Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sukdeb Chattopadhyay

Abstract

5.0  

Sukdeb Chattopadhyay

Abstract

প্রত্যাশা

প্রত্যাশা

3 mins
695


ল্যান্ড ফোনটা কিছুক্ষণ বাজার পর প্রিয়নাথ বারান্দার চেয়ার থেকে উঠে এসে সেটি ধরলেন।--কার ফোন গো, বাবুর?

অনুরাধা রান্নাঘর থেকে প্রায় দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ফোনের সামনে এসে দাঁড়ালেন।

যার ফোনের আশায় মহিলা এত উদগ্রীব সেই বাবু বা অভিকওঁদের একমাত্র সন্তান। উন্নতির গতি ত্বরান্বিত করার বাসনায় চাকরী জীবনের শুরুতেই বিদেশে পাড়ি দিয়েছে। এ পোড়া দেশে ফিরে আসার কোন আগ্রহ এযাবৎ সে দেখায়নি। না, মাঝে একবার সে এসেছিল বটে। বিয়ে করতে। নিজের প্রেমিকাকেআইনত বৌয়ে রূপান্তরিত করে দিন পনের বাদে কেটে পড়ল। বিদেশ যাওয়ার পর প্রথম প্রথম দু একবার বাবা মাকে ওখানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু যদি সত্যিই চলে আসে এই ভয়ে অমন কু প্রস্তাব পরে আর কখনো দেয়নি। তবু মায়ের মন ত, তাই সন্তানের একটু গলার আওয়াজ শোনার জন্য এত উতলা।

দু একটা কথা বলার পর ফোনের রিসিভারটা স্ত্রীর দিকে এগিয়ে দিয়ে ইশারায় জানালেন ওটা ছেলের ফোন। প্রিয়নাথ আবার বারান্দায় গিয়ে খবরের কাগজ খুলে বসলেন। সামনে কাগজ খোলা থাকলেও চোখ আর কান দুটোই তখন গিন্নির দিকে। অনুরাধার কথা শুনে ওপারের বক্তব্য আঁচ করার চেষ্টা করছেন। “বুড়ো মানুষটাকে একা ফেলে কি করে যাই বল?”, “দুজনে গেলে তবু নিশ্চিন্তে যাওয়া যায়”, এইরকম দু একটা কথা কানে যেতে প্রিয়নাথ কথোপকথনের বিষয়বস্তুর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে আবার কাগজে মন দিলেন।

ফোন শেষে অনুরাধা ধীর পায়ে বারান্দায় এসে স্বামীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন- শুনছ?

-- জানি।

--কি জান?

-- তুমি যা বলতে এসেছ।

-- বাবুর সাথে কি কথা হল তা তো তোমাকে এখনও বলিই নি, জানলে কি করে?

-- জানলাম, সে আমাদের সন্তান বলে। নিজের সন্তানকে বাবা মার থেকে বেশি আর কে জানবে। বৌমার বাচ্চা হবে। একজন চব্বিশ ঘণ্টার আয়া দরকার। নিখরচায় মায়ের মত এমন দরদী আয়া কোথায় আর পাবে। তাই তোমাকে এত সাধাসাধি। চাকরের এই মুহূর্তে ওদের প্রয়োজন নেই। যখন দরকার হবে আমাকে ডাকবে।

-- তুমি ঠিকই ধরেছ। সারা জীবন নিজেদের সব কিছু দিয়ে যাকে তিল তিল করে বড় করলাম সে এমন কি করে হয় গো?

-- প্রশ্নটা আমাকে না করে নিজেকে কর উত্তর পেয়ে যাবে।

--কি বলছ বুঝলাম না।

-- তুমি তো সবসময় চাইতে শহরে আমাদের একটা বাড়ি হোক, ছেলে শহরের ভাল স্কুলে পড়াশুনা করুক, আমরা একটু সুখে সাচ্ছন্দে থাকি। তাই না?

-- হ্যাঁ, এতো সব মানুষই চায়। এটাই তো স্বাভাবিক।

-- আমাদের ছেলে আর বৌমাও তো সেই স্বাভাবিক কাজটাই করছে অনুরাধা। তাহলে কষ্ট পাচ্ছ কেন?

-- কষ্ট পাচ্ছি মা বাবার প্রতি ওর আচরণে, ওর স্বার্থপরতায়।

-- ত্রিশ বছর আগের এক দুপুরে ফিরে যাও, আমার ধারণা তোমার কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে। সেই দুপুর, যেদিন আমার মায়ের সাথে সামান্য তর্কাতর্কির অজুহাতে তুমি আমাকে বাধ্য করেছিলে আমাদের গ্রামের বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে। অশান্তি এড়াতে বাবাও আমাকে পরামর্শ দিয়েছিলেন কটা দিন তোমার বাপের বাড়িতে কাটিয়ে আসতে। ভেবেছিলেন কিছুদিন বাদে মাথা ঠান্ডা হলে আবার সব আগের মত হয়ে যাবে। ওনার ভাবনায় ভুল ছিল। তুমি আর কখনো ওখানে থাকতে যাও নি। আমাদের, বিশেষ করে এক বছরের নাতির বিরহে তাঁরা যে মানসিক কষ্ট পেয়েছিলেন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে আমাদের সেটাই তো প্রাপ্য অনুরাধা।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract