Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sutanu Sinha

Drama Romance

5.0  

Sutanu Sinha

Drama Romance

রাজনীতি ও প্রেম সপ্তম কিস্তি

রাজনীতি ও প্রেম সপ্তম কিস্তি

9 mins
1.8K


সুনেত্রা ,

রাতুল এর মাথায় হাত রেখে যখন ওকে সাহস দিচ্ছিলো , বার বার যেন একটাই কথা মনে হচ্ছিলো নিজের সব টুকু দিয়ে ওকে সমস্ত দুঃখ থেকে মুক্ত করে দিই । আরো শক্ত করে চেপে ধরলো সে রাতুল এর মাথা টাকে নিজের বুকের মধ্যে । যাতে কোনো ভাবেই রাতুল এই মুহূর্তে নিজেকে না একা ভাবতে পারে । সব রকম ভাবে সুনেত্রা যে তার পাশে আছে এটা যেন সে অনুভব করে । হঠাৎ ই ডাক পড়লো "সুবীর মন্ডল এর বাড়ির লোক কে আছে?"। নাম টা শুনতেই ঘোর কেটে গেলো সুনেত্রার , রাতুল কে ডেকে বললো , এই দেখো ডাকছে । রাতুল ধড়মড়িয়ে উঠলো । "আমরা আছি ।" আপনারা আসুন ডাক্তারবাবু কথা বলবেন । দু জন এ মিলে ভিতরে যেতে ডক্টর তো ভীষণ বকুনি দিতে শুরু করলো । এই পেশেন্ট টিকে যে সাপে ও কেটেছে সেটা কে জানাবে ? রাতুল দেখলাম অনেক বার বোঝানোর চেষ্টা করলো আমরা জানতাম না । কিন্ত ডাক্তার বাবু শোনার লোক নয় ,ভীষণ রাগানিত্ব হয়ে জানতে চাইলেন , "কি সাপে কেটেছে দয়া করে কি বলতে পারবেন ? " আমরা পড়লাম আরো বিপদ এ, সাপ এ কেটেছে সেটাই জানিনা , তো কি সাপ কি করে বলবো । রাতুল এর বদলে আমি ই বললাম জানিনা ডাক্তারবাবু । ডাক্তারবাবু দেখলাম খুব বিরক্ত হয়ে নার্স দিদিদের কি সব বলে বেরিয়ে গেলেন । নার্স দিদি দের এক জন কে একটু শান্ত মতো দেখে রাতুল গিয়ে জিজ্ঞেস করলো , আমার এই বন্ধু টির বাঁচা ভীষণ দরকার , ডাক্তারবাবু কি বলে গেলেন একটু যদি জানাতেন । ভদ্রমহিলা কি ভাবলেন জানিনা , ভদ্রভাবে শুধু এটুকুই বললেন ৮-১০ ঘন্টার আগে কিছু বলা যাবেনা । আপনি বাইরে অপেক্ষা করুন , না হলে কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল এ নিয়ে যান । এখানে ফেলে রাখলে চিকিৎসা এরকম ই হবে । বাইরে বেরিয়ে এলো রাতুল আর সুনেত্রা । সেই সময়ই অরিজিৎ এর ফোন এলো , রাতুল ফোন টা রিসিভ করে একটু দূরে চলে গেলো । সুনেত্রা ভাবতে থাকলো তার অল্প যে কটা টাকা জমানো আছে সে গুলো রাতুল দা কে দিয়ে সুবীর দা কে ভালো করে চিকিৎসা করতে বলবে । সুনেত্রার মন টা খুব খারাপ লাগতে শুরু করলো সুবীর এর জন্য । সত্যি কি এই হাসপাতাল থেকে সুবীর কে বাঁচানো সম্ভব । ফোন শেষ করে রাতুল দা ফিরে এলো । সুনেত্রা সবে তার মনের কথা জানাতে যাবে , রাতুল বললো , অরিজিৎ ফোন করেছিল , একটা ভালো পরামর্শ দিলো , শুধু বললো তোমাকে এক বার জিজ্ঞেস করে নিতে ।

সুনেত্রা জিজ্ঞেস করলো , কি রকম পরামর্শ ? বললো সুবীর এর হারিয়ে যাওয়া একটা ডায়েরি করতে থানায় । তাতে সরকার ই সব খরচ এর ব্যবস্থা করবে , আমাদের কে কিছুই করতে হবেনা । সুনেত্রা বললো , কিন্ত ওরা প্রাইভেট হাসপাতাল এ নিয়ে যাবে সুবীর দা কে ? এখানে থাকলে চিকিৎসা কি হবে কিছুই তো বোঝা যাচ্ছে না । রাতুল জানালো , সেটা অরিজিৎ ব্যবস্থা করে দেবে বলছে । সুনেত্রা বললো , তাহলে তো ভালোই , অসুবিধা কি আছে ? রাতুল দা বলে চললো , অসুবিধা আছে সুনেত্রা , প্রথমত ডায়েরি করা মানে অরিজিৎ এর মতে সুজয়দা এর সাথে সরাসরি যুদ্ধে নামা , আর দ্বিতীয়ত ,সুবীর এর প্রাণ সংসয় তো আছেই । সুনেত্রার একটু অসহায় ভাবে বললো, তাহলে কি করা যাবে ? রাতুল একটু ভেবে বললো , আমি উপায় ভেবেছি, তুমি শুধু বলো সেটা ঠিক কিনা ? আমি একটা কাজ করি সুজয়দা কে ফোন করি , সুবীর এর অবস্থা সম্বন্ধে অবগত করি , আর ওর সুচিকিৎসার জন্য সাহায্য চাই । সুজয়দা যত বড় বদমাস ই হোক , সরাসরি সুবীর এর চিকিৎসা করানো কে অস্বীকার করতে পারবে না , আর যেহেতু আমরা ডায়েরি করছি ই, পুলিশ ওর প্রটেকশন দেবে । আর সেই সাথে আমি ও খুব বেশি করে এলার্ট থাকবো । সুনেত্রা বললো , ভাবনা টা ভালোই রাতুল দা , কিন্ত তোমার ওই সুজয়দা কে রাজি তো করাতে পারবে ? রাতুল বললো , সেটা তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও । রাতুল ফোন করতে চলে গেলে , তার শান্ত স্বভাব ও এরকম টেনশন এর সময় উপযুগি বুদ্ধি তারিফ না করে পারলো না সুনেত্রা । মনে মনে ভাবলো এরকম একটি ছেলের সাথে থাকতে পারাটাই তার সৌভাগ্য । একটু পরেই ফিরে এলো রাতুল । সুনেত্রা জিজ্ঞেস করলো রাজি করাতে পারলে ? রাতুল বললো , রাজি হয়েছে ,সুজয়দা বললো এখুনি নিয়ে যেতে । একটা গাড়ি ঠিক করে সুবীর কে প্রাইভেট হাসপাতাল এ নিয়ে যেতে খুব একটা বেগ পেতে হলো না । সহজেই ভর্তি হয়ে গেলো সুবীর ইমার্জেন্সি তে । সুজয়দা আগে থেকেই কথা বলে রেখেছিলো , তাই কোনো প্রশ্ন ছাড়াই সুবীর কে ওরা ভর্তি করে নিলো । ওকে ভালো জায়গায় ভর্তি করতে পেরে রাতুল দা আর আমি দু জন এই যেন শান্তি পেলাম । এবার লড়াই টা আলাদা , সেটা ও রাতুল দা কে একাই লড়তে হবে, সুনেত্রা হয়তো শুধু তার পাশেই দাঁড়াতে পারে । এবার ফিরতে হবে সুনেত্রা কে , অনেক রাত হয়েছে , বাড়ির মালিক এর পর গেট বন্ধ করে দেয় ।সুনেত্রা রাতুল এর উদ্দেশে বললো , রাতুল দা আমি এবার বেরোবো গো , অনেক রাত হয়ে গেছে , মালিক গেট বন্ধ করে দিলে আবার খুলতে চাই না । তুমি পারলে একবার অরিজিৎ দা কে ফোন করে ডেকে নাও না । রাতুল বললো চলো তোমাকে এগিয়ে দিয়ে আসি । সুনেত্রা একবার হালকার উপর না বললেও রাতুল শুনলো না । রাস্তায় বেরিয়ে ভাবুক রাতুল কে দেখে খুব কষ্ট লাগছিলো সুনেত্রার । বললো , বেশি কষ্ট পেয়োনা রাতুল দা , দেখো সুবীর দা র কিছু হবে না । রাতুল বললো , রাজনীতি এক অদ্ভুত খেলা সুনেত্রা , কাউকেই যেন ভালো করে বিশ্বাস করা যায়না ।যেমন দেখোনা , জানিনা কেন অরিজিৎ প্রথম দিন থেকে আমাকে সুজয়দার বিরুদ্ধে অনেক কিছু বলতো । এমন কি এখনো ও বার বার একটা কথায় বলে চলে সুবীর কে সুজয়দা ই মারতে চেয়েছে ।

কিন্ত সুজয়দার সাথে কথা বলে এক বার ও মনে হয়নি উনি সুবীর কে মারতে চান । র তাছাড়া আমার এক কথায় এতো বড়ো ব্যবস্থা যে এতো দ্রুততার সাথে করে দেয় ,তাকে শত্র্রু কেমন করে ভাবি বোলো তো সুনেত্রা ? এখন তো অরিজিৎ কে কিছুটা সন্দেহ যে হচ্ছে না বলবো না । সুনেত্রা বললো , কিন্ত সুবীর দা কে এভাবে একা ফেলে আসা কি ঠিক হলো ? রাতুল বললো , ও একা নেই , আমার এক জন চেনা জানা চিকিৎসক এই হাসপাতাল এ কাজ করে তাকে ফোন করে দিয়েছি ,সে সুবীর আর আমাকে ছোট বেলা থেকে চেনে । ভুল ভাল কিছু হলে তিনি আমাকে অবশ্যই খবর দেবেন । সুনেত্রা একটু হেসে বললো , তও রাজনীতিতে কাউকে বিশ্বাস নেই , সাবধানে থেকো , আর দরকার পড়লে আমাকে ফোন করো । যদিও সু পরামর্শ ছাড়া বিশেষ কিছুই আমি করতে পারবো না তোমার জন্য । রাতুল হাসলো , হঠাৎ ই হাত দুটো ধরে বললো , তুমি শুধু আমার পাশে থেকো , আর কিছু চাই না । শুভ রাত্রি বলে রাতুল যখন বিদায় নিচ্ছে , মনের কোনো এক কোন থেকে কেউ যেন বলে যাচ্ছে, থেকে যাও রাতুল আমার কাছে , তোমাকে যে আমার বড় দরকার । সারা রাত খুব টেনশন হচ্ছিলো সুনেত্রার , সে ভাবে ঘুম এলো না কিছুতেই , এক বার ফোন করেছিল রাতুল কে , কিন্ত ও ধরেনি । শুধু একটা মেসেজ করেছিল সুবীর ঠিক আছে , হয়তো কাল বিকাল এর দিকে ওর সাথে কথা । ফোন করার পরিস্তিতি পেলে ফোন করবো । রাতুল যে খুব একটা ভালো অবস্থান এ নেই ভালো বুঝতে পারছিলো সুনেত্রা , কিন্ত কোনো উপায় নেই তার হাতে অপেক্ষা করা ছাড়া ।আধা ঘুম আধা জাগরণ এ কখন যে সকাল হয়ে গেলো বুঝতে পারেনি সুনেত্রা । ফোন এর দিকে তাকিয়ে দেখলো , রাতুল এর মেসেজ , তুমি আজ কারখানায় যেয়ো ,আর অস্বাবাভিক কিছু দেখলে ফোন করো । সুনেত্রা সাথে সাথে ফোন করলো রাতুল কে , ওদিক থেকে আওয়াজএলো বলো সুনেত্রা , ঘুমোও নি নাকি ? সুনেত্রা রাতুল এর প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে জিজ্ঞেস করলো , তুমি ঠিক আছো ? রাতুল হেঁসে ফেললো , এখনো অব্দি ঠিক আছি , অরিজিৎ পুলিশ পাঠিয়েছে ,তাদের এ ঘেরাটোপে সুবীর এর বেড এর পাশেই বসে আছি আমি । অল্প একটু ঘুমোতে ও পেরেছি , চিন্তা করো না । সুনেত্রা বললো , তোমাকে শুধু একটাই পরামর্শ , সবাই কে শত্র্রু ভেবে চলা এক রকম আর সঠিক শত্র্রুর কাছে পৌঁছনো কিন্ত খুব সোজা নয় ।রাতুল বললো , চিন্তা করো না , যখন ই মনে হবে রাস্তা ভুল করছি , তোমার সাথে কথা বলে নেবো , ঠিক নিজের রাস্তায় ফিরে আসতে পারবো । চলো এখন রাখছি , তুমি কিন্ত খুব সাবধানে থাকবে । ঠিক আছে বলে ফোন টা রেখে দিলো সুনেত্রা । আজ সকাল সকাল ফ্রেশ হয়ে হাসপাতাল এই যাবে ভেবেছিলো সুনেত্রা , কিন্ত রাতুল মানা করাই তাকে কারখানাতেই যেতে হবে । কারখানায় ঢোকার মুখেই আজ আবার বান্টি কে দেখতে পেলো সে ।

ছেলে টা কে একেবারেই পছন্দ হয়না সুনেত্রার, মুখ টা অন্য দিকে করে ঢুকে গেলো সে , তবে একটা জিনিস এ একটু অবাক হলো , প্রতিবার ও যখন এ মুখ অন্য দিকে করে চলে গেছে বান্টি ঠিক ডেকে বলে , "কি ম্যাডাম চিনতে পারলেন না মনে হচ্ছে ?", কিন্ত আজ বললো না । যাই হোক ওই ফালতু ছেলে টা কে নিয়ে ওতো ভাবার কোনো মানে নেই । নিজের ঘরে এসে কাজে মন দিলো সুনেত্রা । হঠাৎ ই ভোম্বলদা এসে বললো , পাশের প্রাইভেট ঘর টাই আই সবাই ডাকছে । সুনেত্রা জিজ্ঞেস করলো , কি জন্য ভোম্বল দা ? ভোম্বল দা বললো মালিক ডাকছে , সবার কাজ নিয়ে কিছু কথা বলবেন । কিছুটা সন্দেহ আর কিছুটা বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে গেলো সুনেত্রা , পকেট শুধু রেখে দিলো নিজের সাথে আনা একটা ভীষণ ভারী তালা , রাতুল দা র দেয়া পরামর্শ কে মেনে । ঘরের ভিতর এ প্রবেশ করার আগে একটা বাজে গন্ধে পিছিয়ে আসছিলো সে , কিন্ত পিছন থেকে কেউ যেন খুব জোরে ঢেলে দিলো । নিজেকে সামলাতে পারলো না সুনেত্রা , ঢুকে পড়লো ওই ঘরের মধ্যে । ঘরে ঢোকার পর সুনেত্রা দেখলো সবাই উপস্থিত সেই ঘরে । সামনে বসে আছে সেই মালিক । বলে উঠলো তার বাঘের মতো গলায় ,সবাই কে সব বুঝিয়ে দিয়েছো তো ভোম্বল ? বুঝিয়েছি স্যার, ভোম্বল দা বলে চললো । সবাই কে পরিমান মতো টাকা দিয়ে দেয়া হয়েছে ।কিছুক্ষন এর মধ্যেই এই কারখানায় আগুন লাগবে , সব শেষ হয়ে যাবে । আপনারা আজ থেকে ঠিক ১ মাস পর অন্য অফিসে এ গিয়ে বসবেন , যা কাজ করছিলেন তাই করবেন । আর পুলিশ জিজ্ঞেস করলে বলবেন আপনাদের লিখিত ১ মাস এর ছুটি দেয়া হয়েছে ,তাই আগুন লাগার আগেই আপনারা ফিরে গেছেন । আর কারখানার পিছন দিক দিয়ে বেরোবেন, যেন কোনো শ্রমিক বুঝতে না পারে । আর সুনেত্রা তুমি এখানে দাড়াও ,মালিক তোমার সাথে কথা বলতে চাই । সুনেত্রা মনে মনে নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করলো , কেমন করে নিজেকে বাঁচাবে টা সে জানেনা , তবে এই কারখানার শ্রমিক গুলো কে বাঁচাতে হবে যে ভাবেই হোক , রাতুল কে খবর দেয়া খুব জরুরি । একটা বুদ্ধি খেলে গেলো মাথায় ,, সবার অলক্ষে নিজের ফোন থেকে রাতুল কে ফোন লাগিয়ে দিলো সে, যাতে তাদের সমস্ত কথোপকথন রাতুল শুনতে পাই । প্রথম রিং পুরো হয়ে গেলো কি ? রাতুল কি ফোন ধরলো কিছুই বুঝতে পারছে না সুনেত্রা । তার জীবন এর থেকে ও শ্রমিক গুলো র জীবন যে ভীষণ দামি , তাদের কে বাঁচানোর শেষ উপায় রাতুল, ফোন টা যেন ধরে ঠাকুর । নিজের আরাধ্য শিব ঠাকুর কে মনে মনে প্রণাম করে নিয়ে ,এক অসম লড়াইএ নামতে চললো সুনেত্রা ।

কি হবে সুনেত্রার ? রাতুল কি পারবে সুনেত্রা , শ্রমিক , সুবীর সবাই কে বাঁচাতে ? অরিজিৎ না সুজয়দা কে রাতুল এর আসল শত্র্রু? সব কিছুই ভীষণ ঘোলাটে । রাতুল এর কথা মতো হয়তো রাজনীতিতে এরকম হয় ।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama