Suman Mondal

Others

4.8  

Suman Mondal

Others

----------//কালো বিড়াল//-----

----------//কালো বিড়াল//-----

5 mins
835


আমরা কেউ কেউ কুসংস্কারে বিশ্বাস করি আবারো কেউ করিনা...  

আমি সেই তাদের কোটার মধ্যে পরি যারা কুসংস্কারে উপর বিশ্বাস করি না ভগবান আছে বলে মানে না..... 

আমার বন্ধু অমর ভালো নাম অমরেন্দ্রনাথ দাস আমরা ছোটো করে অমর বলে ডাকি, অমরের সাথে প্রথম আলাপ কলেজে । তার পর গলায় গলায় বন্ধু । তো তার ছেলের জন্মদিনের কার্ড পাঠিয়েছে । সবে মাত্র পিওন এসে দিয়ে গেলো খামটা খুলে দেখলাম জন্মদিনের কার্ডের সঙ্গে একটি চিঠি ও আছে ..., চিঠিটা পরতে শুরু করলাম 

বন্ধু রাজু আগামী 12ই ফেব্রুয়ারী আমার এক মাএ ছেলের জন্মদিন তোকে আসতেই হবে তুই না এলে খুব দুঃখ পাবো 

              তোর প্রিয় বন্ধু অমর 

আর সঙ্গে একটি মোবাইল নাম্বার 

অমর যে ভাবে জোড় করলো না গিয়ে পারলাম না... তাই বন্ধুত্বের খাতিরে যেতে হলো... তা ছাড়া ওই গ্রামের দিকে যেতে কারই বা ভালো লাগে আবার ওখান থেকে ফিরতেও বেশ রাত হয়ে যাবে ভেবেই রাত হয়ে যাবে অমর কে না করে দিয়েছিলাম কিন্তু ও মানুষ সে নাছড়বান্দা কিছু তেই শুনবে না...  অযথা ফোনে তর্ক বিতর্ক না করেই হ্যা বলে দিলাম... । আর সঙ্গে সঙ্গে অমর তার বাড়ির ঠিকানাটা ইমেল করে দিল আমায় ....। 

এক বার চোখ বুলিয়ে নিলাম ইমেল টা.. দেখলাম তারিখ এবং বার পর্যন্ত দিয়েছে।সঙ্গে সব ডিটেল্স 

 

অমরের বাড়ি যাবো বলে বেশ তারা তারি কাজ কর্ম সেরে দুপুরের খাওটা সেরেই একেবারে বেরিয়ে পরলাম বন্ধু অমরের বাড়ির উদ্দেশ্যে 

হাইওয়ে ধরে যাচ্ছি... অমরের দেওয়া ডিটেল্স মতো ... অবশেষে হাইওয়ে ছেড়ে একটি গ্রামে ঢুকলাম সবে সন্ধে সন্ধে ভাব হয়েছে... রাখাল তার গরুর ছাগলের পাল নিয়ে বাড়ি ফিরছে কৃষকেরা মাঠে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছে । আর ফোনের নেটওয়ার্ক টাও ঠিক-ঠাক কাজ করছে না  কি যে করি ভাবতে ভাবতে ...একটি বিড়াল গাড়ির সামনে ঝাপ দিল । হঠাৎ ব্রেক কষে গাড়িটা থামিয়ে দিলাম । গাড়ির হেডলাইটের আলোতে যতটুকু দেখতে পেলাম বিড়াল টা ছিল কুচকুচে কালো । মোবাইলের ফ্লাসটা জালিয়ে গাড়ির বাইরে এসে দেখি বিড়ালটি গাড়ির চাকায় তলায় পরে মাড়া গেছে এদিকে সিগন্যাল নেই কাউকে ফোন করতে পারছি না আবার এদিকে বিড়ালটাও গাড়ির তলায় পড়ে মারা পরেছে । কি করি ভাবতে ফোন টা বেজে উঠলো দেখলাম অমর ফোন করেছে ... ফোনটা রিসিভ করতেই ফোনের ওপার থেকে বলে উঠলো কথায় তুই এখনো পৌছালি না তুই ঠিক আছিস তো নাকি ! আমি এক হাত দিয়ে কপালের ঘামটা মুছে জবাব দিলাম হ্যাঁ ঠিক আছি কিন্তু ....। তারপর সব কথা খুলে বললাম অমর কে , তারপর অমরের কথা মতো বিড়ালটা কে রাস্তার এক পাশে রেখে দিয়ে গাড়ি নিয়ে আবার চলতে শুরু করলাম গন্তব্য অমরের বাড়ি কিছু দূর যেতে একটি গ্রাম চোখে পড়লো ।

আর রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানে কয়েক জন বয়স য্রেষ্ঠ ভদ্রলোক একে অপরের সাথে তর্ক-বিতর্ক করছেন খবরের কাগজের কিছু খবর নিয়ে। ওদের কথায় অতো কান না দিয়ে গড়ির ভেতর থেকে বললাম ও মশাই বলছি অমরেন্দ্রনাথ বাগচির বাড়িটা কোথায় বলতে পারেন ওর বাড়িতে অনুষ্ঠান আছে । ভদ্রলোক মোটা গলায় বললেন  সামনে বাদিকের রাস্তা ধরে সোজা চলে যান গিয়ে 2নং বাড়িটা ...। কথা মতো গেলাম অবশেষে পৌছোলাম অনুষ্ঠানটা বেশ ভালোই হয়েছিল... । অমর দের বাড়ির দোতলায় আমাকে থাকতে দিয়েছে সকাল থেকেই ক্লান্ত বিছানায় শোবার সঙ্গে সঙ্গে চোখ গুলো... আপনা আপনিই বন্ধ হয়ে গেল ।  


হঠাৎ একটা শব্দে যুম ভেঙে গেল ছব্দ টা ছিল বিড়াল কাঁদার শব্দ এটা যেমন তেমন কান্নার আওয়াজ নয় যেন মনে হচ্ছে খুব কষ্টের কারন কাঁদার ধরন টা পুরো মানুষ যেমন অনেক্ষন কাঁদার পর ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদে ঠিক তেমটাই এই বিড়াল টাও কাঁদছে । আচ্ছা বিড়াল টা দোতলায় উঠলো কিভাবে একতলার দরজাটা তো লোহার গ্রামের দিকে চুরির ভয় বেশি থাকে বলে তাই এখানকার বেশির ভাগ লোকের বাড়িতেই এই লোহার দরজা । তবে বিড়ালটা উঠলো কী করে দোতলায় উঠলো ? আচ্ছা ছাদের জল সরানোর জন্য যে পাইবটা আছে তবে কি ওটা দিয়ে বেঁয়ে উঠেছে ! 

হতেও পারে এই কথা ভাবতে ভাবতে আর একটা কথা মাথায় বিদ্যুতের মতো খেলে গেল আজ সন্ধ্যায় বেলার বিড়াল মরার ঘটনাটা । গোটা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো শরীরের গরম রক্ত যেন ঠান্ডা হতে শুরু করলো গায়ের পোশম গুলো শজারূর গায়ের কাঁটা গুলোর মতো খাঁড়া হয়ে উঠেছে..., । দেয়ালে দু হাত দিয়ে হাতরাতে লাগলাম ইলেকট্রিক বোড । কিন্তু এদিকে কারেন্ট নেই হয়তো লোডশেডিং হয়েছে... বা এমনটা ও হতে পারে  কারেন্ট নেই । বিছানার ওপর হাতিয়ে মোবাইল টা কে খুজে নিয়ে ফ্লাসটা জ্বালিয়ে  মনে  শাহস অর্জন করে বাইরে বেড়িয়ে ছাদের দিকে এগিয়ে গেলাম মনে ভয় আর হাতে মোবাইলের ফ্লাস ধরে । ছাদে গিয়ে দেখলাম দরজারটা খোলা .. কিন্তু দরজাটা তো বন্ধছিল ! তবে শুনেছি অমরের বাবার খাবার পর ছাদে উঠে পাইচারী করার বাতিক আছে । ভদ্রলোকের বয়স ছয়েছে ভুলে গেছে মনে হয় । এই দরজার খেয়ালে কখন যে বিড়ালের আওয়াজ টা থেমে গেছে সেটা খেয়াল করিনি । তাউ একবার দেখে আসতে ক্ষতি কি। এই ভাবনা নিয়ে ছাদে উঠলাম আকাশ ভরতী তাঁরা আর এক কোন ঘেষে দাড়িয়ে আছে চন্দ্র মামা চাঁদের হালাকা আলো এসে পড়েছে ছাদের উপর । মাঝরাতে ছাদের উপরে আপনার ভেতরের কবি সত্তা বাইরে বেড়িয়ে আসতে চাইবে । না আর দাড়িয়ে থেকে লাভ নেই শুয়ে পরী গিয়ে সবে মাত্র ছাদের দরজা টা বন্ধ করতে যাবো তখনি আবারো কানে আসলো বিড়াল টার কাঁদার শব্দ এ যেনো আগের চেয়ে আরো জোরে কাঁদছে মনে হচ্ছে বিড়ালটাকে কেউ রাগিয়ে দিয়েছে এ কান্না পুরো রাগের কান্না প্রতিশোধের কান্না যেন বলতে চায় বদলা চায় । না না আমাকে দেখতেই হবে কে এই ভাবে কেঁদে যাচ্ছে অধীক শক্তি সঞ্চয় করে আবারো ছাদে গেলাম.. কিন্তু ছাদে তো কেউ নেই..পুরো ফাঁকা তবে কি আমার মনের ভুল.. ওই ঘটনার পর থেকে আমার শরীর টা কেমন যেন লাগছিলো হবে হয়তো ' পিছনে ঘুরতেই দু চোখ থমকে গেল সাড়া গায়ে বিদ্যুতের গতিতে কাঁটা দিয়ে উঠলো কারন আমার সামনে সেই কালো বিড়াল টা হ্যা এটাই তো সেই কালো বিড়াল টা চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে তিক্ষনো দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি জোড়ে চিৎকার করে উঠলাম কি চাও তুমি কি চাও আমার পিছু নিয়েছো কেনো ? ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে কথা ঠিকঠাক বেড়োচ্ছে না কন্ঠ দিয়ে বিড়াল টা আমার দিকে খুব জোরে ছুটে এলো ঝাপ দিলো আমার গায়ে ছাতের ধারালো নোখের আচড় বসাতে লাগলো আমার মুখের ওপর হাত থেকে ফোন টা এক ধারে পড়ে গেল..। আর আমি জোরে চিৎকার করে ছাদে পড়ে গেলাম । সকালে জ্ঞান ফিরতে দেখি ঘরের মধ্য শুয়ে আছি আর পাশে অমর। 


Rate this content
Log in

More bengali story from Suman Mondal