Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

dazzle with me

Romance Classics Inspirational

3.3  

dazzle with me

Romance Classics Inspirational

এক তরফা প্রেম

এক তরফা প্রেম

4 mins
1.1K



  আমাদের মেয়েবেলায়, মানে ঠিক ততটাও ছোট না এই কিশোরী বেলায়, প্রেম ট্রেম এত জলভাত ছিল না। তখনো ছেলে মেয়েদের মেলামেশা এত অহরহ ছিল না। এক কোচিং তাও তো বেশিরভাগ ছেলে মেয়ে আলাদা। আর আমি তো খুব গভীর গরিব পরিবারের, বাবা রাজমিস্ত্রি আর দেখতে-শুনতে ওই যাকে বলে খারাপের দিকে তার ওপরে আবার কালোকোলো, শুঁটকি মার্কা । তাই যখন আমার স্কুল ফেরতা বান্ধবীদের দিকে তাকিয়ে বয়েজ স্কুল ফেরত সাইকেল নিয়ে বা হেঁটে চলে যাওয়া ছেলেছোকরারা একটু ভালো লাগার চোখে তাকাতো, আর আমার বান্ধবীরা তাদের দিকে চোরা চোখে তাকিয়ে ধন্য করত, সে সময় আমার দিকে কেউ তাকিয়েছে বলে মনে পড়ে না। 


  ঠিকই ধরেছেন ,আমি তাকাতাম! একটু গোপন ইচ্ছে ছিল হয়তো! ওই নিজেকে ব্যর্থ মনে হতে হতে কেমন একটা ইনফেরিয়রিটি কম্প্লেক্স যাকে বলে তাই! 


 আমি মনে মনেও কাউকে ভালো লাগাতে পারতাম না তার অবশ্য আরও একটা কারণ ছিল। ছোট থেকেই পইপই করে মা বলে দিয়েছিল, "আমরা গরিব আমাদের পড়াশোনা করতে হবে"। 


 সে সময় যারা প্রেম করতো মানে যাকে সত্যিই প্রেম বলা যায়, ওই চিঠি দেওয়া নেওয়া, একটা পেন উপহার পাওয়া বা ফুল আঁকা রুমাল দেওয়া বা কার্ডে উইশ করা তারা দেখতাম বেশ পেছনের দিকের রোল।তাই একটা ধারণাও মনে মনে ছিল প্রেম করলে পড়াশোনা হয় না বা যারা পড়াশোনা করে তারা প্রেম করে না । 


 আশেপাশে যারা ঐ ঝুপ করে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে নিত তাদের প্রায় সবাই ওই ফেলু ! তাই ভালো রেজাল্ট আর প্রেমের যে একটা বিপ্রতীপ সম্পর্ক সেটায় একটা সরকারি শীলমোহর পড়ে ছিল মনে মনে। 


  তবে যতই পাখি পড়ার মতো করে যাই শিখি, যখন ওই বয়সটা যাকে বলে টিনেজ তখন, মিথ্যে বলব না যতই ফেল করে যাওয়ার ভয়ে থাকুক একটু ইচ্ছে করত কেউ আমার দিকেও ওভাবে তাকাক! কিন্তু হায়রে আমার পোড়া কপাল, আমি যতই চোরা চাহনী দি কেউ ফিরেও তাকাতো না।


  মঙ্গল রাজেশ দীপায়ন তখন ইন ডিমান্ড । আর ছিল জিমি। আমাদের পাড়াতে একটা নেড়ি কুকুরের নামও ছিল জিমি কিন্তু এ জিমি সে জিমি নয়। এ বড় লোকের লম্বা, ফর্সা, তখনকার দিনেই হাতের গুলি ফোলানো ক্লাস ইলেভেনের জিমি। যে তখনকার দিনেও পুজোর ভাসান এ, ওইটুকু বয়সেই মদ খেয়ে নাচতো আর বড়রা সবাই, "ছি ছি", করত। কিন্তু কেন জানিনা বান্ধবী মহলে ওই জিমির নামডাক ছিল সবচেয়ে বেশি। 


 জিমি কারো দিকে একটু তাকিয়েছে, তার আর মাটিতে পা পড়তো না । হয়তো নিষিদ্ধ জিনিসের নেশা সব সময়ই অদম্য।সে যাই হোক মোদ্দাকথা প্রেম মানে বাজে আর বাজে মানে প্রেম এই ধারণা নিয়েই চলছিল।


  আমাদের বস্তিবাড়ির উল্টোদিকেই একটা দোতলা বাড়ি । সে বাড়ির মালকিন মানে পাপ্পুদার মা বেলঘড়িয়া গার্লস এর অংকের কড়া হেডমিস্ট্রেস। পাপ্পুদা দুর্দান্ত স্টুডেন্ট পড়ে নামজাদা সাউথ পয়েন্ট স্কুলে। আমাদের পাড়া মিশ্র বসতি, তাই দোতলা বাড়ি আর খোলার চাল মিলিয়ে মিশিয়ে। 


  পাপ্পুদা পড়তো আমার থেকে এক ক্লাস উঁচুতে। দেখতে শুনতে ভাল এবং নিয়মমাফিক আমার পাপ্পু তার প্রতি অদম্য কৌতূহল থাকলেও পাপ্পুদার কাছে যে আমি নস্যির চেয়েও তুচ্ছ তা বেশ বুঝতাম।


 অংকের দিদিমণি মানে আমরা যাকে জেঠিমা বলতাম তিনি ছেলের সামনে মাধ্যমিক অথচ তার পড়ায় মন নেই ,তাই মাঝে মাঝে আমাকে একটু ডেকে দয়া করে অংকটা দেখিয়ে দিতেন। ছেলেকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতেন, "দেখেছিস ও কত ভালো পড়াশোনায় !আর তুই? ওরা কিছু পায় না বলেই এত ভালো ,তুই সব পেয়েছিস তাই.....",

পাপ্পুদা ফুঃ করে জেঠিমার কথার সঙ্গে সঙ্গে আমাকেও যেন উড়িয়ে দিতো । 


  স্কুলে শুনতাম এক ক্লাস ওপরে পড়া, অনেকটা দিব্যা ভারতীর মতো দেখতে কাবেরীদির নাকি পাপ্পু দা কে ভালো লাগে। কাবেরীদি অবশ্য বলতো দ্বৈপায়ন। ওটাইতো পাপ্পুদার ভালো নাম । কিন্তু কেন জানিনা আমার ভাল লাগতোনা । 


 যখন পাপ্পুদা স্কুলে কাবেরীর সঙ্গে দেখা করতে আসতো, হেসে হেসে কথা বলতো বা স্কুল শেষে দুজনে একসাথে কোচিংয়ে পড়তে যেতে ,কেন জানিনা মনে হতো, পাপ্পুদা শুধু আমার সঙ্গে জেঠিমার কাছে পড়তে বসবে, কি দরকার কোচিংয়ে যাবার ?


 ওসব উঁচু ক্লাস ফাস্, মাধ্যমিক টাধ্যমিক ওসব কি ছাই অতো ভাবতাম ?এক অদৃশ্য অধিকারবোধ পেয়ে বসেছিল আমায়।


 রাতে দেখতাম পাপ্পুদার ঘরে আলো জ্বলছে, তার মানে পড়ছে, আমি তার চেয়েও বেশি সময় পড়তাম।যতক্ষণ না পাপ্পুদার ঘরের আলো নিভতো ততক্ষণ আমিও শুতাম না। কোনদিন এমন হয়েছে রাত দুটো ,আড়াইটে, তিনটে বেজে গেছে। 


  সে তো মাধ্যমিকের পড়া করছে ,তারপর ইলেভেনের, কিন্তু আমি এক ক্লাস নিচে পড়েও পাল্লা দিয়ে রাত জাগতাম আর মিছিমিছি জেগে বসে কি করবো? বইই পড়তাম। আর পড়তাম বলে মা-বাবাও কিছু বলতোনা। 


 মাধ্যমিক পাস করল পাপ্পুদা সিক্সটি টু পার্সেন্ট ,তখন ওটা বেশ ভালো নম্বর।পাপ্পুদা সাইন্স নিল আর আরো বেশি রাত জেগে পড়তে লাগল ,পাল্লা দিয়ে আমিও। 


  তখন বুঝিনি এখন বুঝি ওটাও আমার প্রেমই ছিল, ভালোবাসাই ছিল। ওই ভাবে রাত জেগে মনে মনে আমি পাপ্পুদা কে সঙ্গ দিতাম। যদিও মনে হয় না যে কেউ সেটা জানত বা বুঝবো আর আমাকে পাত্তা দেবার কথা আমি নিজেই ভাবতে পারতাম না তো পাপ্পুদা! 


  এইভাবে আমারও মাধ্যমিক পরীক্ষা চলে এলো এবং ওই পাল্লা দিয়ে মনে মনে প্রেম করে আমি তখনই প্রায় এইট্টি পারসেন্ট নাম্বার পেলাম । কিন্তু প্রেম ওই পর্যন্তই।


  শেষ পর্যন্ত কাবেরীদির সঙ্গেই পাপ্পুদার একটা গভীর প্রেমের সম্পর্ক হয়েছিল আর আমি ওই প্রেমে পড়ে পড়েই একটা দারুণ রেজাল্ট করে ফেললাম। পাত্তা না পাবার দুঃখটা ছিল কিন্তু সবাই এতো ভালো ভালো বলল রেজাল্টের জন্য যে তারপরে আর ঐ বিষয়ে দুঃখ টুঃখ আসেনি। 


  তাই বলি একতরফা প্রেম সবসময় খারাপ নয় কখনো কখনো ভালোও করে! 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Romance