চক্রাবর্তন - তৃতীয় পর্ব
চক্রাবর্তন - তৃতীয় পর্ব
রাত বাড়ছে। বাপনের শরীরটা অস্থির হয়ে উঠছে। কখন আসবে ছায়া! এই কদিনেই বাপন ছায়াকে পাগলের মতো ভালোবেসে ফেলেছে। এই শক্ত চামড়ার নিচে তারও যে একটা কোমল হৃদয় আছে যে ভালোবাসতে পারে এ কথা তো বাপন ভুলতেই বসেছিল। ছায়া তার জীবনে না এলে গুরুদেবের সাথে এই ভাবে শ্মশানে ঘুরে ঘুরে পশুর মতোই জীবন কাটিয়ে দিতো সে। কিন্তু আর না, আর সে কাউকে পরোয়া করে না। ছায়া তার সাথে থাকলে সে যে কোনো প্রতিকূলতা কে জয় করতে পারে, আর গুরুদেব তো কোন ছার। বাপন স্বপ্ন দেখে ছায়াকে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করার। হ্যাঁ সে জীবন অবশ্যই আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো হবে না, তাও বাপন এসবের পরোয়া করেনা। লোকের সাথে তার কি। সে যেমন ভাবে নিজের জীবন চালাবে জীবন তেমনই চলবে। নিয়ম বলে কিছু হয়না।
“ঘুমাও নি?”
ছায়ার ডাকে বাপনের সম্বিৎ ফেরে। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ছায়াকে আজ আর স্পষ্ট দেখা যায়না, অমাবস্যা সামনেই তাই চাঁদের আলো ক্ষীণ। বাপন ছুটে যায়, জড়িয়ে ধরে ছায়াকে।
“আজ এত দেরি করলে কেন ছায়া?”
“এমনি … খুব কষ্ট হচ্ছিল।”
“কষ্ট! কেন? আমি তো তোমাকে বলেছি তোমার সব কষ্ট আমি দূর করে দেব।”
“জানি তো। তোমার ওপর আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।”
“তুমিই বারণ করেছ বলে নয়তো এতো দিনে ওই গুরুদেবকে …”
“না বাপন না। তাড়াহুড়ো কোরোনা। সময় আসতে দাও। অমাবস্যা অবধি অপেক্ষা না করলে যে আমি ওর হাত থেকে ছাড়া পাবোনা।”
“জানি আমি ছায়া,সব জানি। আমি শুধু দিন গুনছি।”
আজকাল গুরুদেব একদিনও শ্মশানে থাকছেনা রাত্রে, কেন কে জানে! তবে তা বাপনের পক্ষে লাভজনকই হয়েছে, গুরুদেব আশ্রমে থাকলে সে কি আর ছায়াকে এভাবে কাছে পেত। প্রথম প্রথম বাপনের ভয় লাগতো, ভাবতো গুরুদেব বুঝি আড়াল থেকে তার ওপর নজর রাখছেন কিন্তু ছায়াই তাকে সাহস জুগিয়েছে। এখন আর বাপন ভয় পায়না। কিছুতে ভয় পায়না। বাপনের আজও স্পষ্ট মনে আছে যেদিন ছায়াকে প্রথম নিয়ে এলেন গুরুদেব সেদিনের কথা। ছায়াকে একঝলক দেখেই বাপনের মনে হয়েছিল এই বন্দিপুরের শ্মশান যার সর্বত্র মৃত্যু আর হাহাকারের চিহ্ন সেখানে যেন এক ফোঁটা জীবন জ্যোতির প্রবেশ ঘটেছে। প্রথম দর্শনে ওই এক ঝলকই, গুরুদেব তড়িঘড়ি ছায়াকে ঘরের ভেতরে পাঠিয়ে দেন। তারপর বাপনকে বলেন, “তোর কাজটা অনেক সহজ করে দিলাম। এবারে আর বেশি খাটতে হবে না তোকে।”
“কিন্তু গুরুদেব এ যে বিবাহিতা, কপালে সিঁদুর। এ তো কুমারী নয়।”
“কুমারীই। সে নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না।”
“কিন্তু এ কার স্ত্রী? কোথায় পেলেন একে?”
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর গুরুদেব বলেন, “আমার স্ত্রী... এখন যা তুই।”
বাপন হতভম্ব হয়ে যায়। গুরুদেবের স্ত্রী! বাপনকে কোনোদিনই গুরুদেব নিজের পরিবার সম্পর্কে কিছু বলেননি কিন্তু গুরুদেব মাঝে মাঝেই আশ্রম থেকে উধাও হয়ে যান আর ফেরেন যখন হাতে বেশ কিছু টাকা পয়সা নিয়ে আসেন। বাপন আন্দাজ করতে পারে যে গুরুদেব তার পূর্বাশ্রমে কোনো ধনী বাড়ির ছেলে ছিলেন এবং এখনও মাঝেমাঝে আশ্রম থেকে উধাও হয়ে নিজের বাড়িই যান। গুরুদেবের কাছে আসার আগে বাপন শুনেছিল এসব সাধনার জন্য নিজের পূর্বাশ্রমকে সম্পূর্ণ ত্যাগ করতে হয় কিন্তু গুরুদেব যেন অন্য ধাতুতে গড়া; সাধারণ শ্মশান সাধকদের সাথে তাঁর কোনো মিল নেই বললেই চলে। আসলে বাপনকে গুরুদেব যতটা বোকা ভাবেন ততটা বোকা বাপন নয়। নেহাতই ভাগ্যের ফেরে আজ এখানে এসে পড়েছে নয়তো বাপনও দেখিয়ে দিত সে কি জিনিস।
সেদিন রাত্রেই বাপনকে ছায়ার ঘরে পাঠান গুরুদেব। ঘুমন্ত ছায়াকে অতর্কিতেই আক্রমণ করে বাপন, নষ্ট করে দেয় তার কৌমার্য। আর এরপর … উফ এর পরের অংশটা ভাবতে গেলেই বাপনের বুক কেঁপে ওঠে। সে ছায়ার কাছে এখন বহুবার ক্ষমা চেয়েছে এ জন্য। বাপনের মনে হয় ওই কাজ গুলো বাপন নয় ওর মধ্যে লুকিয়ে থাকা একটা পশু করেছে যাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলেছেন গুরুদেব। এরপর গুরুদেবের অবর্তমানে ছায়া যেদিন বাপনের ঘরে আসে সেদিন বাপনের মধ্যে থাকা মানুষটা আবার জেগে ওঠে। পরের দিন সকালে তো বাপনের মনে হচ্ছিল সে বুঝি রাতে স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু পরের রাতেও ছায়া এসে তাকে বুঝিয়ে দেয় যে সে কোনো স্বপ্ন দেখেনি, সবটাই সত্যি। এরপর থেকে ছায়া রোজ রাতে এসেছে বাপনের কাছে। বাপনও একটু একটু করে হারিয়ে ফেলেছে নিজেকে ছায়ার মধ্যে। ছায়া আস্তে আস্তে বাপনের মনে সাহসের বীজ বপন করেছে, আগুন জ্বালিয়েছে ওর মনে। বিদ্রোহের আগুন। এই বন্দি জীবন থেকে নিজেদের মুক্ত করার আগুন।
৬. পাল্টা হাওয়া
সন্ধ্যে নামবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই। বন্দিপুরের আকাশ এর কোণে জমছে কালো মেঘ। একটা ঠান্ডা অথচ তীব্র বাতাস ধুলো ওড়াতে শুরু করেছে। ঝড়ের পূর্বাভাস।
গুরুদেব আসতে আসতে একটা ঘরে ঢুকলেন। ঘরের মধ্যে কফিনের মতো দেখতে একটা বড় বাক্স। গুরুদেব গিয়ে বাক্সটার ডালাটা খুলে ফেললেন, এক দমকা হিমশীতল বাতাস এসে ঝাপটা মারলো তার মুখে, পাত্তা দিলেন না তিনি। এক দৃষ্টিতে দেখতে থাকলেন ওই বাক্সে বরফের মধ্যে শায়িত থাকা নারী দেহটার দিকে। মুখটা এখনো এতটাই জীবন্ত দেখাচ্ছে যে কে বলবে আজ থেকে প্রায় একমাস আগে মারা গেছে সে। গুরুদেব নিজের হাতের আঙ্গুল গুলো ছোঁয়ালেন মৃতা নারীটির গালে। মা ঠিকই বলেছিল তার বউ এত সুন্দরী যে মৃত্যুঞ্জয় চোখ ফেরাতে পারবেনা। কিন্তু মা তো জানতেন না যে বাবাজিকে খুন করার সাথে সাথে মৃত্যু হয়েছিল মৃত্যুঞ্জয়েরও, জন্ম হয়েছিল গুরুদেবের। যার নারীদেহের ওপর আর কোনো আকর্ষণই অবশিষ্ট ছিলোনা। নারীদেহ শুধু মাত্র তার কাছে সাধনার বস্তু আর তাদের মূল্য আছে একমাত্র মৃত্যুর পর। শ্রীময়ী ওরফে ছায়ার সৌন্দর্য মৃত্যুর পরও বরফের মধ্যে অবিকৃত। গুরুদেব মুগ্ধ হয়ে চেয়ে আছেন তার দিকে আর অবাক হচ্ছেন। নিজেকে সংযত করার চেষ্টা করেও পারছেননা, কোনো এক অদ্ভুত মাদকতায় ছায়াকে দেখে যাচ্ছেন তিনি। যে ছায়াকে জীবদ্দশায় কোনোদিনও এভাবে দেখলেন না তাকে আজ তার মৃত্যুর এতো দিন পর দেখে তাঁর এরকম নেশা হয়ে যাচ্ছে তাঁর, কিন্তু কেন! আর তো কিছুক্ষণ পরই তাকে তাঁর সাধনার সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানোর স্তব শুরু করতে হবে আর এই মুহুর্তেই কিনা তিনি এরকম দুর্বল হয়ে পড়ছেন!
আজ কত বছরের প্রতীক্ষা … শব সাধনা তো অনেক তন্ত্র সাধকই করেন। কিন্তু বাবাজি এমন এক তন্ত্রের সন্ধান পেয়েছিলেন যা সাধারণ শব সাধনার থেকে আলাদা, যেখানে লাগে অনেক ধৈর্য, অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয় সাধককে। আর কোনো সাধারণ বুদ্ধিবিশিষ্ট সাধকের সাধ্যের বাইরে এই সাধনা। এখানে প্রয়োজন হয় সাত জন এমন নারীর শব যাদের কৌমার্য নষ্ট হওয়ার সাথে সাথে মৃত্যু ঘটেছে। এমন শব তো সহজে মিলবেনা। তাই বাবাজি মৃত্যুঞ্জয়কে এই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মৃত্যুঞ্জয়ের কাজ ছিল কম বয়সী মেয়েদের ভালোবাসার জালে ফাঁসিয়ে তাদের কৌমার্য হরণ করে সঙ্গে সঙ্গে খুন করা। এরপর সেই দেহ নিয়ে বাবাজি সাধনা করতেন। অনাথ বাপনকে এনে গুরুদেব নিজের পূর্বজীবনের পদটা দেন অর্থাৎ বাবাজির কাছে মৃত্যুঞ্জয় যা কাজ করতো বাপনকে সেই কাজই করতে হয় এখন গুরুদেবের জন্য। শক্ত সমর্থ সুঠাম দেহের অধিকারী বাপন এক এক করে ছয়টা মেয়েকে ভালোবাসার জালে ফাঁসিয়ে তাদের ফুঁসলিয়ে এনেছিল বাবাজির আশ্রয়ে। এই কাজের জন্য বারবার তাদের শ্মশান বদল করতে হয়েছে, নিজেদের বিভিন্ন বেশ ধারণ করতে হয়েছে। একেকটা নতুন মেয়েকে নিয়ে এক একটা নতুন জায়গায় পালাতে হয়েছে তাদের যাতে ধরা পড়ার কোনো সম্ভাবনা না থাকে। আর সর্বশেষ আসে ছায়া, যাকে স্বয়ং গুরুদেব আনেন এই বন্দিপুরের নির্জন শ্মশানে। বাপন তো বাকি কাজটা করেছিল।
গুরুদেবের আঙুলগুলো ছায়ার গাল থেকে নেমে আসতে আসতে ঠোঁটে পৌঁছায়, গোলাপি ঠোঁট দুটো দেখে মনে হয় যেন এখুনি কথা বলে উঠবে।
হঠাৎ করেই গোলাপি ঠোঁট দুটো ফাঁক হয় অল্প, চোখ দুটো আচমকা খুলে যায়। শব দেহের ওপর বসে আজ তিন বছর ধরে সাধনা করা গুরুদেবের হৃৎপিণ্ডটাও লাফিয়ে উঠে ঘটনার আকস্মিকতায়। ছিটকে দূরে সরে যান তিনি। আত্মাকে ভয় পান না কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় তিনি ঘাবড়ে যান। ছায়ার আত্মা তো এই দেহ ছেড়ে গেছে বলেই তাঁর ধারণা ছিল, আর সেই আত্মাকে ফিরিয়ে এনে নিজের কাছে বন্দি করতেই তাঁর সব সাধনা। তাহলে ছায়া এভাবে ....
“আপনি ভয় পাচ্ছেন কেন!”
ছায়ার প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননা গুরুদেব। ছায়াই আবার বলে, “ভয় পাবেননা। আমি আপনার সহধর্মিণী, আপনাকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করা আমার ধর্ম। আর তাই হয়তো ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমি জেগে উঠেছি যাতে আপনাকে সাবধান করতে পারি।”
এতক্ষণে গুরুদেবের গলায় স্বর ফোটে,নিজের পরিচিত গম্ভীর কন্ঠস্বর হারিয়ে কেমন এক মিনমিন গলায় জিজ্ঞেস করেন, “আমাকে সাবধান করতে! কি থেকে সাবধান?”
“আপনার বিশ্বস্ত অনুচর বাপনের থেকে।”
“বাপন!”
“হ্যাঁ, সে ছক কষছে আজ আপনার সাধনা শুরু করার আগে আপনার বুকে ছুরি বিদ্ধ করে অপনাকে হত্যা করবে দিয়ে আপনার অর্জিত সমস্ত শক্তি নিজের কুক্ষিগত করবে।”
“আমার অর্জিত শক্তি কুক্ষিগত করবে!”
“হ্যাঁ। আশ্রমে আপনার অনুপস্থির সুযোগে সে এমন ছক কষেছে আর এই কাজে সে আরেক জন তন্ত্র সাধকের। রাতের অন্ধকারে দুজনে মিলে ছক কষছে আজ দিন পনেরো ধরে।”
গুরুদেব হতভম্ভ হয়ে যান। তাহলে নিশু ডোম ভুল বলেনি, সে সত্যই বাপনকে কারুর সাথে কথা বলতে শুনেছিল। নিজের নির্বুদ্ধিতায় হাত কামড়ান গুরুদেব; বাপন যাতে রাতের অন্ধকারে তার কোনো ক্ষতি না করতে পারে সেজন্য তিনি এই কদিন শ্মশানের বাইরে রাত কাটানো শুরু করেন কিন্তু সেই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে বাপন এত বড় ছক কষেছে! সেই দুদিনের ছেলেটা যাকে তিনি নিজের হাতে গড়েপিটে নিয়েছিলেন সে আজ তারই পেছনে ছুরি মারতে উদ্যত! গুরুদেব ছায়াকে জিজ্ঞেস করেন, “তুমি কি করে জানলে এসব?”
ছায়া কোনো উত্তর দেয়না, সে আবার আগের মতো নিথর হয়ে শুয়ে পড়ে।
“গুরুদেব আপনার শরবত।”
গুরুদেব পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখেন বাপন দাঁড়িয়ে, হাতে তার শরবতের গ্লাস। সাধনা শুরু করার আগে প্রত্যেকবারই এই জড়িবুটির শরবত খেয়ে থাকেন তিনি সাধনার জন্য শক্তি সঞ্চয় করতে। এও তাঁর বাবাজির কাছেই শেখা। বাপনের চোখের দিকে এক দৃষ্টি তে তাকিয়ে গুরুদেব শরবত টা শেষ করলেন। তাঁর সব যেন কেমন গোলমাল পাকিয়ে যাচ্ছে। বাপন তাকে খুন করতে চাইবে! কিন্তু না চাওয়ারও কি আছে! গুরুদেবের চোখের সামনে নিজের অতীতের ছবিটা আরও একবার ভেসে উঠলো। ছায়ার আত্মাকে অবিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। ছায়া তাকে তার স্বামীরূপে বরণ করেছিল তাই মৃত্যুর পরও তাঁর মঙ্গল কামনা করে যাচ্ছে; এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু নেই, গ্রামের সহজ সরল মেয়েগুলোর কাছে তো স্বামীই সব। আর ছায়াও তার ব্যতিক্রম নয়।
বাপনের পেছন পেছন বেরিয়ে এলেন গুরুদেব। বাইরে ঝড় তীব্র আকার ধারণ করেছে। গুরুদেবের আলখাল্লার ভাঁজে গোপনে সবসময় রাখা থাকে একটা ছুরি, আত্মরক্ষার অবলম্বন হিসেবে। কোনোদিনও সেটা ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি আজ পর্যন্ত, কারণ সব কাজই তো বাপন সারত এতদিন। আজ গুরুদেব প্রথম ছুরিটা বের করে আনেন আলখাল্লা থেকে। শেষ মুহূর্তে হয়তো বাপনের অবচেতন মন হঠাৎই সতর্ক হয়ে ওঠে আর বাপন পেছন ফিরে তাকায় কিন্তু শেষ রক্ষা হয়না বরং সামনে তাকানোর ফলে ছুরিটা সোজা ঢুকে যায় তার হৃৎপিণ্ডে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছুটে এসে গুরুদেবকে মুখ রঞ্জিত হয়ে ওঠে। কিন্তু একি হঠাৎই তাঁর গলা জ্বালা করছে কেন, শুধু গলা নয় সারা শরীর এবার জ্বলছে। সে এক বিভৎস জ্বালা … ছটফট করতে করতে মাটিতে পড়ে যান গুরুদেব, তাঁর নখ গুলোয় নীল রং ধরছে। যদিও সন্ধ্যের অন্ধকারে তা দেখা যায়না ভালো করে।
নিজের শেষ নিঃশ্বাসটা ফেলার আগে বাপন দেখতে পায় গুরুদেব লুটিয়ে পড়ছেন মাটিতে। ছায়ার কথা মতো সে গুরুদেবের শরবতে মিশিয়ে দিয়েছিল বিষ। গুরুদেব শেষ, আজ তারা মুক্ত। বাপন মনে মনে বললো, আর তোমার আমার এক হতে কোনো বাধা নেই ছায়া, এখন তো আরও ভালো হলো তোমার আর আমার মধ্যে কোনো পার্থক্য রইলো না।
ক্রমশ...