Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Mausumi Pramanik

Romance Comedy

3  

Mausumi Pramanik

Romance Comedy

ভালবাসা

ভালবাসা

4 mins
9.4K


সামান্য একটা ভুল বোঝাবুঝিতে থমকে গিয়েছে লাবণ্যের জীবনটা। সেদিন ছিল শনিবার। তার লেখা প্রথম উপন্যাস “স্বপ্নের চৌকাঠ” এর শুভ উদ্বোধন হয়েছে শহরের নামী পাবলিশারের মাধ্যমে। সেই খুশীতে সেলিব্রেশান। অফিস থেকে ফেরার পথে ভদকা কিনে আনল সূপর্ণ। লাবণ্য চিকেন কাবাব বানিয়েই রেখেছিল। গান শুনতে শুনতে বেশ কাটছিল সন্ধ্যেটা। হঠাৎ তালটা কেটে গেল; শিমূলকে নিয়ে খোঁচা দেয় সূপর্ণ।

“এখন তো ঐ বোকাচোদাটাই তোমার ইন্সপিরেশান...”

 বিয়ের পর চাকরী ছেড়ে দিয়েছিল লাবণ্য। জানিয়েছিল, এখন থেকে সে শুধুমাত্র সাহিত্যচর্চায় মনোনিবেশ করতে চায়। যদিও আজকের দিনে দু’জনের রোজগার ছাড়া সংসার চালানো মুশ্কিল। তবুও রাজী হয়ে গিয়েছিল সূপর্ণ। নিজেও তো ক্রিয়েটিভ মনস্ক। তাই বোধহয় লাবন্যের ইমোশানটাকে সম্মান জানাতে দ্বিধাবোধ করে নি। বলেছিল,

“নো ইস্যু...আমি তো জব করছি, তুমি তোমার লেখা চালিয়ে যাও।”

প্রথম প্রথম তার লেখা পড়ে প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে যেত সূপর্ণ; বলতো,

“এই কারণেই তোমার বাবা-মা তোমার অমন কাব্যিক নাম রেখেছিলেন...”

 লাবণ্য তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তাই সে একই বাড়িতে নীচের ফ্লোরে থাকতে চেয়েছিল। সূপর্ণ আপত্তি করে নি। তারও তো তিনকূলে কেউ নেই। দুজনে যত না স্বামী-স্ত্রী, তার থেকে অনেক বেশি বন্ধু। কোন গল্পের নাম দিতে পারছে না কিংবা হয়তো ফিনিশিংটা ম্যাড়মেড়ে হয়ে যাচ্ছে অথবা গল্পে কোন টুইস্ট দিতে হবে, রাতে বিছানায় আদর করতে করতে গল্পের ছলে সূপর্ণ লাবণ্যকে সব বুঝিয়ে দিত। তাই বুঝি লাবণ্যের জীবনে শিমূলের এন্ট্রিটা সে মন থেকে মেনে নিতে পারছিল না। লাবণ্য কিন্তু সরল মনে শিমূলের কথা সূপর্ণকে শেয়ার করেছিল। বলেছিল,

“জানো, ও কত বড় বংশের ছেলে, আর কত কি ডিগ্রী করে বসে আছে...কি সুন্দর ছবি আঁকে, কবিতাও লেখে...” সূপর্ণর শুনে হিংসে হয়েছিল, যদিও মুখে কিছু বলল না।

 কিন্তু সেদিন নেশার ঘোরে সূপর্ণ বলেই ফেলল, “ঐ ছেলেটার সঙ্গে তুমি মেশামেশা বন্ধ কর...”

“কেন সূপর্ণ? তুমি তো কোনদিন আমার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করোনি। এমনকি আমার কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডাও দিয়েছো। তবে আজ কেন?”

“ওর সঙ্গে তোমার এত পিড়ীত কিসের?”

“মানেটা কি? শিমূল আমার বন্ধু, আমায় ভাল লেখা লিখতে ইন্সপায়ার করে। ওর কাছে আমি সারা পৃথিবীর কত অজানা তথ্য পাই, জানো?”

“তবে তুমি এক কাজ কর, ঐ হারামজাদাকেই বিয়ে কর। আমি তোমায় ডিভোর্স দিয়ে দিচ্ছি।”

“কি সব যাতা বলছো? বিহেব ইয়োরসেল্ফ সূপর্ণ...”

“নইলে কি করবে? আমায় তাড়িয়ে দেবে? তা তুমি করতেই পারো...তোমার বাপের বাড়িতে পড়ে আছি যখন...”

“ঠিকই বলেছো,এখানে তোমার আর জায়গা হবে না। তুমি চলেই যাও...আমার বাড়ি থেকে...আমার জীবন থেকে...”

 সে’রাতেই চলে গেল সূপর্ণ, নিজের বাড়িতে, সোনারপুরে। দুদিন পরে রাগ পড়ে গেলে লাবণ্য ওকে ফিরে আসতে অনুরোধ করে। কিন্তু সে আসে না। লাবণ্য নিজেকেই দোষারোপ করতে থাকে। ঘরের এক কোনে নিজেকে বন্দী করে। খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয় সে। দিনরাত স্মোক আর ড্রিংক করতে থাকে। তীব্র দহণ জ্বালায় জ্বলতে থাকে সে। স্বভাবতই মাস খানেকের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এমনিতেই গ্যাসট্রিক আলসারের রুগী। সমানে বমি করতে থাকে। সূপর্ণকে কাঁদতে কাঁদতে বলে,

“আমি খুব অসুস্থ, একবার এসে আমার সামনে দাঁড়াও। আমি ঠিক ভাল হয়ে যাব...”

“আমি বিজি,কাজের প্রেশার। পরে কথা হবে...”

“আমি একবর্ণও লিখতে পারছি না। তোমাকে ছাড়া আমি কিছুই করতে পারব না। ফিরে এসো তুমি, প্লিজ...”

 ফিরে আসে না সূপর্ণ, লাবন্যও আর ওকে বিরক্ত করে না। দুজন দুজনকে ভুলে থাকার চেষ্টা করে। যখন একসাথে থাকত তখন কতো অভিযোগ। লাবণ্যর মনে হত, ‘সূপর্ণ ভীষন আনরোমান্টিক, আমাকে এতটুকুও ভালবাসে না...’ আর সূপর্ণর মনে হত, ‘লাবণ্য ভীষন সেলফিস, শুধু নিজের কথাই বোঝে...’ আজ দীর্ঘ ছয় মাস ধরে ওরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিল যে ওরা একে অপরকে কতখানি ভালবাসে। কিন্তু দুজনেই ভাঙবে তবু মচকাবে না।

 ইতিমধ্যে লাবণ্যর মায়ের ফোন আসে। “সূপর্ণ একবার আসতে পারবে?”

“কেন? হঠাৎ?”

“লাবণ্য তোমাকে দেখতে চাইছে...”

“আমার সময় নেই...”

“আজ সময় না পেলে আর হয়তো তোমাদের দেখা হবে না।”

“ও বুঝি ডিভোর্সের নোটিশ পাঠাচ্ছে?”

“ওর কি সেই শক্তি আছে বাবা? নার্সিংহোমে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। স্টমাকে ক্যানসার...”

মা আর কিছু বলতে পারলেন না, কাঁদতে কাঁদতে ফোন রেখে দিলেন। সূপর্ণর সারা শরীর কাঁপতে থাকে। সমগ্র পৃথিবীটা তার সামনে দুলছে যেন। সেদিনই সে নার্সিংহোমে যায়। কিন্তু লাবণ্য মুখ ফিরিয়ে থাকে, কথা বলে না।

বাবা বললেন, “মেয়েটা ভাল করে চিকিৎসাই করাতে দিল না...এত জেদী। বলে আমার মত অযোগ্য সন্তানের জন্যে এক পয়সাও খরচা করতে দেব না...একটা ওষুধ মুখে তুলল না...”

সূপর্ণ দেরী না করে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে নিল। তারপর শ্বশুর শাশুড়িকে আশ্বাস দিল, “চিন্তা করবেন না,আমি তো আছি, আর একটা দিন ওয়েট করুন প্লিজ...”

 একদিন পরে সে সকালবেলাতেই নার্সিংহোমে এসে জোর করে লাবণ্যের মুখটা নিজের দু’হাতের মধ্যে নিয়ে বলে,

“রেডী হয়ে নাও। মুম্বাই যেতে হবে,সন্ধ্যেয় ফ্লাইট।”

লাবণ্যর দু’গাল বেয়ে জলের ধারা নেমে আসে। “কেন?”

“ওখানেই তোমার চিকিৎসা করাব। কেমোথেরাপি হবে। আমি অফিস থেকে রিজাইন করেছি, ছুটি দিতে চাইছিল না।”

 “আমি মুম্বাই যাব না। বাবার শেষ বয়সের সম্বলটুকু খরচা করে আমি সুস্থ হতে চাই না...”

“নারে মা, আমি একটা টাকাও দিচ্ছি না...” বাবা জানালেন।

“সূপর্ণ ওর পৈতৃক ভিটে-বাড়ি বিক্রী করে টাকা জোগাড় করেছে। দেখ মা,দেখ পাগলটা তোকে কতখানি ভালবাসে...” মা আঁচল দিয়ে চোখের জল মুছলেন।

“কেন এমন করলে সূপর্ণ? ওটাই যে তোমার একমাত্র সম্পদ ছিল...”

“ভুল। আমার একমাত্র সম্পদ তো তুমি, আমার একমাত্র আশা, ভরসা, আমার একমাত্র বউ, আমার একমাত্র ভালবাসা। তোমার থেকে তো ও বাড়ি দামী হতে পারে না, তাই না?

সূপর্ণ লাবণ্যর নাকে নাক ঘষে দেয়।

#মূল্যবান প্রেম#


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance