন ও সবে দশ৷ ছলছল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বিতানের অসম্ভব অসহায় লাগছিল নিজেকে।ওর হাতটা বিতানের হাতে,এত কাছে যে ওর শরীরের গন্ধটা ওকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে ফেলছিল।ও ভালোই বুঝতে পারছিল,ওর নিজস্বতাটা ওর ভেতর থেকে কেমন করে যেন হারিয়ে যাচ্ছে।ও আস্তে আস্তে রূপসার বাহুবন্ধনের মধ্যে হারিয়ে গেল।নিজের ইচ্ছেতেই ওর ঠোঁট দুটোকে নিজের পৌরুষ দৃঢ় ঠোঁটে নির্মিলিত করে নিল।সঙ্গে সঙ্গেই মাথায় চিড়িক দিয়ে উঠল মালতীর মুখটা।এক লাফে রূপসার থেকে একহাত দূরে সরে গেল।মাথায় আবার সেই বিন্দু বিন্দু ঘাম।
-আমায় ক্ষমা করে দাও রূপসা।আমি এটা ইচ্ছা করে.....
-থাক।আমি কি কিছু বলেছি নাকি!
-আমি আসছি।আমায় এখনি যেতে হবে,এখুনি....
-(আমার একটা হাত টেনে ধরে)আমি জানি আপনি আর কোনোদিনও এ বাড়িতে আসবেন না।কারণ আপনার চোখে আপনার অপরাধবোধটা আমার প্রতি আপনার সাময়িক ভালো লাগার থেকে অনেক বেশী।আমি শুধুই ধন্যবাদ দিতে চাই আপনাকে;আমার জীবনে ভালো লাগার আবেশমিশ্রিত প্রথম চুম্বনের জন্য।খুব ভালো থাকবেন আপনার প্রেয়সীকে নিয়ে।
ও কি বলল সেটা বোঝার মতো অবস্থায় ছিল না বিতান।কোনোমতে বেরিয়েই দেখি রিষভ ঢুকতে যাচ্ছে।ওর ওপর তখন খুব রাগ হল,আধঘন্টা ধরে ফোনে কথা!নাকি,এসব কিছুই ওকে হারানোর চক্রান্ত।ওর শরীরটা হঠাৎই খুব খারাপ করছিল।বারবার নিজেকে মালতীর অপরাধী মনে হচ্ছিল।
বাড়ি ঢুকল তখন ৮-৯ টা বাজে।হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসল।মালতীর হাজার অসুস্থতাতেও ঐ নিয়মের অন্যথা হয়নি একবারও।বিতান অনেকক্ষণ চুপচাপ খাচ্ছে দেখে মালতীই কথা শুরু করল।
মালতী- এত চুপ!তুমি তো খাবারের টেবিলেই বাচ্চাদের মতো দিনের সমস্তটা বলো।আজ সারাদিনে বলার কিছুই হল না?
-(দিনটা একঝলক মনে করে নিয়ে)কই না,কিচ্ছুই না তো।
-যা....বন্ধুর মা এখন কেমন আছে?
-বন্ধুর মা!.......উউউউমম....ভালোই আছেন।
-কি হয়েছে বলোতো?
-কিছুই না তো।আচ্ছা মালতী একটা কথা জিজ্ঞেস করব!ঠিক করে বলবে তো?
-কি এমন কথা!আমি তো তোমার বিবাহিতা স্ত্রী।এমনভাবে অনুমতি চাইলে যেন তোমার প্রেমিকা।হা হা হা.....সত্যিই পারো বটে।
-আচ্ছা যদি কেউ তোমায় এসে বলে তোমার স্বামী অন্য কাউকে ছুঁয়েছে,ভালবেসেছে,তোমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তবে তুমি কী করবে?
-কী আবার!যে বলবে মেরে তার নাক ফাটিয়ে দেব।
-যদি তোমার কাছের কেউ হয়?
-তোমার চেয়েও বেশী কাছের!
-নেই?কেউ না?
-মা বাবা,তাও তোমার সমান সমান।বেশী তো নয়।
-আর আমি নিজে?
-এবার কিন্তু রেগে যাচ্ছি।কিসব শুরু করলে!দেখো স্পষ্ট কথা শুনে নাও।কেউ এসে তোমার ব্যাপারে খারাপ বললে বিশ্বাস তো দূর,স্বয়ং ভগবান এসে বললেও বিশ্বাস করব না কোনোদিন।আমি তোমায় চিনি,জানিও।তোমার চোখে নিজের জন্য ভালবাসা খুঁজতে আর পাঁচজনের সাক্ষী লাগবে না গো।তোমার উপর আমার বিশ্বাস আমার নিজের জীবনের থেকেও বেশি দৃঢ় আর স্থায়ী।
মনি মা.....একবার ঘরে আয় তো তাড়াতাড়ি।
-তুমি খাও।মা কেন ডাকল দেখে আসি একবার।
ভাগ্যিস মা ডাকল তখন।নয়ত ও দেখে ফেলত বিতানের চোখের জলটা।পাগলি মেয়েটা ওকে এত ভালবাসে?সেই ও কিনা!ছি ছি,খুব কষ্ট হয়েছিল ওর।এক অবর্ণনীয় যন্ত্রণা সেটা।মালতীকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল,খুব ভালবাসি তোমায়।মনে মনে পরাজিত হয়েছিল ওর বিশ্বাস আর ভালবাসার কাছে, যা অনেক অনেক বেশী শক্তিশালী।
-আজ এটা কেন পড়ালাম জানিস?
-কেন বাবা?
-আমাদের নাম দিয়েই এটা ছাপবো।পাকা কথা হয়ে গেছে পাবলিশারের সাথে।
আরেকটা কারণ আছে।স্বাতী খুব ভালো রে।তোকে ভালবাসার থেকেও বেশী বিশ্বাস করে।তাই নিজের জীবনের গল্পটা বললাম যাতে তুই কোনোদিন ও সেই যন্ত্রণাটা না পাস যেটা সেদিন আমি পেয়েছিলাম।
-হ্যাঁ বাবা,আমি মনে রাখব।তবে আজ বুঝলাম কেন মা মারা যাওয়ার পরও রোজ মায়ের ফটোর সাথে এত সময় কাটাও।এত ভালবাসা দিয়ে মা বেঁধেছিল তোমায় যে বাঁধনটা আজও স্পষ্ট।
-হ্যাঁ রে,ওকেই আমি সব জন্মে চাই সঙ্গিনী হিসাবে।তোদের কাল বিয়ে।খুব সুখী হোস তোরা।আশীর্বাদ করি।চিরজীবন যোগ্য মূল্য দিস প্রকৃত ভালবাসাকে।
#ভালবাসা