Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Aparna Chaudhuri

Abstract

0.6  

Aparna Chaudhuri

Abstract

পুজোর কেনাকাটা

পুজোর কেনাকাটা

4 mins
1K


দুর্গা পুজোতে তোমার কোন জিনিষটা সবচাইতে খারাপ লাগে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় তাহলে আমি চোখ বন্ধ করে বলে দেবো কেনাকাটা। একথা শুনলে অনেক মেয়েই আমার দিকে ভুরু তুলে তাকাবে, কিন্তু আমার কিছু করার নেই, এটাই সত্যি। কারণ, না আমি পছন্দ করতে পারি, না আমি দরদাম করতে পারি। কোন শাড়ী বা জামার দোকানে নিয়ে গেলে সাধারণত আমি কিছুই পছন্দ করতে পারি না, আর যদি বা একটা পছন্দ হয় তাহলে সেটাই আমায় কিনতে হয়, আমায় মানাক বা না মানাক, কারণ তারপর আরও হাজারটা দেখালেও আমার আর কোনোটা পছন্দ হয় না। এতো গেলো পছন্দের কথা । দরদামের ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা আরও খারাপ। একবার বোনের সঙ্গে গরিয়াহাটে বাজার করতে গেছি। সাধারণত আমার বোনই দরদাম করে, আমি পাশে দাঁড়িয়ে থাকি। কিন্তু সেদিন কি জানি কি খেয়াল হল আমি দরদাম করতে গেলাম। আমি কথা বলছি দেখে আমার বোন চুপ করে গেল। দোকানদার আমাদের চেনা, মিনিট পাঁচেক আমার দরদাম করা দেখে সে হেসে বলল “ দিদি দরদামটা ছোড়দিকেই করতে দিন।“ 

আমার দুঃখের কাহিনী এখানেই শেষ নয়। বিয়ে হয়ে মুম্বাই শিফট হলাম। মুম্বাই এর লিঙ্কিং রোডের বাজারে মারাত্মক দরদাম চলে। আমার স্বামী এসব ব্যাপারে এক্সপার্ট। আমাকে শিখিয়ে নিয়ে গেল, ”শোন দোকানে ঢুকে আঙ্গুল দিয়ে কোনটা পছন্দ দেখিয়ে চুপচাপ দোকান থেকে বেরিয়ে যাবে।“ আমি ঢক করে মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললাম বাধ্য স্ত্রীয়ের মত। তারপর যথারীতি দোকানে গিয়ে আমায় ও জিজ্ঞাসা করলো “কোনটা পছন্দ?” সৌভাগ্যবশত ডিসপ্লেতে ঝোলানো সাদা একটা জামা আমার খুব পছন্দ হল। আমি আঙ্গুল তুলে দেখালাম। তারপর আমার বেরিয়ে যাবার কথা কিন্তু কৌতূহল বড় খারাপ জিনিষ। আমি আমার যাবার গতিটা কমিয়ে প্রায় শূন্যের কাছে নিয়ে এলাম। আমার স্বামী জিজ্ঞাসা করলেন,” প্রাইস কেয়া হায়?”

“দো হাজার।“

“তিনশো মে হোগা?”

আমি আমার হাসি কন্ট্রোল করতে পারলাম না এবং হ্যা হ্যা করে হেসে ফেললাম।

“বলেছি না বাইরে গিয়ে দাঁড়াও।“ ঠাণ্ডা কঠিন স্বর শান্তনু-র। আমি বাইরে গিয়ে রাস্তার এমাথা থেকে ওমাথা পায়চারি করছি এবং মনে মনে ভাবছি কি জানি কি হচ্ছে ভিতরে? মিনিট দশেক কেটে যাবার পর আমার রীতিমতো ভয় করতে লাগলো, যেভাবে বুবলু দরাদরি করছে, শেষে মারামারি না হয়। তার কয়েক সেকেন্ড বাদেই একটা প্যাকেট হাতে নিয়ে ও বেরিয়ে এলো, আমি ছুটে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম “কতোয় দিলো? “

“তিনশ পঁচিশ” শান্তনু-র সগর্ব উত্তর। তাহলে বুঝতেই পারছেন আমার কেনাকাটার দৌড়।

কিন্তু নাগপুরে এসে ব্যাপারটা অনেকটা বদলে গেলো। এখানে আমাদের বন্ধুরা সব দল বেঁধে শাড়ী কিনতে যেত। কাজেই না গিয়ে উপায় থাকতো না। আমাদের গ্রুপের বিপাশা সমস্ত ডিসকাউন্ট আর এক্সিবিশনের খবর রাখতো। ব্যাস তারপরই আমার কাছে একটা ফোন আসতো “হ্যালো! অপর্ণা, এই শোন রুপশ্রী সারিস এ ডিসকাউন্ট শুরু হয়েছে, যাবি? আমরা সবাই যাচ্ছি। দিয়া গাড়ীতে আমাদের পিক আপ করবে ঠিক বিকেল পাঁচটায়।“

“আজকে ! না রে আজ হবে না, আজ না বিকালে আমাকে...।“ আমি আমতা আমতা করে বলতাম।

আমাকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বিপাশা বলে উঠত,” তোর কোন কাজ নেই তুই যাচ্ছিস আমাদের সঙ্গে, ফাইনাল। বিকেল পাঁচটায় রেডি থাকবি” বলেই ফোনটা রেখে দিত। অগত্যা আমি বিকেল পাঁচটায় রেডি থাকতাম।

বন্ধুদের মধ্যে দিয়ার স্বামী টেক্সটাইল ডিজাইনার। কাজেই আমাদের শারীর মান নির্ধারণে ওর মতামত সবাই নিত (আমাদের দেশে ডাক্তারের বউ আধা ডাক্তার আর ইঞ্জিনিয়ারের বউ আধা ইঞ্জিনিয়ার হয়)। অরুণা আর বিপাশার পছন্দ খুব ভালো তাই তাদের দায়িত্ব ছিল সকলের জন্য শাড়ী পছন্দ করার। আমি যেতাম এলেবেলে বা দুধে ভাতের মত।

সেবারও প্রত্যেক বারের মত ফোন এলো,” চল না বাবা, ইচ্ছে না হয় শাড়ী কিনবি না। দেখতে তো অসুবিধা নেই? তারপর আমরা ফুচকা খেতে যাব।“

আমারা দোকানে পৌঁছলাম। দেখা গেলো বিল যত বেশি হবে ডিসকাউন্ট ও তত বেশি। আমরা ঠিক করলাম যে আমাদের সমস্ত কেনাকাটার বিল একসাথে করা হবে। সবাই আমাকে টাকা দিয়ে দেবে আর আমি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করবো। অনেক দেখাশোনা করে গোটা আটেক শাড়ী পছন্দ করা হল। আমিও একটা শাড়ী নিয়েছি। পেমেন্ট করতে গিয়ে যেই ক্রেডিট কার্ড দিয়েছি দোকানদার বলে, “ কার্ড দিলে ২% বেশি দিতে হবে”

আমার মাথাটা গেলো গরম হয়ে,” কেন?”

“এটাই নিয়ম”

“তাহলে আপনার শাড়ী আপনি রেখে দিন” শক্ত গলায় বললাম আমি। আমার সাথে অরুণা আর দিয়া দাঁড়ালো।

বিপাশা বেচারা কেমন যেন ঘাবড়ে গেলো, “ অ্যাঁ কি বলছিস? শাড়ী নিবিনা?” তারপর আমাদের সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দোকান থেকে বেরিয়ে গেলো।

এদিকে দোকানদার বেগতিক দেখে আমাদের ঠিক দামেই শাড়ী গুলো দিয়ে দিলো। আমরা শাড়ী গুলো নিয়ে বেরোচ্ছি এমন সময় শুনলাম বিপাশা ফোন কথা বলছে,” এই জানো অপর্ণা শাড়ীগুলো সব ফেরত দিয়ে দিচ্ছে। “

আমরা সবাই একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলাম “তুই আবার অনুপমকে ফোন করে সব লাগাচ্ছিস? যদি আবার অনুপমকে ফোন করেছিস না ...।।”

বিপাশা তাড়াতাড়ি ফোনটা কেটে দিয়ে একটু অপ্রতিভ ভাবে হেসে বলল,” শাড়ীগুলো দিয়েছে? আমি ভাবলাম এতো করে পছন্দ করলাম...। না না আর ফোন করবো না যা, আমি সব কথা ওকে বলি নাকি ?“

আমরা পাশের একটা রেস্তোরাঁয় ঢুকলাম সবাই মিলে, চা টা খাওয়া হবে আর সঙ্গে টাকার হিসেব ও করা হবে। হঠাৎ অরুণা বলল,” বিপাশা কোথায় গেলো রে? নিশ্চয়ই আবার অনুপমকে ফোন করছে? “

আমরা সবাই পা টিপে টিপে একটু এগিয়ে দেখি, বিপাশা করিডোরে দাঁড়িয়ে ফোনে ফিস ফিস করে বলছে ,”জানো শাড়ীগুলো দিয়েছে, আর এক্সট্রা পয়সাও নেয়নি। “ 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract