বেঞ্চ
বেঞ্চ


বেঞ্চটা আজ ফাঁকা,
রোদের আলো আবছা হয়ে যায়
জানালার কাঁচের ধূলোয়।
কাঠের খন্ড জোড়া ,
কত আবেগে মোড়া,।
প্রথম সখ্য হয়েছিল আমার,
পেরেকের লোহা, পুড়িয়েছে কামার।
কাঠুরের কাটা গাছ খন্ড খন্ড,
হাঁতুড়ি গেঁথেছে নতুন ছন্দ।
এক মনীষী হয়েছিল জ্ঞানী ,
সহস্তে চারায় পুঁতেছিল সভ্যতার বাণী।
সে ফল আজ কঠিন অন্তর্ধানী ,
জন্ম নিয়েছে যে শিশু, সেও তার কাছে ঋনী।
সে কাঠ,
পেরিয়েছে নদী,শহর,সভ্যতার মাঠ।
খুলেছে দুয়ার ঢুকেছে শিশু,
এই বেঞ্চটা কি তার কাছে বলেছে কিছু?
নতুন শহর, নতুন প্রহর,
নতুন অতিথি, নতুন বছর।
গোপনে কথা হয়,
প্রথমে পেয়েছি ভয়,
ভাবি ফিসফিস করে কি কয়?
কত দিন, প্রতিদিন,
প্রথম থেকে সেই শেষদিন।
গল্পে গল্পে ঝং ধরেছে,
বেঞ্চের সেই বারো পিন।
গল্পগুলো সে বলবে আবার,
নতুন শিশুকে আরেকদিন।
আজ সে বড় একলা,
ঘুঁণে ধরা দেহ ফোকলা।
ধুলোর আস্তরে নোংরা,
সেদিন সে কোলে নিয়েছিল যাকে,
প্রথম হাঁটতে দেখিয়েছিল তাকে,
আজ দুরন্ত-দূর্বার, সেও ছিল কিন্তু ল্যাংড়া।
এ মন, গুণছে ক্ষণ,
আর আছে কতক্ষণ?
রোপন করলাম চারা,
এই পথে আসবে যারা,
তারা-
একদিন হয়তো এই বেঞ্চে বসবে,
বেঞ্চের গায়ে লেখাগুলো দেখে
নখের ডগায় ঘষবে,
আনমনে তারা হাসবে।
নতুন গল্প লিখে,
আবার চলে যাবে অন্যদিকে।
আজ মনে পড়ে, যেই বেঞ্চটায়-
আনমনে কলমের নিপে,
দাগ কেটেছি কাঠের দ্বীপে।
সে দাগের ক্ষত অপরাধে-
চায়নি কখনো সে ব্যাখ্যা,
দেয়নি অপরাধী আখ্যা।
আচ্ছা, দাগ গুলো কি আজও ধাঁরালো?
কত কথা, কোথায় তারা হারালো?
সময় আজ কত অল্প!
কত গল্প! হলেও স্বল্প,
আরেকদিন না হয় বলব।
বেঞ্চটা আজও পড়ে আছে একা,
কত না গল্প তাতে ছিল আঁকা।