Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sayandipa সায়নদীপা

Drama

1.7  

Sayandipa সায়নদীপা

Drama

অবশেষে

অবশেষে

3 mins
2.7K


- মান্তু, মাকে কিন্তু এখন কিছুদিন একা রাখিস না, মায়ের যা ভুতের ভয়…

- সে আর বলতে। এই দশ দিন শ্রাবনী রোজ শুচ্ছে মায়ের কাছে।

- সেই। নয়তো সেবার মেজো দাদু মারা যাওয়ার পর দেখেছিলি তো রাত্রি বেলা কিসের না কিসের আওয়াজ শুনে মা অজ্ঞান হয়ে কি একাছার কান্ড ঘটিয়েছিলেন।

- আরে সে তো নাহয় বাড়ির ব্যাপার কিন্তু জানেন তো দাদা একবার আমি আর মা শাড়ির দোকানে গিয়েছি এমন সময় দোকানের সামনে দিয়ে একটা ডেডবডি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেই দেখে এসে সেদিন সারারাত মা ঘুমোননি, আলো জ্বেলে, টিভি চালিয়ে বসেছিলেন।

- এমন একটা ঘটনা নয় শ্রাবনী হাজার হাজার ঘটনা আছে মায়ের। মা ছোটবেলার থেকেই মনে হয় ভুতকে এতো ভয় পায়।

****************************************************************

বাইরে শ্রাদ্ধের কাজ বোধহয় মিটে গেছে এতক্ষণে। নিজের ঘরটা অন্ধকার করে দরজা লাগিয়ে শুয়ে আছেন নিভা দেবী। বুকটা এবার চিনচিন করছে তাঁর, কান্না কান্না পাচ্ছে যেন… মানুষটাকে সত্যিই আর কোনোদিনও দেখতে পাবেন না! সেই তেরো বছর বয়সে বউ হয়ে এ বাড়িতে এসেছিলেন, ওনার বয়েস তখন ছাব্বিশ। ওকালতি পড়ছিলেন তিনি, নিভা দেবীর মত নিরক্ষর গ্রাম্য মেয়েকে বিয়ে করতে চাননি কখনোই কিন্তু আবার মায়ের আদেশ ঠেলে ফেলতেও পারেননি তাই বাধ্য হয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। সেই সময় ছোটো বলে নিভা দেবীকে কড়া শাসনে রাখতেন তিনি, তারপর নিভা দেবীর বয়েস বাড়লেও তাঁর শাসনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। কোর্টে চোর বদমাইসদের ধমক দিতেন আর বাড়িতে নিভা দেবীকে। সব সময় ওনার ভয়ে তটস্থ থাকতে হতো তাঁকে। তাও তো সারাজীবন ওই মানুষটাকেই ভালোবেসে গেছেন নিভা দেবী, আচ্ছা ওই মানুষটা কি কখনও ভালোবাসেনি তাঁকে? যতটুকু কাছে আসা তা কি নিতান্তই জৈবিক প্রয়োজন মাত্র? কোনো আবেগ অনুভূতি কি ছিলো না তাতে? বিয়ের আজ তিপান্ন বছর পর বড্ড ইচ্ছে করছে মানুষটার সামনে গিয়ে এই প্রশ্নগুলো করতে; কিন্তু মানুষটা কোথায়! তিনি তো সে সুযোগ না দিয়েই ফাঁকি দিয়ে চলে গেলেন। চোখ থেকে বোধহয় দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল নিভা দেবীর, আর তখনই অনুভব করলেন বাম বাহুতে কে যেন আঙ্গুল দিয়ে টোকা মারছে। দরজা তো বন্ধ, তাহলে কে? ধড়পড় করে উঠে বসলেন তিনি। একি এ কে বসে আছে খাটে! কে তাঁর দিকে তাকিয়ে অমন মিটিমিটি হাসছে!

“কি গো গিন্নি ঘুমিয়ে পড়েছিলে নাকি?”

অতি পরিচিত সেই কন্ঠস্বরটা কানে এসে লাগতেই বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন নিভাদেবী, বিস্ফারিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন সামনের দিকে। লোকটা আবার টোকা মারল তাঁর বাম বাহুতে,

“কি গো কথা বলছো না কেন? আহ শরীরটা কি হালকা লাগছে জানো তো… সেই জ্বালা, যন্ত্রনা সব উধাও।”

“আ… আপনি! আপনি কি করে এলেন! আপনি তো…”

“তিপান্ন বছরের গিঁট এতো সহজে কি খুলবে ভেবেছিলে গিন্নি? তিপান্ন বছর ধরে তোমার সঙ্গে কখনও বসে ভালো মন্দ দুটো গল্প করা হয়নি ভালো করে, বুড়ো বয়েসে এসে গল্প করবো ভাবতে ভাবতেই পটল তুললাম…

আহ… সে যাই হোক বেঁচে থাকতে হয়নি বলে কি আর হবে না নাকি! তাই তো ফিরে এলাম তোমার কাছে, এবার খুব কথা বলবো দুজনে সারাদিন।

কি গো গিন্নি কিছু বলছো না কেন? ভয় করছে নাকি, তোমার তো আবার যা ভুতের ভয়…”

কথাগুলো বলতে বলতেই নিভা দেবীর দুই বাহুতে হাত রাখলেন বিভূতি বাবু। নিভা দেবীর দু’চোখ ভরে এলো জলে, অনুভব করতে পারলেন এক অন্যরকম স্পর্শ, যে স্পর্শ তিনি খুঁজে এসেছেন এতো কাল, যে স্পর্শ আর কোনোদিনও পাওয়া হবেনা ভেবে চোখ ভরিয়েছিলেন খানিক আগেই; হলোই বা অশরীরী স্পর্শ, তাও পেলেন তো অবশেষে।

“না গো আজ আর আমার একটুও ভয় করছে না। ভুতকেও না আর... আমার স্বামীকেও না।”

এখন আবার নিভাদেবীর চোখ ভরছে জলে তবে আর না পাওয়ার বেদনায় নয়, অবশেষে সব প্রাপ্তির আনন্দে।

শেষ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama