জীবনের খোঁজ
জীবনের খোঁজ


জীবন?
সে তো ছিলো সাদা পত্রে
কেবলই কালো রঙের আঁকিবুকি।
রোজ জ্বালাতাম সেই সাদা-কালো পত্রগুলি;
বারবার জ্বালাতাম; কেবলই রঙ এর খোঁজে।
রঙ বলতে জীবন পোড়া আগুনের লাল শিখা;
আর তারই মাঝে ছাই হয়ে যাওয়া ধূসর কিছু স্বপ্ন।
হঠাৎ উঠলো রামধনু; গাঢ় কালো মেঘের সাথেই,
রঙ এর এমন খেলা আগে পরেনি চোখে কোনো দিন ও;
তাই লাগেনি আগাম আঁচ অবশ্যম্ভাবী পশ্চিমী ঝঞ্জার।
কিন্তু মনের অতল তল থেকে কেউ যেন বলেছিল,
“রামধনু, সে তো ক্ষণস্থায়ী; ঠিক যেনো মায়া,
মিটে যাবে; কিন্তু করে যাবে নেশায় আচ্ছন্ন”
বড় কর্কশ, বড় বিষাদ লেগেছিল সে আওয়াজ,
তাই এক লহমায় তা অগ্রাহ্য করতে
না ছিল কোনো দ্বিধা, না কোনো কুণ্ঠা।
কিন্তু একজন ছিল যে আড়াল থেকে দেখছিল সব;
কি জানি হয়তো বা সে ছিল না আড়ালে;
রঙে আসক্ত মন বুঝি তারে পারে নি দেখতে;
তবে সে সবই দেখছিল আর হাসছিলো।
কে সে? সে “সময়” গো, “সময়”।
ওর তো এই এক বাজে স্বভাব, খালি হাসে;
কারো সুখেও হাসে, আবার দুঃখেও হাসে;
হাসে আর বলে “এ সময় একদিন কেটে যাবে”।
ঠিকই একদিন কেটে গেলো সেই রামধনু;
খালি ফেলে গেলো কিছু প্রতিশ্রুতি।
রঙের খেলা হইতো বা হয়েছিল শেষ,
তবে তার রেশ তখনও রয়েই গেছে;
স্বপ্নে তখনও ওঠে রামধনু, প্রতি মুহূর্তে।
এক একটা মুহূর্ত, এক একটা দিন,
কেটে যায় সময়ের নিয়মে, ও যে সদা ব্যস্ত,
কারো জন্য সে করেনা অপেক্ষা,
বয়ে চলেছে অবিশ্রান্ত ধারায়, সব রঙ ফিকে করে।
ফিকে হতে হতে আজ খালি পরে আছে
সেই কালো আঁকিবুকিওয়ালা সাদা কাগজগুলি;
আর সাথে আছে ধূসর কিছু আশা,
সেগুলোও অবশ্য ঘষা খেতে খেতে আজ বিপন্ন।
আজও আমি জ্বালাই সেই কাগজগুলি, প্রতিনিয়ত;
কেবলমাত্র জীবনের খোঁজে।
জীবন পুড়বে জীবনের স্রোতে,
পোড়া জীবন, পোড়া ছাই ই দেবে জীবনের মানে।
জীবন না পুড়িয়ে কি কেউ জীবনের কথা বলতে জানে?