কবিতা
কবিতা
গায়ের রঙ নেহাত কিছু কেমিস্ট্রির খেলা
নিকষ কালো , প্রচ্ছন্ন কালো , তীব্র কালো, জেনেটিকালি কালো
হ্যা সব মিলিয়ে আমি সেই কালো মেয়েটি -
মেন্ডেলের বংশগতির সূত্র মানলে আমার গায়ের রঙ ফিনোটাইপ কালোই হবে ।
চটকদার পোষাক আর চকচকে দামী গহনায়ও আমি বেমানান
দাপুটে নিয়ন আলোয় হোঁচট খায় আমার ছাইরঙ্গা শরীর
তবু আমাকে নিয়ে কাব্য রচনা হয় -
গল্পে আলোচিত আমি , আলোচিত কবিতায়
কালো মেয়েই নাকি জগতজোড়া সুন্দরী !
আমার কুচকুচে কালো চোখের নদীতে সাঁতরায় অনেক কবি, লেখক
অথচ আমাকে নিয়ে পরিবারের নিত্য মনস্তাপ
আদর করে মা খালারা ডাকে “কালটি”
বর জোটে না -
এমনকি বিয়ের প্রস্তাব এলেও গায়ের রঙ দেখে ফিরে যায় বর পক্ষ !
আমাকে বিয়ে করলে নাকি পরবর্তী প্রজন্মেরাও কালো হয়ে জন্মাবে !
যে কবি আমাকে নিয়ে মনের অাবেগে নীশিতে কাব্য রচনা করে -
সেও বিযের বাজারে খোঁজে টকটকে ফর্সা মেয়ে !
অথচ আমার শিক্ষা আছে, প্রতিভা আছে, জ্ঞান আছে, অভিজ্ঞতাও আছে;
নেই শুধু রংটুকু !
তৃতীয় বিশ্বের ঘরে ঘরে নিষ্টুর বর্ণবাদের যাতাকলে পিষ্ট আমার আত্মা , মন
শুনেছি ধর্মেও রূপসী ললনার একটা আলাদা মর্যাদা আছে
ধর্মেও অনেক মহাপুরুষই এই বিতর্কের উর্দ্ধে উঠতে পারেননি !
ছোট থেকেই এ সমাজ ব্যবস্থা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে আমি ”কালো “
বর্ণবাদের কাঁটা ধর্ম আর সমাজকে নিরপেক্ষ হতে দেয়নি আজো
আমার এডুকেশনাল কোয়ালিটি, বেটার জব কোন কিছুই আমার গায়ের রঙকে কালো থেকে সাদা করতে পারেনি-
কালের কালো ধুলোয় মলিন পাণ্ডুলিপির দরিদ্র বুকে আমি সেই কালো মেয়েটিই রয়ে গেছি
তবু সত্যের শক্তিতে অটল আমি
আমি কালো মেয়ে !
মেকী সভ্যতার মুকে কুলুপ এটে
কোয়ালিটির কাছে পুষিয়ে দিয়েছি আমার কালোত্ব ।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা, বাংলাদেশ

