ফুটপাত (শারদ সংখ্যা )
ফুটপাত (শারদ সংখ্যা )
রাজপথের দুপাশ দিয়ে বয়ে চলা সরু রাস্তা গুলো।
নামটা তার ফুটপাত।
নামে সেটা রাস্তা হলেও সেখানে জীবনও চলে দিন রাত।
সেখানেও ওঠে সূর্য তারা সেখানেও হয় সকাল।
দুপুরের তপ্ত আঁচের পরে আসতে ভুলেনা বিকাল।
তবুও অধরা থাকে ল্যাম্পপোষ্টের ভেপার লাইটের আলো।
জীবন টা তাদের বড্ড রকম কালো।
সভ্যতার গা ঘেঁষে থাকা মানুষ গুলো সভ্য হতে পারেনি এদেশের।
তাতে লজ্জা কিসের?
কিসের এতো কষ্ট?
আমরা হলাম বিশিষ্ট, ওরা তো অবশিষ্ট।
উঁচু বাড়িটার ওপরে থাকা নরম বিছানায় লেপে মোড়া আদুরে শিশুর আবদারের প্রতিধ্বনি শোনা যায় বস্তা ঢাকা বিছানা থেকে-
মা, উঠিও না আমায়, ঘুমাব আমি একটু আরও।
অবুঝ শিশু মন! বোঝে না ফুটপাতের মানে।
শুধু জানে - পৃথিবী টা তারও।
দুচোখে অশ্রু নিয়ে মা শুধু সান্ত্বনা দিতেই জানে - আজ না খোকা, আজকে ওঠো। ঘুমাবে না হয়
কাল।
কালের মিথ্যা আশ্বাসে এভাবেই আসে সকাল।
ফুটপাত চলে যায় নির্জনতা ভাঙ্গা চঞ্চল চপলের হাতে।
শুভ সুপ্রভাতে।
তাদের হেঁসেলের পাশ দিয়ে হাঁটবে - সারাদিন কত ইমানদার, সমঝদার, জমিনদার,
রাত্রি হলে চৌকিদার।
পোশাকি নাম তাদেরও আছে।
ওরা নাকি দখলদার।
দখলদারির খেলা চলে সর্বক্ষন।
টানাটানি হানাহানি কলরব কোলাহল শেষে শরীর একটু আরাম চায়।
গা এলিয়ে নিতে চায় শক্ত বিছানায়।
বিছানা কোথায়?
আসবে তো সে - নিবীড় আঁধারে।
আকাশ টাকে ছাদ ভেবে দুচোখ বুজে ঘুমিয়ে পড়া মানুষ গুলোও দেখে স্বপ্ন।
দুস্বপ্ন!
কখন বুঝি চলে আসে আধো-ঘুমো ছুটন্ত গাড়ির চাকা গুলো।
পিষিয়ে দেওয়া দলা পাকানো দেহের রক্তমাখা চোখে, উড়ে পড়া চুল গুলো সরিয়ে দিতেও আসবে না কোন হাত।
সবাই জানে। ওরা সভ্য না।
ওটা ফুটপাত।