Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Drishan Banerjee

Thriller Crime

3  

Drishan Banerjee

Thriller Crime

সিল্ক-রুট সরগরম ৭

সিল্ক-রুট সরগরম ৭

5 mins
6.9K


 অয়ন অবাক হয়ে বলে-"এর আগে এমন হয়েছে নাকি?"

মহিলা বলে তার বোন নিজেই ভুক্তভোগী। একটা বিবর্ণ ফটো বের করে মহিলা, বলে যে তার বোন খুব সুন্দরী ছিল। এই সিনেমার লোক তার বোনকে শেষ করে দিয়েছিল। দিঠি মন দিয়ে ফটোটা দেখে আর কয়েকটা প্রশ্ন করে ওনাকে। তারপর ওরা ঘরে ফেরে। যা বোঝা গেল,এরা সন্তুষ্ট না এই টিমের উপর।

 

পুলিশ বলেছে আপাতত কেউ কোথাও যাবে না এখান থেকে। জৈন একটু বেশি ঘাবড়ে আছে। প্রকাশজিকে ও এই লাইনে এনেছিল। প্রকাশজি এভাবে চলে গেল।

নেট থাকে না এখানে। ফোনের টাওয়ার আসছে যাচ্ছে। দিঠি হাঁটতে হাঁটতে হেলিপ‍্যাডের কাছে গিয়ে ফোনের টাওয়ার পায়। কলকাতায় কয়েকটা দরকারি ফোন করে ও। আজ পুরো দিনটা নষ্ট। দিনের শট গুলোও নেওয়া হয় নি। কারো এনার্জি নেই কাজ করার। জিষ্ণুর সাথে একটু কথা বলে দিঠি মৌ এর ঘরে যায়। এর আগে কায়দা করে জিষ্ণুর থেকে জেনেছে এই টিমে আর্ দিয়ে নাম ছয় জন আছে। হিরো রায়ান, ডান্স ডিরেক্টর মিস রেহানা, রাতুল ক্যামেরাম্যান, আর ঋতেশ,স্ক্রিপ্ট রাইটার, সহকারী ম্যানেজার রোহিত , আর সহকারী আর্টিস্ট রকি।রকি জুলুখে ফিরে এসেছিল। পা এখন ভালো আছে।

মৌ এর হাতে এই পাঁচ জনের কারো নাম লেখা নাকি বুঝতে চায় দিঠি। রেহানা মেয়ে বলে বাদ। সেই ছেলেটাই কি ওকে ডেকেছিল নাকি অন্য কেউ?  

আর ঐ দিনের জৈনের গাড়ির এ্যাক্সিডেন্টটা কি ছিল?

মাথায় হিজিবিজি প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসে।

 

 মৌ কে একা দেখে দিঠি নিজের ঘরে ডাকে। মৌ খুব চিন্তিত। দিঠি বলে -" এতো কিছুর পরেও বলবে না তোমায় কে ডেকেছিল?"

মৌ মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে। চোখে জল। দিঠি ওকে সময় দেয়। মৌ নিজের ঠোট দাঁত দিয়ে কামড়ায় । তারপর দিঠির দিকে তাকিয়ে বলে-"আমি এ কথা বলবো না। এর সাথে খুনের সম্পর্ক নেই। আর আপনি কে যে আপনাকে বলবো?"

ওর বেরিয়ে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে দিঠি। অয়ন বেশ গম্ভীর হয়ে ঘরে ঢোকে। বলে -"মেয়েটার মুড খারাপ মনে হলো?কিছু বলল না তাই না?"

দিঠি বলে-"তুমি নতুন কিছু জানতে পারলে নাকি?"

-"তেমন কিছু নয়। খুনির মোটিভটা বোঝা যাচ্ছে না। ঠিক কি চাইছে খুনি তাই জানি না।"

-"ঐ ড্রাইভারের সাথে কথা বললে? এ্যাক্সিডেন্টের ব্যাপারে?ও কি বলল?"

-"ড্রাইভার বলল ব্রেক ধরে নি, তার কেটে গেছিল। একটা বড় পাথরে ধাক্কা না খেলে গাড়ি নিচেই পড়ে যেতো।"

-"ঐ গাড়ি তো নায়ক নায়িকার জন্য ছিল। তার মানে ওদের মারতে চেয়েছিল কেউ?"

-"হতেও পারে, আবার সবার সামনে জিষ্ণু জৈনকে ঐ গাড়িটা নিতে বলেছিল। তার প্রায় এক ঘণ্টা পর জৈন রওনা দেয়। এই এক ঘণ্টা অনেকেই জানতো যে জৈন ঐ গাড়িতে ফিরছে।তখন যদি কেউ এটা করে থাকে?"

-"আর বিষগুলোর কি কিছু খোঁজ পেলে?"

-"লোকাল বিষ, ঐ হেমলক ফুল তো এখানে যত্র তত্র, তাছাড়াও কত রকমের বিষফুল আছে এখানে।"

দিঠি বলে -"লোকাল বিষ বুঝলাম। এখানকার লোকেরা এদের পছন্দ করছে না তাও বুঝলাম। তাই বলে কি মারবে এদের ? ইউনিটের কেউ টাকা দিয়ে যদি না কোনো লোকাল লোককে ফিট করে!ইউনিটের মধ্যেই সে লুকিয়ে আছে।"

অয়নকে দিঠি বলে যে জারিনা আর অঙ্কনার মধ্যে বোনের সম্পর্কর কথা। অথচ দুজন দুজনকে দেখতে পারে না। সারাটা রাত এ সব আলোচনাতেই কেটে যায়। অয়ন আর দিঠি কোনো কুল খুঁজে পায় না। মুখোশের আড়ালে কে যে খুনি বোঝা যায় না।

 

এক রৌদ্রজ্জ্বল সকাল দিয়ে নতুন দিনের শুরু। কিন্তু সবাই বিষণ্ণ, বিধ্বস্ত। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কিথেকে কিহয়ে গেল। ইউনিটের সবাই ভয়ে ভয়ে ঘুরছে। বাতাসে মৃত্যুর গন্ধ। কেউ কিছু খেতেও ভয় পাচ্ছে।

 

আজ জিষ্ণু কাজ শুরু করবে ভেবেছিল কিন্তু কেউ রাজি হয় নি । এভাবে শট নিলে তার মান ভাল হবে না জিষ্ণুও জানে। আজ দুপুরের মধ্যে কুপুপে শুটিং শেষ করার কথা ছিল।

 

বেলায় জারিনা এসে পৌঁছল। ও পুলিশ কে বলেছে ওর ঠাণ্ডা লেগেছিল বলে ও প্রকাশজিকে ওষুধ এনে দিতে বলেছিল। রাতে প্রকাশজি ওকে কফ সিরাপ দেয়। ওটা খেয়েই ওর শরীর খারাপ করে। ডাক্তার বলেছে ঐ সিরাপে এক ধরনের বিষাক্ত গাছের শিকরের রস মেশানো ছিল। ওটা লোকাল গাছ। তবে ওষুধটা প্রকাশজি কাউকে দিয়ে আনিয়েছিল নিশ্চই। ওর হাতে বোতলটা যখন দেয় ওটা খোলা ছিল। অর্ধেক ওষুধ ছিল। তখন ও ওটা খেয়াল করে নি।

এখানে এসে প্রকাশের খবর শুনে ও খুব আপসেট। জিষ্ণু সব শুনে বলল -" তাহলে কি প্রকাশজি প্রথমে ওকে বিষ দিয়ে পরে নিজে আত্মহত‍্যা করলো ??"

দিঠি সব শুনে অয়নকে বলে -" এই প্রকাশের বিষটা......"

-"ওটাও একই জিনিস আমার মনে হয়। রিপোর্ট কাল আসবে। কাল বোধহয় সবাই গ্যাংটক যাবে। পুলিশের সাথে কথা হয়েছে। আপাতত শুটিং বন্ধ থাকবে। "

দিঠি আবার ঘরে এসে ভাবতে বসে। অয়ন উঠে এসেছিল, বলে -" তোমাদের লেখকদের এই এক দোষ। নিজের মতো করে কল্পনার জাল বুনে চলো। আরে বাবা গল্পে খুনি কে সেটা তুমি ঠিক করতে পারো। কিন্তু বাস্তবে অঙ্কটা উল্টো। তোমায় খুনির অ্যাঙ্গেল থেকে ভাবতে হবে। নিজের ভাবনাটা কারো ঘাড়ে না চাপিয়ে উল্টোদিক থেকে ভাব। আর সবাইকে সন্দেহ করো।"

দিঠি মনে মনে ভাবে অয়ন ঠিক বলেছে। বিষটা যখন লোকাল তখন জোগাড় করেছে লোকাল কেউ। তবে টাকা দিয়ে যে কেউ কিনতে পারে এই বিষ।

 

একটু পরে জিষ্ণু এসে বলে-"এখানে ঐ পাহাড়ের উপর একটা মন্দির আছে, বাবা হরভজন সিংজির, খুব জাগ্ৰত, এখানকার লোকাল লোক ছাড়া মিলিটারিরাও মানে একথা। আমি একটা পূজো দিতে যাচ্ছি, তোমরা যাবে তো চলো। ঘোরাও হবে একটু।"

 

অয়ন আর দিঠি রেডি ছিল, বেরিয়ে গেলো তক্ষুনি। অঙ্কনা আর রায়ান আরো কয়েকজন যাচ্ছে। জারিনা রেষ্ট নেবে বলে থেকে গেলো। পাশের গেস্ট হাউসে মিস রেহানার সাথে ওর থাকার ব্যবস্থা করে দিল জিষ্ণু। কেউ আর একা থাকতে চাইছে না। তিনটে গাড়ি নিয়ে ওরা চলল বাবা মন্দিরের উদ্দেশ্যে।

 

ড্রাইভার পাহাড়ের মাথায় এক মন্দিরে নিয়ে গেলো সবাইকে। চারদিকে বরফ আর বরফ, মনে হয় সাদা ছাড়া আর কোনো রঙ ছিল না শিল্পীর তুলিতে। দিঠি এই মন্দিরের গল্পটা জানতো, আজ ওখানে লেখাটা পড়ে বাকিটা জানল। এই বীর সৈনিক হড়পা বানে ভেসে গেছিলেন ডিউটিরত অবস্থায়। মৃত্যুর পরও কর্তব্য করে যাচ্ছেন বর্ডারে। ওনার অস্তিত্ব সরকার মেনে নিয়ে ওনাকে মাইনে দিচ্ছে, এমনকি ছুটি,প্রমোশন সব দিচ্ছে। বর্ডারে সব মিলিটারিরা ওনাকে ভগবান মনে করেন।যদি কেউ ডিউটিতে ফাঁকি দেয় ওনার অস্তিত্ব টের পায়। এ এক অদ্ভুত ঘটনা। মন না মানলেও এদের দেখে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে কিছু তো আছে এই বরফের রাজ্যে। মিলিটারিরা এ মন্দির দেখাশোনা করে।

জিষ্ণু নিষ্ঠা ভরে পূজো দিল। সবাই ঘুরে দেখছিল চারপাশ। চাইনিজ বাঙ্কার দেখা যায় পাহাড়ের মাথায়। চারদিকে মাইন এরিয়া।

ড্রাইভার বলল কুপুপের পরে একটা নতুন বাবা মন্দির হয়েছে। ওটা একটু নিচে। ঝরনার ধারে বিশাল শিব লিঙ্গ আছে।(চলবে)


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Thriller