দৌড়
দৌড়


যাচ্ছে দেখো মড়া কাঁধে
জাগছে কলরব,
হরিধ্বনি করছে জোরে
শ্মশানবন্ধু সব।
জ্বলছে ধূপ, উড়ছে গন্ধ,
ফুলে ঢাকা মড়া,
চাইনা খই, চাইনা ফুল...
পয়সা কিছু ছড়া।
বাজার থেকে ছুটছি আমি
তোদের পেছন পেছন,
শ্মশান; সে তো এসেই গেল
পয়সা দিবি কখন?
মা গেছে বেচতে শরীর
মদেই ডুবে বাপ!
জুটবে খাবার চারটে মুখে
ভিক্ষে করাও পাপ!
শীতের রাতে তোদের সাথে
ছুটছি কেবল ছুটছি,
আঁধারশেষে ভোরের আশায়
বাঁধছি বুক বাঁধছি।
আলোয় এসে এবার বুঝি
ছড়িয়ে দিবি পয়সা...
হাত গুটিয়ে নিলি কেন
পাচ্ছিনা যে ভরসা।
দৌড়ে আমি সবার আগে
পৌঁছে গেছি একা,
শ্মশানে প্রায় ঢুকেই গেলি
পয়সা কিছু ঠেকা।
দিলি না তো আমায় কিছু
খোল্ না হাতের মুঠো,
পাবার আশায় দিচ্ছি দৌড়
স্বপ্ন হবে কি ঝুটো!
ওই তো দেখি একটু দূরে
আসছে আরেক মড়া,
পেছনে তার লেগেছে ফেউ
পিছিয়ে ছিল যারা।
উল্টো দিকে আবার দৌড়
পড়ছে দমে ঘাটতি;
রুজি রুটি জুটবে তবেই
হয় যদি আজ প্রাপ্তি।
বাজছে কানে মিষ্টিমধুর
পয়সা পড়ার শব্দ,
কুড়বো সব পৌঁছে কাছে,
করবো তোদের জব্দ!
এসে গেছি কাছে এবার,
ছড়ানো পয়সা তুলবো,
পয়সাওলা ঘরের মড়া...
জন্মের লুঠ লুটবো!
পয়সা আর নেই ঝুলিতে
তাই কি দিলি ফেলে!
না ছড়িয়ে বিলিয়ে দিলে
বাঁচতো গরীব ছেলে!
ছুটতে আমি আর পারিনা
বুকের মাঝে কষ্ট...
বাড়িতে বসে কাঁদছে বোন
ঘুমখাওয়া তার নষ্ট।
রোজই মরে অনেক লোক
আমার মরণ কবে?
কেমন করে কাটছে দিন
জানছে কে আর ভবে!
দেখলে মড়া ছোটা শুরু
প্রাণটা নিয়ে হাতে,
পয়সা নিয়ে ফিরলে ঘরে
জুটবে রুটি পাতে ...