মায়া
মায়া
চৈত্রের শেষের থেকে শুরু আর আশ্বিনের মাঝামাঝি পর্যন্ত যে গরমের দাপট টা চলে তাতে অফিস থেকে ফিরে সেন্টার টেবিলে রাখা মিশ্রির সরবতটা শরীরে যতটা না তেষ্টা মেটায় তার চেয়েও যেন শীতল করে দেয় শরীরটাকে। এটা দীপ্তর কুড়ি বছরের অভ্যেস। মা এই সরবতটা এত সুন্দর করে তৈরি করে... অফিস ফেরত এটা যেন জীবন দায়ী অমৃত। এত বছরেও এই সরবতের মিশ্রির পরিমাণ এতটুকু কম বা বেশী হয়না তা টের পায় দীপ্ত। কি করে যে এমনটা হয়! ভাবতে থাকে সে!
রান্না ঘর থেকে চায়ের কাপ প্লেট হাতে নিয়ে সুধাংশু বাবু ছেলে কে বললেন আজ রাতে জ্যোমাটো না স্যুইগি তে অর্ডার করবি ? কাল অবশ্য শুক্লা এসে পড়বে। দীপ্ত মনে মনে ভাবে পঁচিশটা বছর এমন ভাবেই আগলে রেখেছেন সুধাংশু বাবু তাকে। মা মারা গেছেন নেই নেই করে পঁচিশ পেরিয়ে ছাব্বিশ হলো। তবুও একদিনের জন্যেও তার জন্য তৈরি করা মিশ্রির সরবতের হেরফের হয়নি। যখন চাকরী সূত্রে ব্যাঙ্গালোরে থাকতো তখনও না এখনও না। বাবা শুধু বলেছিলেন আমি লক্ষ্য করেছি রে শুক্লা বা আমি তোর জন্য সরবত তৈরি করতে ভুলে গেলেও ঠিক সময়ে ঐ সেন্টার টেবিলে সরবতটা থাকে। ব্যাঙ্গালোরে সেটা আরো বেশী করে টের পেয়েছিল দীপ্ত। সুধাংশু বাবু বলেন মায়া... বুঝলি তোর প্রতি মায়াটা ত্যাগ করতে পারেনি তোর মা মায়াবতীর আত্মা।