Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Prantik Biswas

Comedy Drama

4.7  

Prantik Biswas

Comedy Drama

গান্ধী চতুর্থী

গান্ধী চতুর্থী

4 mins
1.0K


পুজোর দিনগুলোতে বৃষ্টির পূর্বাভাস আর কয়েকদিন বৃষ্টির চোটে কাহিল জনতার মতন আমিও ক্যামেরা নিয়ে ছবি শিকারে বেরিয়েছিলাম চতুর্থীতে। সকালে, আবার সন্ধ্যায়। বেশ গরম, তাও অনেকক্ষণ বাইরে কাটালাম, এসির অভ্যাসের কষ্টকে ছাপিয়েও আনন্দ পেলাম ঘেমে নেয়ে ছবি তুলে। কানে এল কচিকাঁচাদের কিছু কথা আর চোখে কিছু দেখলাম। মনে করিয়ে দিল সেই বয়সটা; যখন বন্ধুদের সাথে পুজোটা একদম অন্য অন্যরকম হত!


। সকাল ।

বেরোনোর আগে কিছু কেনাকাটা ছিল। দোকানের সামনে যখন দাঁড়িয়ে আছি, দোকানদার দেখি বিরক্ত মুখে বারবার আমার কাঁধ পেরিয়ে কিছু দেখার চেষ্টা করছে। পেছন ফিরে দেখি দুটো ছেলে উইকেট পুঁতছে রাস্তায়। দোকানদার এবার হাঁক দিল

- কিরে আজ আবার ক্রিকেট! এই তো রোববার টুর্নামেন্ট খেললি!

- আরে সেদিন সেমি ছিল, আজ ফাইনাল।

- অটোওয়ালারা খেলতে দেবে তো?

- আজ তো দুটোর পর অটো বন্ধ।

- কেন রে?

আমিও অবাক হলাম শুনে কারণ কলকাতায় অটো দুপুরের পর থেকে বন্ধ থাকে শুধু ষষ্ঠী থেকে! এবার অন্য ছেলেটা বলটা হাতে লুফতে লুফতে বলল

- গান্ধী চতুর্থী!

। প্রায় দুপুর |

এক মাঝারি বিখ্যাত প্যান্ডেলে ঢুকতে দেখি রাস্তার পাশের মঞ্চে প্রায় জনাদশেক বয়ঃজ্যেষ্ঠা দাঁড়িয়ে আছেন লাইন দিয়ে। সামনে বিশাল ভিড়। দূর থেকে দেখে ভাবলাম হয়ত কোন বিউটি প্যাজেন্ট হচ্ছে সিনিয়র সিটিজেন দের। সামনে কমবয়সী একটা দল ছিল প্রায় জনা দশেকের, তারা পাশাপাশি না হেঁটে একের পেছনে এক হাঁটছিল। চাইনিজ হুইস্পারের মতন সামনে থেকে পেছনে কথার ব্যাটন পাস হয়ে আসছে! আমি শেষের ছোকরাকে অনুরোধ করলাম জানতে কি হচ্ছে। তার কাছে খবর আগেই চলে এসেছে মনে হল, বলল - স্বয়ম্বর সভা! মুখ থেকে ফস করে বেরিয়ে গেল - কার? ছোকরা একটু মুচকি হেসে বলল - এক দাদুর! 


ক্যামেরার ভিউফাইন্ডারে চোখ রেখে এগোচ্ছি, টেলি লেন্সের তাক একবার প্যান্ডেল একবার আবার স্টেজের দিকে। স্টেজে এত মহিলার মধ্যে আস্তে আস্তে আড়াল থেকে প্রকট এল এক ছবি। বিশাল মালা পরে দাঁড়িয়ে আছেন উনি - মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী!

। বিকেল ।

ছবি তোলার পক্ষে আদর্শ - কনে দেখা আলোয় মা দুর্গার ছবি তুলবো বলে বেরিয়েছি। বাড়ির আশেপাশের ছোট প্যান্ডেলগুলো ঘুরেফিরে দেখছি, যদি কোথাও কোনো মায়ের মুখে সূর্যের আলো পড়ে। সবজায়গায় দেখি মা স্পটলাইটকে ভরসা করে বসে আছেন, ছোট বড় সব প্যান্ডেলে! বাধ্য হলাম ছবির বিষয় বদলাতে; সন্ধ্যেবেলায় আলোর খেলা তুলবো ঠিক করলাম।


অন্ধকার নেমে গেছে। একটা ছোট প্যান্ডেলে চেয়ারে বসে লেন্স পাল্টাচ্ছি, একদল তরুণ তরুণীর পাশে।

- এই জানিস রনি আমায় একটু আগে প্রপোজ করেছে ফেসটাইমে!

একটা মেয়ে এটা বলার সাথে সাথেই সবাই হাঁ হাঁ করে উঠল। বক্তব্য - হতেই পারে না! মেয়েটাও প্রতিবাদ করতে ছাড়ল না। আমি এবার লেন্স ছেড়ে ওদের দিকে ফিরলাম। শোরগোল থামাতে এক মাতব্বর দাঁড়িয়ে পড়ল, মেয়েটার কাঁধে একটা সমবেদনার হাত রেখে বলল

- বস, পাস্ট রেকর্ড বলে - রনি পেটে জল না পড়লে কাউকে প্রপোজ করে না! মানবি তো?

মেয়েটা কিছু উত্তর করল না। আলতো করে ঘাড় নাড়ল সম্মতির।

- এইবার পথে আয়...আজ ড্রাই ডে!

- কেন?

মেয়েটার থুতনিটা ডান হাতের আঙুলগুলো দিয়ে নেড়ে দিয়ে ছেলেটা বলল

- আজ সেকেন্ড অক্টোবর সোনা!


। রাত।

সারাদিন যা হেঁটেছি, নিজেকে মনে হচ্ছিল ডান্ডি মার্চের সেই ফুটেজ (যেখানে গান্ধীজি সহ সব আন্দোলনকারী প্রায় দৌড়ানোর মতন জোরে হাঁটছে) দেখে বিশাল উদ্বুদ্ধ! যাইহোক, বাড়ি ফিরছি মোটামুটি বেশ কয়েকটা নামজাদা প্যান্ডেল ঘুরে। পাড়ার কাছে, শ্রীমোহন লেনে এসে দেখলাম মা এসে গেছেন। প্রতিবছর এরা খুব সুন্দর মূর্তি আনে, তাই ক্যামেরা আবার বার করলাম। ছবি তুলছি, একজন লোক এল তার পরিবার নিয়ে। দেখে আর কথা শুনে মনে হল আমাদের দিককার (বর্ধমান)। বাবা, মা, মেয়ে আর বয়স্কা একজন। মেয়ের বয়স নয়-দশ, দম্পতি তিরিশের ঘরে।

মেয়ে - মা দ্যাকো, মা দুর্গার হাতে কোন অস্ত্র নেই।

মা - কারোর হাতেই নেই কা।

বাবা - বলোতো, কেন?

মা - এবার বেশিরভাগ ঠাকুর অহিংসে থিম করচে, দেকলে না।

বাবা - দূর, তোমারও যেমন গিয়ে বুদ্ধি। দ্যাকোগে কেমন সব হাত মুঠো - অহিংসে থিম না আরো কিছু

মা - হ্যাঁ, তুমি তো সবজান্তা! তুমিই বল দিকিন...

বাবা (মেয়ের দিকে ফিরে) - আজ গান্ধীজির জন্মদিন না, তাইঅস্ত্র দেয়নি কো। উনি অহিংসেতে বিশ্বাস করতেন কিনা...



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy