সুজাতা মিশ্র

Classics

2  

সুজাতা মিশ্র

Classics

প্রেম

প্রেম

2 mins
418


ছেলেটা আর মেয়েটা দুজনেই ভালোবাসতো।ছেলেটার চোখের তারায় মেয়েটা ছবি আঁকতো।

মেয়েটার ঠোঁটের কোণে ছেলেটা।ছেলেটার ছবি বিক্রি হতে লাগলো দুরদার,

মেয়েটার বয়স বিক্রি হলো বিবাহের হাতেবাবার কথা রাখতে মেয়ের সিঁথিতে চড়লঅজানা পুরুষের ছোঁয়া।ছেলেটা বিক্রি হলো আঘাতে।

মেয়েটা বিবাহে।

মেয়েটার স্বামী ভালোবাসতো ভীষণ।মনখারাপে দই ফুচকা, শাড়ি আনতো,

ফুল; মুঠো ভর্তি আলোও আনতো।

বন্ধ মুঠো মেয়েটার গালে ছুঁইয়ে বলতো'এই দেখো তোমার জন্য রোদ এনেছি!'

মেয়েটা আলতো হেসে হাত নামাতে গিয়টের পেত, তার ঝুলবারান্দা দেওয়া ফ্ল্যাটেরচাবি নিয়ে এসেছে তার স্বামী।


ফল কাটতে গিয়ে ছুরিতে হাত কাটলে,স্বামীর মুখের উষ্ণতায় মেয়েটা দুচোখ বোজে।

স্বামীকে অফিস পাঠিয়েই সে খুঁজতে শুরু করেবই,কোরান-পুরান-বাইবেল।

কোথাও কী লেখা নেই, দুজনকে ভালোবাসা যায়!কোথাও কী লেখা নেই, দুটো হৃদয় এক নদীতে

মিলতে পারে কখনো!


মেয়েটার স্বামী খবর আনে মেয়েটা হঠাৎ অনেনামকরা হয়ে গেছে।তাকে না জানিয়ে তারই স্ত্রী প্রকাশ করে চলেছে

তার নিজস্ব সৃষ্টিশীলতা!

সংবাদপত্রে চিত্রশিল্পী হিসেবে বেরিয়েছে রিভিউপ্রশংসা।

মেয়েটা আড়ালে রেখে তার স্বামীকে গর্বিত করেছেস্বামীর চোখে প্রশ্ন নয়, ফুটেছে অহংকার।

প্রশ্নে জর্জরিত হয়েছে মেয়েটা।এক ঘন্টা ফোনালাপের পরেও মেয়েটা ছেলেটাকে

ভোলাতে পারেনা অতীত।

ছেলেটা তার প্রেমকে বাঁচিয়ে রাখতে নিজের সৃষ্টিদেরএভাবে তুলে দিচ্ছে মেয়েটার মাথায়, বুকে।


মেয়েটার ফোলা চোখে ভয় পায় স্বামীএকদিন ঘুমন্ত বালিশের নীচে চাপা পড়ে চিরকুট।স্বামী ঘরের জানলাগুলো বন্ধ করে দিল।

ঝুলবারান্দায় এসে রোদ কাউকে চুল শুকোতে না দেখেগেল ফিরে।

ছেলেটা বুক চাপড়ে বললো, 'শেষ ছবিটা এঁকে যা মনিতুই ফিরে আয় মনি।'

'তুই ফিরে আয়!'সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়েছিল 

'প্রখ্যাত চিত্রশিল্পীর অবসাদে মৃত্যু।'


ঘুমন্ত বালিশের নীচে শেষ আঁকাটায় মেয়েটা এঁকেছিলঅর্ধেক আকাশ, অর্ধেক নারী। 

লিখেছিল চিরকুটে-'ভালোবাসাতে মৃত্যুও হয়!''বুকে মেঘ জমে।

সম্পর্কে বৃষ্টি নামে।

বেশি ভালোবাসায় মৃত্যুও হয়!'


Rate this content
Log in