Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sanghamitra Roychowdhury

Tragedy

0.6  

Sanghamitra Roychowdhury

Tragedy

বিশ্বাসভঙ্গ

বিশ্বাসভঙ্গ

3 mins
341


বিশ্বাসভঙ্গ


বিনীতা সেদিন রাতে অফিস থেকে বাড়ী ফিরেই দেখে যে সুনির্মল কোথাও বেরোনোর জন্য তৈরী হচ্ছে। বিনীতাকে বললো, "বিনি, অক্ষয় তৃতীয়ায় কেনা সোনার চেনটার ডিজাইনটা তো তোমার পছন্দ নয়, এছাড়া ঐ চেনটা খুুব সরুও বলো। তবে ওটা বিলসমেত দাও দেখি, পাল্টে তোমার শখ মাফিক বেশ মোটা দেখে নেকলেসই এনে দেবো একটা।"


কথা বাড়ানো মবিনীতার স্বভাব নয়। তবু একবার ওর ইচ্ছে হলো বলে, "এই হারটা মেয়ের জন্য রাখা থাক, পরে আবার একটা কিনলেই হবে।" কিন্তু ঝগড়া এড়িয়ে থাকতে চাইলো বিনীতা, তাই চুপ করেই রইলো। সুনির্মলের সাথে সম্পর্কটা বিনীতার একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে অনেকদিনই। কথা না বাড়িয়ে দিয়ে দিলো বিনীতা হারের বাক্সটা, বিলসমেত, সুনির্মলের হাতে। 


সেদিন রাতে ফিরে সুনির্মল আর কিছু খেতে চাইলো না, অম্বলে নাকি ওর বুকপেটে খুব জ্বলুনি। মেয়ে নাচতে নাচতে হার দেখতে চাইলে সুনির্মল বললো, "দোকানে জমা দেওয়া আছে, ভিড় কাটলে বদলে নতুনটা দেবে বলেছে।" মেয়ের হাসিমুখ শুকনো হলো। বিনীতা মেয়েকে আড়ালে ডেকে বললো, "হারটা আমি গিয়ে নিয়ে আসবো সময় করে, বিলটা তো আমার নামে, স্ক্যান করে আমার ফোনে রেখে দিয়েছি।"


অনেকটা রাত হয়েছে। বিনীতার ঘুম আসছে না, সুনির্মল খাটের অন্যপ্রান্তে তখন গভীর ঘুমে। সুনির্মলের ফোনে টিকটিক করে মেসেজ ঢুকছে, নিশুত রাতে ভীষণ বিরক্তিকর! কেন যে সুনির্মল ফোনটা সাইলেন্ট করে শোয় নি, কে জানে? ফোনটা সাইলেন্ট করতে গিয়ে ফোনের স্ক্রিনে চোখ আটকালো বিনীতার, ঠোঁটে ফুটলো বঙ্কিম হাসি। সুনির্মলকে দেখে মিঠুর ভারী করুণা হলো, ঘৃণা নয়! বিনীতা নিজের মনে বিড়বিড় করলো, "হায় ঈশ্বর, আমার আন্দাজে তবে কোনো ভুল ছিলো না... আমার সেই লিকলিকে অপছন্দের হার নতুন গলা খুঁজে পেয়ে গেছে তাহলে। তাই হোয়াটসঅ্যাপে আসা হারের ছবির ঢেউ নতুন গলার মালকিনের গলা ও মুখ সমেত। হায় রে, অদৃষ্ট... কী কাণ্ড!"


ছবিগুলো নিজের ফোনে হোয়াটসঅ্যাপে ফরোয়ার্ড করে নিয়ে রাখলো বিনীতা। সুনির্মলের ফোন থেকে ফোটো মেসেজের স্ক্রিন শটগুলো তুলে তুলে পাঠিয়ে দিলো নিজের ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে, প্রমাণ হিসেবে। সুনির্মল অচৈতন্য ঘুমে, হয়তো বা সুখস্বপ্নে, তবে আর বেশী দেরী নেই সকাল হতে। আর তখন বিনীতা অপেক্ষায় ভোর হবার।


এভাবেই কত শত সম্পর্ক চোরা ঘূর্ণিতে ঘুরপাক খায়। 


সম্পর্ক হারিয়ে ফেলে দিশা, ভালোবাসার মানুষগুলো ঘূর্ণিপাকে ঘুরতে ঘুরতে কখন যেন ছিটকে যায় অনেক দূরে, দূর থেকে দূরান্তে, তারপর একেবারেই হয়তো দৃষ্টি পথের বাইরে চলে যায়। সৌরজগতের টান বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে যেভাবে সৃষ্টি বিনষ্ট হয়, ঠিক তেমনি করে সংসারের কেন্দ্রীয় মানুষটিও যদি কেন্দ্রচ্যুত হয় তবে কেমন করে টিকে থাকবে সংসার?


বিনীতা ডায়েরির পাতায় পরেরদিন লিখে রাখলো...


"আমি বিশ্বাস করেছিলাম সুনির্মলকে, তা যদি আমার ভুল হয়, তবে আমি নিজেকে ক্ষমার অনুপযুক্ত ভাববো। সেটা নাহয় আমার সংসার করার শখ, কিম্বা কাউকে অন্ধের মতো ভালোবাসবার শখের মূল্য হয়েই থাকবে। কিন্তু যদি এটা প্রমাণিত হয় আমার বিশ্বাসভঙ্গ করা হয়েছে, তাহলে আমি কোনোদিনই কিছুতেই সেই বিশ্বাসভঙ্গকারীকে ক্ষমা করতে পারবো না। নিজেকে গুছিয়ে নিতে আমার আপাতত কিছুটা সময় চাই। গুণে চলি আপাতত নিজের আর বরের শখের খেসারত।"



এরপর থেকে বিনীতা হিংস্র বাঘিনীর মতো ওঁৎ পেতে আছে। কখনো জাল বিছায়, কখনো টোপ দেয়, কখন কোন ফাঁদে বিশ্বাসভঙ্গকারী ধরা পড়ে বমালসমেত, তার অপেক্ষায়। আর বিনীতা বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারে তাকে, বিশ্বাসভঙ্গ করার দায়ে।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy