অন্য চোখে পুজো
অন্য চোখে পুজো
দুগ্গা পুজোর কটা দিন মা আসেন তার ছেলে মেয়ে কে সঙ্গে নিয়ে। মায়ের বিদায় বেলায় মর্ত্যের ছেলে মেয়ে উভয়েই বেদনা অনুভব করে। কোথাও হয়ত মা মেনোকা র মতই সবার প্রাণ এ বেজে ওঠে মন ভারী করা গান, " যেও না যেও না নবমী নিশি "। মর্তে মা আসেন ভগবান রাম এর অকালবোধন এর নিয়ম মেনে। অষ্টমী নবমী র সন্ধিক্ষণে হওয়া সন্ধিপূজা কালেই দেবীর কাছে পরাজিত হয় মহিষাসুর। দেবী বন্দিতা হন মহিসমর্দিনি রূপে। দুষ্টের দমন এর এই রূপ এই অনুপ্রাণিত হয়ে রাম দেবী বন্দনা করেন অকালেই। একথা আমাদের কিছু জনের জানা রাম এর সেই দেবী বন্দনা কালে তার পুরোহিত ছিলেন কিন্তু সয়ং রাবণ। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, রাম তার নিশ্চিত শত্রু এবং এই পূজা অন্তে বর পেলে রাবণ এর মৃত্যু অনিবার্য জেনেও কেনো রাবণ পূজা করতে রাজি হলেন।
পুরাকালে, গোলক ধাম এ বিষ্ণুর দুই ভক্ত ছিলেন জয় ও বিজয় নামে। একদিন বিষ্ণুর নিদ্রকালে ব্রহ্মা পুত্র সনৎ কুমার গণ বিষ্ণুর দর্শন প্
রার্থনা করলে দাররক্ষি রূপে থাকা জয় বিজয় তাদের প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। সনৎ কুমার গণ একে নিজেদের অপমান জ্ঞান করে তাদের অভিশাপ দেন, গোলক থেকে তাদের বহিষ্কার করা হবে। অনুতপ্ত জয় বিজয় ক্ষমা প্রার্থনা করে সত্য কারণ জানান এবং অভিশাপ খণ্ডন এর উপায় জানতে চাইলে তারা বলেন, মৃত্যু লোক এ সাত জন্ম বিষ্ণুর ভক্ত রূপে অথবা তিন জন্ম বিষ্ণুর পরম শত্রু রূপে গ্রহণ করে যদি তাদের মৃত্যু বিষ্ণুর হাতেই হয়, তবেই তারা এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবেন। বিষ্ণুর পরম ভক্ত জয় বিজয় সাত জন্ম বিষ্ণুর থেকে দূরে থাকা মেনে নিতে পারলেন না এবং তার শত্রু রূপে তিন জন্ম স্বীকার করলেন। প্রথম জন্মে হিরণাক্ষ ও হিরণ্যকশিপু রূপে সত্য যুগে জন্ম হয় তাদের যারা যথাক্রমে বরাহ ও নৃসিংহ অবতার র হাতে মৃত্যুবরণ করেন। ত্রেতা যুগে রাবণ ও কুম্ভকর্ণ রূপে এবং দ্বাপর যুগে শিশুপাল ও দন্তবক্র রূপে জয় বিজয় জন্মগ্রহণ করেন ও রাম ও কৃষ্ণ অবতার র হাতে মৃত্যুবরণ করেন।