Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

dazzle with me

Abstract Fantasy Others

3  

dazzle with me

Abstract Fantasy Others

আত্মরতি

আত্মরতি

7 mins
464



  "আরে ধুর কি যে বলো তিয়াসা দি !সেসব দিন কবেই চলে গেছে !ও সব এখন অতীত পুরোটাই ভাইব্রেটর", হেসে লুটিয়ে পড়ে রনিতা । এশা আবার হাইফাই করে। 

 "ওই বদমাস গুলোর কথা বাদ দে, তুই কফি খা", ঐন্দ্রিলা দি সামনের চেয়ারটায় বসে। "থ্যাংক ইউ গো", একটা লম্বা চুমুক দেয় তিয়াসা । এবার বেশ ঠান্ডা পড়েছে । যদিও এ সি অফিস, বোঝার কোন উপায় নেই তবু জানুয়ারির শীত,বাঙালির গায়ে তো একটু লাগবেই ।  " হ্যাঁ গো ঐন্দ্রিলা দি ,ভাইব্রেটর কি? ",  "আরে ধুর! তুই ঐ চ্যাংড়া গুলোর কথা বাদ দে তো! ইয়ং ব্লাড, নো টেনশন, নো রেস্পন্সিবিলিটি। বিশ বাইশ বছরে পৃথিবী ওরকম তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে! "  "আরে বলোই না ",  " আরে আমিই কি জানি ?", এড়িয়ে যায়ঐন্দ্রিলা দি। 

  লাঞ্চ ব্রেক শেষ ,এখন যে যার ডেস্কে ফিরতে হবে। কর্পোরেট জগতের সব চলে ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে তাল মিলিয়ে । কিন্তু তিয়াসার মনে কৌতুহলটা রয়েই যায়। রণিতা, এশা কি বলছিল জানতে হবেতো ! হাতের কাছে গুগল থাকতে চিন্তা কি? কিন্তু যে বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ওটার কথা এলো তাতে অফিসে বসে সার্চ করাটা উচিত হবে না । 

  তিয়াসার বিয়ে হয়েছে প্রায় বারো তেরো বছর। এখন ও একচল্লিশ। একমাত্র ছেলে রায়ণ দার্জিলিংয়ের কনভেন্টে পড়ে। ওর এক মামা শিলিগুড়িতে কাউন্সিলর, তার সোর্সে এত সহজে ওকে ওখানে ভর্তি করা। রায়ণ সবে সিক্স । 

 বিয়ের বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তিয়াসা প্রেগনেন্ট।ওদের তালতলা এলাকায় যখন বউ হয়ে আসে তখন সালটা 2007 । মোবাইলের এত রমরমা হয়নি , টাচস্ক্রিন তো নয়ই।

 ওদের তালতলার বাড়ি বনেদি ,একান্নবর্তী পরিবার। যদিও এখন সবাই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে, তখন একটা রক্ষণশীল ব্যাপার ছিল। তাই বউ হয়ে বেশ কয়েকবছর মাথায় বড়দের দেখে একটু ঘোমটা ঠেকাতে হয়েছে, চুড়িদার পড়লেও জিন্স নৈব নৈব চ !তারপর ধীরে ধীরে বাড়ির ভোলবদল, মানুষের ও। ঠাকুরমা শাশুড়ি মারা গেলেন ,শ্বশুররা আলাদা হলেন, তারপর আবার তাদের ভাইয়েরা ভাইয়েরা আলাদা । এখন ওই বাড়িতে একমাত্র মেজো কাকা শ্বশুর আছেন ,বাকিরা যে যার মত উঠে গেছে । যেমন ওরা উঠে এসেছে পার্কসার্কাসের এই ফ্ল্যাটটাতে ।     বিয়ের পর তিয়াসা চাকরিটা নিজেই ছেড়ে দিয়েছিল, রায়ন কে সামলাবে কে? কিন্তু রায়ন যখন স্কুল হোস্টেলে চলে গেল তখন বাড়িতে ওর করার কিছুই রইল না । তীর্থ নিজেই এই চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়। আ্যাকাউন্ট্যান্ট মানুষ, হিসেব হিসেব টা ভালই বোঝে! এতে তিয়াসার খরচ এর হাত থেকে তীর্থ মুক্তি পায় । তিয়াসাকে তীর্থ ভালই চেনে বাজে খরচ করার মেয়ে ও নয় । তাই যা আসে তা সংসারে আসে । 

  তীর্থ কাজপাগল মানুষ ,বলা ভালো অর্থ পাগল। রায়ন হয়ে যাওয়ার পর ওদের মধ্যে আগুনটা নিভে গেল একেবারে। প্রথমেতো তালতলার বাড়ি থেকে ফ্ল্যাট কিনে উঠেছে যাবার চাপ ,তারপর গাড়ি ,ছেলেকে কনভেন্টে ভর্তি,ছেলের খরচ এর চাপ,এখন উঁচুতে ওঠার চাপ। তীর্থ যেন একটা লিফটে চেপেছে ,যেটা শুধু উঠে যাচ্ছে, উঠে যাচ্ছে ,উঠে যাচ্ছে ! তিয়াসার ভয় হয়, হয়তো একদিন তীর্থ এই লিফট থেকে নামতে চাইলেও আর পারবে না, হয়তো তখন ওর নিচে তাকাতেও ভয় করবে! 

 তীর্থ বাড়ি ফেরে রাত্রি এগারোটা, কোন কোন দিন আরও বেশি দেরি করে । চ্যার্টার্ড আ্যাকাউন্ট্যান্ট, বহুকষ্টে নিজের চেষ্টায় পসার । চেম্বার থেকে ফিরে বাড়িতেই চেম্বার খুলে বসে ! খেতে খেতে ও চোখ থাকে সেনসেক্স এ । তাছাড়া ক্লায়েন্ট কল তো আছেই। তারপর রাতেও ল্যাপটপের ডুবে থাকা । অপেক্ষা করতে করতে তিয়াসা কখন ঘুমিয়ে পড়ে ,কখনো আবার দেখে তীর্থ কাজ করতে করতেই এলিয়ে পড়েছে বালিশে। ও উঠে ওকে বালিশে ঠিকভাবে শুইয়ে দেয় । 

  ঠিক সাতটায় মনীষা বেল বাজাতে ,তিয়াসা দরজা খুলে আবার একটু সময় ফেসবুক, মেসেন্জারে মর্নিং উইশ। তীর্থ সাড়ে আটটায় ঘুম ভেঙে রেডি ,ব্রেকফাস্ট সেরে লাঞ্চ বক্স নিয়ে সাড়ে নটার মধ্যে চেম্বারে । এর মধ্যে টুকটাক হাই-হ্যালো ছাড়া তেমন কথা হয় না কারণ সে সময় তিয়াসার ও রেডি হওয়ার থাকে।

  মাসে একবার রায়ানকে দেখতে যাওয়া ,তাও আজকাল তিয়াসাকে একাই যেতে হয় ,তীর্থ সময় করে উঠতে পারে না । তিয়াসার মাঝে মাঝে তীর্থকে দেখলে বড্ড করুণা হয়, বেচারা জীবন কি জানলো না। এক যন্ত্রমানবের মত বলা ভাল যন্ত্র দানবের মত শুধু টাকাই ছাপিয়ে গেল । ওর এঞ্জয়মেন্ট বলতে তো ওই স্যাম্পেন , শেরি বা হুইস্কিতে একটু বেতাল হওয়া ,তাও পরিমিত!

  তিয়াশা বৃষ্টি ভালবাসে, ওর সব থেকে প্রিয় লেখক বুদ্ধদেব গুহ । ঋজুদাকে ও মনে মনে চায়, বাংরিপোসীতে ও হারিয়ে যেতে চায়, মনে মনে যেন হলুদ বসন্ত পাখির ডাক শুনতে পায় । ও 'কৃষ্ণকলি' পড়ে ও 'শাহজাহান' পড়ে, রবীন্দ্রনাথ ওকে পাগল করে। বুদ্ধদেব গুহর কৈশোরকালীন প্রেমে ঋভু ওর স্বপ্নপুরুষ!মনে মনেও যে কতবার বাবলি হয়েছে বা কামিন বস্তির সেই মেয়েটা যাকে আতিপাতি খুঁজে বেড়ায় ঋজু! হারিয়ে যায় যদি জগজিৎ সিং এর গানে, সে গান ওকে নিয়ে যায় অন্য জগতে, "হোঁটো সে ছুঁলো তুম, মেরা গীত অমর কর দো", গান শুনে ওর চোখ বুজে যায় । যেদিন ঋতুপর্ণ ঘোষ মারা গিয়েছিলেন সেদিন ও সারাদিন খায়নি। 

  নতুন নতুন বইয়ের গন্ধে যেন সব অতৃপ্তির পূর্ণতা খুঁজে পায় ও ,বোঝে না আজকালকার ছেলেমেয়েরা কি করে মোবাইলে বই পড়ে !বই এর আসল মজা কিভাবে নীলচে স্ক্রিনে পাওয়া যায়! বই বুকের উপর নিয়ে শোয়া, শ্রীজাতর কবিতার বই মাথার কাছে রেখে মনে হয় যেন কবি ওর সঙ্গে রয়েছেন কবিতা হয়ে !তাই আজও বেঁচে থাকাটা ততটা নিরর্থক নয় ,তাই ঐন্দ্রিলা দি বা সর্বাণীর মত কোন অন্য পুরুষে পূর্ণতা খুঁজতে হয় না । ওর সব চাহিদা মেটায় বই ,মন ভালো করা বই । ওর শোবার ঘরে বইয়ের আলমারি জুড়ে সব প্রিয় বইয়েরি। তা নিয়ে তীর্থর কোনো মাথাব্যথা নেই ,আসলে তীর্থর ওর উপস্থিতিও নিয়ে কোন ধারনা আছে কিনা তাও ও টের পায় না।

  কিন্তু আজকাল হঠাৎ হঠাৎ মনে হয় ও যেন ফুরিয়ে আসছে । মাঝে মাঝে আয়নার দিকে তাকায় । কেন তাকাবে না ? যখন স্লিভলেস লাল ব্লাউজ, কালো শাড়ি গলায় একটা স্লিক ডায়মন্ড পেন্ডেন্ট, নিজেকে নিজেরই অপ্সরা মনে হয় ! কে বলবে ও একচল্লিশ! দিব্যি আঠাশ বলে চালানো যায়! রিণিতারা তো তাই বলে।এখনো কোমরের কাছে তেমনই নিটোল, শরীরের কোথাও একটুও বাড়তি মেদ নেই । তার জন্য মোটেও পরিশ্রম করে না বরং যা ইচ্ছে তাই খায়, কিন্তু এটা ওদের ঈশ্বরপ্রদত্ত । ওদের পরিবারের সব মেয়েদেরই শারীরিক সৌন্দর্য এরকম। কিন্তু কি লাভ? 

  শেষ কবে ছুঁয়েছিল তীর্থ ? বিয়ের পর পর ভালোবেসে নাকি কামনায় ছুঁচো, তারপর মাঝে মাঝে অভ্যাসেই, নেশায় । তার চেয়ে বড় নেশা যখন ওকে পেল ছুঁড়ে ফেলে দিল তিয়াসাকে! কত রাতে ও তীর্থর বুকে হাত বোলায়, ডেকে তোলে, জাগাবার চেষ্টা করে ,ঠোঁটে ঠোঁট ঘষে ,ওর হাত নিজের বুকে নিয়ে বলে, "বল, বল, তোমার এখনো আমাকে ভালো লাগে? বলো না !", 

  " আঃ, কি ছেলেমানুষি করছো?", তীর্থ বিরক্ত হয় ,পাশ ফিরে শোয়েব। অপমানিত তিয়াসা ,পরিতক্ত তিয়াসা, ছুঁড়ে ফেলা যৌবন নিয়ে তিয়াসা আজ বছরের পর বছর তরল স্রোত ক্ষরণে ডুবেছে নিজের কল্পনার পুরুষের সঙ্গে, যারা ওর বিভিন্ন উপন্যাসের প্রিয় চরিত্র।সব সময় নায়ক এমন নয় ,কখনো কখনো ভিলেন কে ডেকে নিয়েছে নিজের সঙ্গে ! কিন্তু শরীর ?শরীর তো কথা শোনে না !কিন্তু শরীরের কথা যে বলতে নেই, মেয়েদের, বিশেষ করে বিবাহিতা বাঙালি মেয়েদের শরীর থাকতে নেই, সে বিজ্ঞান যাই বলুক! সমাজ তো নাক সিঁটকোবে, নোংরা বলবে! ভীষণ হতাশা, ভয়ঙ্কর একটা কান্না বুক ঠেলে বের হয়ে আসে । বিছানা ছেড়ে উঠে, বাথরুমে কল খুলে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে তিয়াসা, বুক ভিজে যায় কান্নায়, শব্দ ঢেকে দেয় কলের জলের আওয়াজ । সকালে আবার সেই এক রুটিন! 

  আজকালকার ছেলেমেয়েরা অনেক স্মার্ট,ওদের ভাবনাচিন্তা অনেক বেশি স্বনির্ভর। এইতো সেদিন বাইশ তেইশ এর রনিতা লিবিডো, ফিজিক্যাল ওয়ান্ট নিয়ে দিব্যি কথা বলছিল । একটু কান পেতে শুনে তিয়াসা অবাক হয়, এও কি সম্ভব নাকি? এভাবেও নিজেকে সন্তুষ্ট করা যায়? ওরা নাকি কেউ বিয়ে করবে না,     "আরে ধুর যেজন্য বিয়ে সে তো সহজেই মিটে গেল, ওসব ফালতু ঝামেলা কে আর নেয়? আর একজনের মর্জিমাফিক না চললেই ঝামেলা! তাকে মেনে চলো, তার বাবা, জ্যাঠা খুড়ো! আমরা পারবোনা ,যে পারবে সে করবে !",     "লিভ টুগেদারও তো অনেকেই করে ?", তিয়াসা দমবে কেন? সেও যথেষ্ট মর্ডান, সেও তো ওদের সঙ্গেই চাকরি করে । বরং ওদের সিনিয়র, ম্যারেড, অনেক বেশি জানে। কিন্তু ওই পুঁচকে মেয়ে দুটো যেন ফুৎকারে উড়িয়ে দেয় ওর কথা ! 

  "ওটাও তো বেশ ঝামেলার। তুমি আরেকজনের সঙ্গে তার মেজাজ মর্জি বুঝে চলো, তার চেয়ে এই ভালো! "

  সেখান থেকে ঐ শব্দটা ওর জ্ঞানের ভান্ডার বাড়িয়ে দিলো। এর পর বাড়ি ফিরে গুগল সার্চ করে দেখে নিলো যাবতীয় ইনফরমেশন। "অর্ডার করবো কি করবো না? ", এই দোলাচল তাও চলল প্রায় মাসখানেক। দু-তিনবার অর্ডার করে অর্ডার ক্যানসেলও করেছে। কিন্তু ওদের মুখ চোখ কি উজ্জ্বল, কি সন্তুষ্টিতে ভরপুর! ওর বিয়ের পর পরের কথা মনে পড়ে, কি ভালোলাগা ওর পুরোটা জুড়ে থাকতো সারা দিনময় । একদিন অর্ডার করেই ফেলল। মাত্র 3 দিনে হাজির। ভাগ্যে কেউ জানতে পারে না ! 

  তারপর যেন প্রথম রাতের ধুকপুকানি নিয়ে ও দাঁড়ালো আয়নার সামনে। আজ সকালে এটার ডেলিভারির মেসেজ পেয়ে ও অফিস অফ দিয়েছে, বলেছে শরীর ভালো না। আয়নার সামনে নিজেকে একবার একটু গুছিয়ে নিল । চুলটা সুন্দর করে বেঁধে, ঠোঁটে বুলিয়ে নিল হালকা লিপ বাম চোখে কাজল দিতে ভুললো না। নিজেকে ওর কাজলে খুব সুন্দর দেখায়, একেবারে কাজল নয়না হরিণী। 

  এরপর ধীরে ধীরে হাউসকোটটা খুলে একে একে উন্মুক্ত করল নিজেকে, হাতে নিল যন্ত্রটা, এক অদ্ভুত উন্মাদনা! যে উন্মাদনা ফুলশয্যার রাতে তীর্থ খিল দিয়ে ঘরে ঢোকার পর অনুভব করেছিল সেই এক অনুভূতি রোমাঞ্চ, শিরশিরানি! 

  তিয়াসা এলিয়ে পড়ে খাটে, ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত ,পরিতৃপ্ত! কেন যে মানুষ অপরের উপর নির্ভর করে ?আগে জানতো শুধু পুরুষরাই নিজেদের পরিতৃপ্ত করতে পারে কিন্তু মেয়েরা! আজ বহুদিন বাদে ও ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়লো ক্লান্ত হয়ে । 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract