STORYMIRROR

Pranati Mahato

Children Stories Others

4  

Pranati Mahato

Children Stories Others

লোভি শিয়ালের গল্প

লোভি শিয়ালের গল্প

4 mins
320

একদিন এক ল্যাংড়া শিয়াল গ্রামের পাশদিয়ে যাওয়ার সময় দেখলো, গ্রামের শেষপ্রান্তে একজন চাষি খামার বাড়ি বানিয়েছে। আর তাতে অনেক মুরগি, ছাগল, হাঁস আর ভেড়া পালন করার জন্য রেখেছে। শিয়াল মনে মনে ভাবলো অনেকদিন হয়েগেছে মুর্গির মাংস খাওয়া হয়নি। এই চাষির অনেক মুরগী রয়েছে। চাষিকে মুরগী বানিয়ে যদি তার মুরগী চুরি করে খায় তাহলে সে বুঝতেও পারবে না যে আমি খেয়েছি।আমার খাওয়াও হবে আর প্রতিশোধ নেওয়াও হবে।


ফ্ল্যাসব্যক,,,,,,,,,,,,

সন্ধ্যার সময় চাষি বসে বসে একটা মুরগী কেটে তা রান্নার জন্য পরিস্কার করছে।চাষির বাড়িতে তা মেয়ের শ্বশুর এসেছে, তাই একটু মাংস ভাতের ব্যবস্থা হচ্ছে। ঘরের পিছন দিকে ঝোপের পাসে একটা শিয়াল অনেক্ষন থেকে লেজ গুটিয়ে বসে আছে আর তার জীব থেকে লালা ঝরছে মুরগী মাংসের গন্ধে। সে মনে মনে ভাবছে কখন চাষি উঠে যাবে আর সে মাংসের পাত্রটা নিয়ে বনের দিকে দৌড় দেবে।

একটু পর চাষি মাংসের কড়াইটা বারান্দাতে রেখে উঠে গেল আর ঠিক সেই সময় শিয়াল কিছু না ভেবেই ছুটে এসে মাংসের পাত্রটা হাতাতে চায়লো। কিন্তু মাংসের পাত্রটা সরে গেল আর শিয়াল হুমড়ি খেয়ে পড়ল বারান্দর উপর। কিন্তু পড়েই কি শেষ? পড়েছে তো পড়েছে সে ভাবছে এবার উঠে এক দৌড় দিয়ে বনের দিকে পালাবে কিন্তু একি হলো।

শিয়ালের পিছনদিকের বাঁ পায়ে জেন কেও খুব শক্ত বাঁসের লাঠি দিয়ে আগাত করলো।শিয়াল আর কিছু না ভেবে সেই পা নিয়েই প্রানপন ছুট লাগালো বনের দিকে।


শেয়াল চলে যাবার পর দেখা গেলো চাষি হাতে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে।আর মাংসের পাত্রটা রয়েছে চাষির বউএর হাতে।

আসলে চাষি অনেক্ষন ধরে লক্ষ্য করছিল শিয়ালকে।তাই সে সেখান থেকে সরে যাওয়ার ভাব করে লুকিয়ে পড়ল সেখানেই। আর যেয় শিয়াল সেখানে এসেছে অমনি চাষি তার পায়ে আঘাত করেছে আর তার বউকে আগেই বলেছিল যেন সে মাংসের পাত্র সরিয়ে নেয়। তাই শিয়াল কিছু বুঝতে না পেরে ছুটে পালিয়েছে।

তারপর থেকে শিয়াল ভায়া ল্যাংড়া।


ফ্লাসব্যক শেষ।


এখন শিয়াল চায় প্রতিশোধ নিতে তাই সে অনেক দিন ধরে তক্কে তক্কে রয়ছে।যেদিন সুযোগ মিলবে সেদিনই বাজিমাত করবে।

সেদিন থেকেই শিয়াল ঘুর ঘুর করে চাষি খামারের আসেপাশে।


তারপর একদিন চাষি তার ছাগল আর ভেড়া গুলো নিয়ে মাঠে গেছে চরাবার জন্য। সারাদিন চরাবার পর বিকেলের সময় বাড়ি ফিরবে এমন সময় দেখলো তার ধুসর রংএর ছাগলটা দলে নেই। ছাগল খুঁজেতে খুঁজেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেল।এমন সময় সেই ছাগলটাকে ক্লান্ত অবস্থায় একটা পাথরের কোলে বসে থাকতে দেখতে পেল। চাষি ছাগলটা নিয়ে দলে ফিরলো।

তারপর সব ছাগল,ভেড়া নিয়ে বাড়ির দিকে ফিরতে লাগলো।


তখোনি কোনসময় শিয়াল সেই দলে মিসে গেছে। আর সন্ধ্যা হওয়ার ফলে চাষি ঠিক বুঝতে পারলো না।বাড়ি ফিরে চাষি সব প্রানি গুলোকে খোয়াড়ে দিয়ে সেই অসুস্থ ছাগলটাকে নিজের কাছে রাখলো।


তারপর মুরগী আর হাঁসগুলোকে দানা দিয়ে হাত মুখ ধোয়ার জন্য মুখচলে গেল। কিছুক্ষন পর তিনচারটা ছেলে চাষির সাথে এলো।


এদিকে শেয়াল চুপকরে ছাগলদের সাথে বসে আছে।। আর ছাগল গুলোকে শাসিয়ে রেখেছে যাতে তারা চিৎকার চেচামেচি না করে।এখন সে বসে বসে মনে মনে ভাবছে কখন একটু বেশি রাত হবে আর সে মুরগী নিয়ে চম্পট দেবে।


চাষি যে ছেলে গুলোকে নিয়ে এসেছে তাদের মধ্যে একজন বলল

- চাষি তারাতারি করে ছাগল আর ভেড়া গুলো দাও।   বরযাত্রী আসার আগে সব তৈরী করে রাখতে হবে।মোড়ল মশাই চান না যে তার আত্মীয়রা কোন অভিযোগ করুক তার বিসয়ে।


আসলে সেদিন মোড়লমশাই এর মেয়ের বিয়ে ছিল। তাই তারা চাষির কাছে ছাগল আর ভেড়া নিতে এসেছিল।


চাষি ছেলেদের নিয়ে খোয়াড়ে গিয়ে ছাগল আর ভেড়া গুলোকে তাদের দিয়ে দিল। তার মধ্যে শেয়ালও ছিলো সে বুঝতে পারলো না তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।সে চুপচাপ যেতে লাগলো। মোড়লমসাই এর বাড়িতে যেতে হলে একটা ছোট বন পেরিয়ে যেতে হয়। চারজন ছেলে মিলে ছাগল ভেড়া গুলোকে আগলে আগলে নিয়ে যাচ্ছিল। শেয়াল ভাবলো মুরগী চুরি পরে হবে এখন এই ছাগলে দল ছেড়ে বনে পালিয়ে যায়। কিন্তু তার মনস্কামনা পুরন হলো না। যেই সে পালাবে ভেবেছিল তখনি একটা ছেলে তাকে ধরে দলে মিসিয়ে দেয়।আসলে অন্ধকার থাকায় ছেলেটি‌ বুঝতে পারেনি ওটা‌ আসলে কী।


তারপর ছেলেগুলো পৌছে গিয়ে দেখলো ছাগলের দলে একটা শেয়াল রয়েছে। অমনি তারা কাওয়ে কিছু না বলে ছাগল গুলোকে একটা ঘরে ঢুকিয়ে দিল আর দরজা লাগিয়ে সবাই একটা করে লাঠি নিয়ে এসে দরজার বাইরে দাঁড়ালো। তারপর আস্তে আস্তে দরজা খুলে দিল। আর কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকলো চুপ করে।

শেয়াল দরজা খুলতে দেখে ভাবলো নিশ্চই এখন ছাগল গুলোকে নিয়ে যাওয়া হবে তাই সে দেওয়ালে সিটিয়ে গেলো। ভাবলো ছাগল নিয়ে যাওয়া হলে সে পালিয়ে যাবে। কিন্তু অনেক্ষন পরেও কাওকে আসতে না দেখে ভাবলো এই সুযোগ,পালানো যাক। আর তারপর পা টিপে টিপে বেরিয়ে এলো। আর তার সাথে সাথেই এলোপাথাড়ি লাঠির ঘা পড়তে লাগলো পিঠে‌ আর সারা শরীরে।

অনেক্ষন মারার পর ছেলে গুলো ভাবলো হয়তো শেয়াল মরে গেছে তাই তারা তার পা গুলো বেধেঁ লাঠিতে ঝুলিয়ে বনের ধারে ফেলে এলো।


অনেক্ষন পর শেয়ালটা উঠে দাঁড়ালো কিন্তু তার সারা শরীরে অতন্ত্য বেথা। পিছনের ডানপা টা অসাড় হয়ে পড়েছে তবুও সে খুব কষ্ট করে বনের ভিতর দিকে চলে গেল।




::::::::::::::::যেমন কর্ম তেমন ফল::::::::::::::::::


Rate this content
Log in