Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Manasi Ganguli

Fantasy

4.9  

Manasi Ganguli

Fantasy

সোনার দেশ

সোনার দেশ

4 mins
1.8K


 হইহই কান্ড রইরই ব্যাপার। ২৫শে ডিসেম্বরের ভোর,আকাশে তখন আবছা কুয়াশা,তা ভেদ করে সূর্যের ঢোকার উপায় নেই। সুমি মা-বাবার সঙ্গে ও আরো অনেকের সঙ্গে নদীর ওপর দিয়ে লঞ্চে করে যাচ্ছিল পিকনিক করতে নীল দ্বীপে। লঞ্চে গান বাজছে,সবাই নাচানাচি করছে, সাত বছরের সুমিও হাতে তালি দিয়ে মাথা দোলাচ্ছে বাজনার তালে তালে। কিছুক্ষণ নাচানাচির পর হাঁপিয়ে গিয়ে মায়ের পাশে বসলো। হঠাৎ কি হলো কে জানে লঞ্চটা ক্রমশ ডুবে যেতে লাগলো নদীর জলে। কোনো ধাক্কা লাগেনি,কাত হয়ে যায়নি,সোজা ডুবে যাচ্ছে সেটা মাঝনদীতে। তীর থেকে হইহই করা ছাড়া কারোর আর কিছু করার ছিলনা।

    "বাহ্,পিকনিক স্পটটা খুব ভালো তো"। সুমির খুব ভালো লাগল। এখানে আকাশটা কি সুন্দর গোলাপী রঙের,চারিদিকে সোনার বাড়ি ঝকঝক করছে। মানুষেরা এখানে কেউ মাটিতে পা দিয়ে হাঁটে না,সবার পিঠে দুটো করে ডানা লাগানো,তারা উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়ায়। সুমি ভাবে, "আমরা কি পরীর দেশে চলে এলাম?" কিন্তু জিজ্ঞেস করবে কাকে? মা-বাবা বা যারা সঙ্গে ছিল তাদের কাউকেই তো দেখতে পাচ্ছে না ও। এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে লাগল সবাইকে। একটা পরী মিষ্টি হেসে ওকে বলল,"আমার সঙ্গে এসো"। সুমি অবাক হয়ে দেখছে তাকে। কি সুন্দর সাদা পোশাক,ফিনফিনে,মাকড়সার জালের থেকেও পাতলা,সাদা ডানা। পরী হাত বাড়াল কিন্তু সুমি কিছুতে হাতটা ধরতে পারছেনা। পরীর পিছন পিছন চলল। হঠাৎ ও খেয়াল করল ও তো হাঁটছে না উড়ছে। "আরে আমার পিঠে পাখা কি করে এলো?" ছোট্ট সুমি বিস্ময়ে হতবাক,একটু ভয়ও পেয়ে গেল যেন।

    পরী ওকে নিয়ে গিয়ে যেখানে ছেড়ে দিল ও দেখল একটা বিরাট বড় মাঠ,ঘাসগুলো তার সোনার,গাছপালা সব সোনার আর ফল ফুলগুলো হিরে,মোতি,জহরতের। সেইখানে ও দেখতে পেল বাবা মা আর সবাইকে যাদের সঙ্গে লঞ্চে করে ও এসেছিল পিকনিক করতে। "ওমা তাই তো, এখানে দেখছি সবারই তো ডানা রয়েছে। থরেথরে খাবার সাজানো, চারিদিকে টেবিল পাতা,সোনার থালায় খাবার, পরিবেশন করছে বড়রা। কিন্তু এ কি? এ যে সোনার ভাত,সোনার মাংস, কি করে খাব?" দেখল সবাই তাই খাচ্ছে,ও ও তাই খেল। "বাহ্,দারুন স্বাদ তো,এই সোনার খাবারের। এখানেই সারাজীবন থেকে গেলে কেমন হয়?" যেইনা ভাবা সুমি দেখল কোথাও কেউ নেই ও একা একটা সোনার খাটে শুয়ে আছে, সোনার মশারী টাঙ্গানো,আর একটা পরী ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। পরীর নরম হাতের ছোঁয়ায় ওর দারুণ আরাম লাগায় ঘুমিয়ে পড়ল ও।ঘুমের মধ্যে ও দেখল এক বিকটদর্শন রাক্ষস ওর দিকে তাকিয়ে আছে। চিৎকার করে সুমি কেঁদে উঠল। পরী মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করল, "কি হয়েছে সুমিরানী?" "মায়ের কাছে যাব" বললে সুমি। "মা তো এখন ঘুমাচ্ছে,ঘুম ভাঙলেই নিয়ে যাব তোমায় মায়ের কাছে।" সুমি এবার বায়না জুড়ে দেয়, "এক্ষুনি যাব,এক্ষুনি যাব"। পরী ওকে হাত ধরে নিয়ে গেল আরেকটা সোনার ঘরে,সেখানে সোনার খাটে বাবা,মা ঘুমাচ্ছে সোনার মশারির নিচে। সুমি জানতে চায়,"বাকি সবাই কোথায়?" পরী বলে, "সবাই এখন ঘুমাচ্ছে খাবার পর"। সুমি বলে,"তুমি ঘুমাওনি কেন?" সে বলে,"আমরা এখানে কেউ ঘুমাই না,সবাই এখন অতিথিসেবায় ব্যস্ত, তোমরা এখন আমাদের অতিথি না?" "আমরা কবে বাড়ি যাব?" "কেন, আমাদের এই সোনার দেশ তোমার ভালো লাগছে না?" না না,আমি নিজের বাড়ি ফিরে যাব বাবা-মায়ের সঙ্গে। আমরা তোমাদের দেশে কি করে এলাম?" পরী বলে,"আমাদের দেশ থেকে কয়েকজন তোমাদের দেশে ঘুরতে গিয়েছিল,তারা আর ফিরে আসেনি। তাই আমরা এভাবে তোমাদের দেশের লোকেদের নিয়ে এসে পরীক্ষা করি আমাদের লোক তার মধ্যে আছে কিনা।" "কি করে চিনবে তোমাদের লোককে?" "আমাদের লোক হলে ঘুমাবে না,জেগে থাকবে। আর শোবার সময় তোমাদের ডানা খোলা থাকবে কিন্তু আমাদের লোকেদের ডানা পিঠেই থাকবে। তাইতো মশারির বাইরে থেকে পরীক্ষক ঘুরে ঘুরে সবাইকে দেখছে,ও রাক্ষস নয়।" "এসব পরীক্ষা করে খুঁজে পেলে কি করবে?" "তাকে পেলে আমাদের কাছে রেখে তোমাদের বাকিদের ফেরত পাঠাবো"। "তোমাদের কোনো লোক আমাদের মধ্যে আছে নাকি?" "না সুমি রানী,তোমাদের মধ্যে আমাদের কোনো লোক নেই।"

    পরী এরপর সুমিকে নিয়ে গেল ওদের লঞ্চে। লঞ্চটা একটা বিরাট বড় সোনার বলের ভেতর ঢোকানো রয়েছে যাতে লঞ্চের ভেতর জল না যায়। এরপর সবাই এক এক করে সেই লঞ্চে এসে উঠল। ও দেখল লঞ্চে ওঠার পর আর ওদের কারো পিঠে ডানা নেই। সবাই উঠলে সোনার বল লঞ্চ নিয়ে ওপরে জলের তলে ওঠবার জন্য রওনা দিল। জলের ওপর ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সেই সোনার বল খুলে জলে মিলিয়ে গেল। সুমি চোখ কচলে দেখল লঞ্চের চারপাশের জল সোনার মতো চিকমিক করছে। মায়ের কোল থেকে মাথা তুলে সুমি উঠে বসল। মাকে বলল,"মা দেখো সোনার বলটা গলে গিয়ে জলে মিশে জলটা কেমন সোনার হয়ে গেছে।" মা বললেন,"ওটা সোনার জল নয়,জলের মধ্যে সোনা রোদ ঝিকমিক করছে,কুয়াশা কেটে রোদ উঠেছে তাই।" তারপর মেয়ের মাথায় একটা টোকা মেরে বললেন, "রোজ রাতে ঠাম্মির কাছে রূপকথার গল্প শুনে মাথাটা একেবারে গেছে মেয়ের,দিবাস্বপ্ন দেখছে আবার"।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Fantasy