STORYMIRROR

Samima Dhali

Others

3  

Samima Dhali

Others

মায়াবতী আমি ভাগ্যবতী নোই 🥀 👈

মায়াবতী আমি ভাগ্যবতী নোই 🥀 👈

5 mins
4

মায়াবতী আমি ভাগ্যবতী নোই 🥀 👈 কলমে __সামিমা ঢালী.

 রুপবতী ও গুনবতী  সবাই হার মানে ভাগ্যবতীর কাছে। এমনি একটি গল্প আপনাদের কাছে তুলে ধরবো যেখানে রুপবতী ও গুনবতী কে হেরে যেতে দেখবে ভাগ্যবতীর কাছে। হৃদয় কেঁপে ওঠা গল্প।

 🥀সময় তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত ১১ টা ৩০। এক হাতে ধারালো  অস্ত্র ও আরেক হাতে একটা কাটা মুণ্ডু নিয়ে একটি মেয়ে পাগলের মতো হাঁসতে হাঁসতে গ্ৰামের পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছে। পরনে একটা রক্ত মাখা লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়ি। মেয়েটি যাচ্ছে কুলতুলি থানায়। থানায় ঢুকে মেয়েটি কাটা মাথা টা আস্তে করে রেখে দেয় থানার বড়ো বাবুর সামনের টেবিলে। রক্ত ভরা সাড়ি, ছুড়ি আর কাটা মুণ্ডু দেখে থমকে যায় থানার সকলেই। হুরমুরিয়ে চিয়ার ছেড়ে  থমকে দাঁড়ায় ইন্সপেক্টর রনোজিৎ। মেয়েটি এখনো উন্মাদ এর মতো হেঁসে যাচ্ছে। হা হা হা,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,। ঘটনা কী কেউ কিছুই বুঝতে পারছে না। ইন্সপেক্টর রনোজিৎ এর ইসারা পেয়ে একটি লেডি কন্সটেবল এগিয়ে আসে মেয়েটির দিকে। কন্সটেবল মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করে __কে তুমি? মেয়েটি কোন উত্তর দেই না। কন্সটেবল__আরে কে তুমি এই মেয়ে উওর দাও?সোজা কথায় উত্তর দেবে নাকি ২ ,৪ ঘা বেতের বাড়ি খাবি। মেয়েটির মুখে এখনো কোনো উওর নেই,,,বরং কাটা মুণ্ডু টির দিকে তাকিয়ে এখনো হেঁসে যাচ্ছে। হাঁসি দেখে মনে হচ্ছে,, এটা কোন জয়ের হাঁসি,,, কিন্তু এই জয় আনন্দের না এই জয় বেদনার দুঃক্ষের কান্নার। মেয়েটির চোখে মুখে স্পষ্ট কষ্ট ও ঘেন্নার ছাপ ফুটে উঠেছে। উওর না পেয়ে লেডি কনস্টেবল বিরক্ত হয়ে মেয়েটির কাঁধ ধরে ঝাঁকা দিতে থাকে। মেয়েটির কাছে থেকে এখনো কোনো উওর না এলে ও এবার মেয়েটি পুরো নিস্তব্ধ হয়ে যায়। আবার ও অবাক হয়ে যায় থানার সকলেই। পূর্বের মতোই নিশ্চুপ হয়ে গেছে থানা,, মেয়েটি হঠাৎ রনজিৎ এর দিকে তাকিয়ে পরক্ষণেই মাথা নিচু করে নেয়। মেয়েটির নিশ্চুপ থাকতে দেখে ও সবাই হতবাক। নিরবতা কাটিয়ে চিৎকার দিয়ে কেঁদে ওঠে মেয়েটি। কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে বসে পরে মেয়েটি,, সবাই এক পলকেই তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে।কেউ কিছুই বুঝতে পারছে না। আমি আমার স্বামীকে হত্যা করেছি,,,,,। কথাটা শুনে সকলের চক্ষু চড়কগাছ। অবাক হয়ে লেডি কনস্টেবল বলে__স্যার ও কী বলে? নিজের স্বামীকে হত্যা করে আবার থানই এসে বলছে।এমন একটা মায়াবী চেহারা নিয়ে এমন করতে পারে মনেই হচ্ছে না আবার নিজে এসে শিকার ও করছে ইন্টারেস্টিং। রনজিৎ লেডি কনস্টেবল এর দিকে গটগটিয়ে তাকালে সে চুপ হয়ে যায়। রনজিৎ __মিসেস কী হয়েছে একটু খুলে বলবেন ? মেয়েটি আবার ও নিস্তব্ধ মনে হচ্ছে শড়ির আছে কিন্তু প্রান নেই। দেহো টা যেন নিথর হয়ে পড়েছে,,, রনজিৎ __মিসেস বলুন কে আপনি? আর কী হয়েছে? বেশ কয়েকবার জিজ্ঞাসা করাই মেয়েটি মুখ খোলে,,, মেয়েটি আদো আদো কন্ঠে বলে__আমি , আমি মায়া। রনজিৎ __কী হয়েছে তোমার সাথে,,,? কেন কোরেছো তুমি নিজের স্বামীর খুন? মেয়েটি আবার ও নিশ্চুপ হয়ে যায়। __কী হলো বলেন? কোথায় বাড়ি আপনার?আর কী হয়েছে? __আমার বাড়ি কুলতুলি গ্ৰামে। আমি খান পড়িবারের ছোট বোউ। _কিন্তু আপনি আপনার স্বামী কে কেন হত্যা করেছেন? _পাপ করেছিল,,তাই নিজ হাতে স্বামী কে হত্যা করে সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছি। এর বেশি কিছুই বলবো না,,,কারন আমার স্বামী সকলের চোখে দেবতা,,,তার সম্মান আমি ধুলোতে মেটাবো না,, তার কোন দোস আমি বাইরে আনবো না,,, তার সাথে তার সমস্ত দোস মাটিতে মিশে যাবে। __কিন্ত বলতে আপনাকে হবে। মেয়েটি আবার নিশ্চুপ। বহুবার জিগ্যেস করার পর ও কোন উওর আসে না মেয়েটির কাছে থেকে। অবশেষে হার মেনে রনজিৎ লেডি কনস্টেবল কে বলে মেয়েটিকে লকাপে ঢোকাতে। যেমন কথা তেমন কাজ করে লেডি কনস্টেবল। রনজিৎ একা একা বির বির করে বলে ''কিভাবে বার করবো মেয়েটির মুখ থেকে পুরো কথা,, কিভাবে? কথা টা রনজিৎ বিরবির করে বললে ও কান এরোইনি লেডি কন্সটেবল এর। লেডি কনস্টেবল_স্যার আমি বার করবো ওর মুখ থেকে কথা। _কিন্ত কিভাবে ? ও তো কিছুই বলছে না। _বলবে আবার না,,২,৪ঘা বেতের বাড়ি পরলে আসামি তো দূর ওর বাবা ও কথা বলবে। _না ওর গায়ে একটা বেত তো দূর স্পর্শ ও কেউ জেন না করে। আমার বহু বছরের অভিজ্ঞতা,, আমি ক্রিমিনাল চিনি ,,, আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি ওই মহিলার মুখ থেকে কোন কথা পিটিয়ে বার করা সম্ভব নয়। কারন ও কোন ক্রিমিনাল না,,ও যা করেছে পরিস্থিতির জন্য করেছে। শেষ বারের মতো আরো একটা সুযোগ নেই রনজিৎ,,,সে মেয়েটির কাছে লকাপের ভেতরে ঢুকে মেয়েটির সামনে একটা চিয়ার নিয়ে বসে। ততক্ষণে মেয়েটি জরোসরো হয়ে বসে আছে লকাপের এক কোনে। __আমি কথা দিচ্ছি ,, আপনার আর আপনার স্বামীর মাঝে কী হয়েছে কেউ জানতে পারবে না,,,, আমাকে বিশ্যাস করে সমস্ত ঘটনা খুলে বলতে পারেন। আমি কাউকে বলবো না ,,, সবাই কে থানা থেকে বের করে দেবো ,,, তবুও কেউ জানতে পারবে না,,,জা হয়েছে আমার আপনার মাঝে থাকবে বলুন কী হয়েছে।_কী করেছিল তিনি যার জন্য এমন নিঃসংশ ভাবে হত্যা করেছেন,,,আর এই কাটা মুণ্ডু টা কার। বহুবার অনুরোধ করার পর,,,মেয়েটি বলতে শুরু করে চলে যায় মেয়েটির অতীতের ইতিহাসে। কুলতুলি গ্ৰামের শেষে বসবাস করা গোরিব পরিবারের শান্তশিষ্ট নিষ্পাপ ১৭ বছরের মেয়ে মায়া__ শ্যামবর্ণ গায়ের রং,, কোমর ছাপানো ঘোন কালো চুল,,, বাদামি রঙের চোখের মোনি ,,,,। আহা,,কি মায়াবী চোখ মুখ,,,কতো মায়া এই মুখে। ১৭ বছরের কিসরি মায়া আইনার সামনে দাঁড়িয়ে সাজগোজ করছিল। মুখে ফেস পাউডার ঘসাঘসি করছিল বেস ভোরে ভোরে। পেছন থেকে মায়ার প্রতিবেশী কাকি এসব দেখে মুচকি হেঁসে তুচ্ছ করে বলে,, ___কাক কি আর কখনো কোকিল হতে পারে বল তো আমাকে। মায়া পেছনে তাকিয়ে দেখলে আবার কাকিমা বলে__এতো আটা ময়দা মাখলে কী তুই সাদা হয়ে যাবি। কথা টা শুনে মায়া খুব কষ্ট পায়। ভারাক্রান্ত মোন নিয়ে মায়া মায়ের কোলে মাথা দিয়ে শোই। মায়ার মা রেহেনা বেগম বলে ওঠে__কিরে মা এই অবেলায় সুয়ে পরলি যে_তাও এভাবে কোলের মধ্যে মুখ নুকিয়ে,,,,কী হয়েছে? মায়া কিছুই বলে না ,, মায়ের বারংবার জিগ্গেস করাতে মায়া হাওমাও করে কেঁদে ওঠে। __আরে কী হয়েছে? __মা ,কালো হয়ে জন্মানো কী পাপ। __না কখনোই না,,কেন? __মা ওই লতিকা কাকি আমাকে অনেক বাজে কথা বলেছে। _কী বলেছে? মায়া ঘটে যাওয়া সবকিছু ওর মা রেহেনা বেগম কে বলে দেয়। রেহেনা বেগম মায়ার চোখের জল মুছিয়ে বলে__সোন মা আমার কাঁদে না। কাঁদে কারা জানিস,,কাঁদে দূর্বল রা,, কাঁদে তারা যারা হেরে যায়। তুই কী হেরে গেছিস? না এখনো না ,,এখনো জীবনের অনেক টা পথ অতিক্রম করা বাকি,,বড়ো হবি, পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে তো। তখন দেখবি,,,এই রং নিয়ে কেউ কিছু বলতে পারবে না,, তখন তোকে দুটো কথা শোনানোর আগে তোর যোগ্যতাই আস্তে হবে তাদের । তখন কেউ তোর গায়ের রং দেখবে না তখন সবাই তোর সাফল্য দেখবে যোগ্যতা দেখবে। কি বুঝতে পারছিস আমার কথা,,,, তবে সেই যায়গাতে আস্তে হলে লোকের কথা কানে নিয়ে কষ্ট পেলে হবে না। মায়া নিজের চোখের জল মুছে মাথা নেড়ে মায়ের কথার সম্মতি জানালে রেহেনা বেগম মুচকি একটা হাঁসি দেই। পরবর্তী পর্ব পড়তে চাইলে মায়াবতী আমি ভাগ্যবতী নোই পর্ব ২ পড়ুন


Rate this content
Log in