Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Debdutta Banerjee

Drama Fantasy

3  

Debdutta Banerjee

Drama Fantasy

অবুঝ স্নেহ

অবুঝ স্নেহ

3 mins
1.6K


-''ও ব‍্যাঙা, আমরা না আজ সেই সিনেমাটা দেখতে যাবো জানো। ঐ যে তুমি যে গল্পটা বলেছিলে গো। সবুজ রঙের ব‍্যাঙ, কারমেট দা ফ্রগ। '' ছয় বছরের তিতিরের কথায় চোখ মেলে তাকায় ওর কাকা যাকে ও ব‍্যাঙা বলেই ডাকে। 

তিতিরের জন‍্য ছোটবেলায় ওর কাকা একটা কারমেট দা ফ্রগের সফট টয় এনেছিল। পুতুলটা তিতিরের খুব পছন্দের। ও নাম দিয়েছে ব‍্যাঙা। আর কাকাকেও তাই ডাকে ব‍্যাঙা বলে। 

-''এই ব‍্যাঙা, যাবে আমাদের সাথে?'' 

ওর চুল গুলো ঘেঁঁটে দিয়ে নির্বাণ উঠে বসে। একটু হেসে বলে -''তুমি দেখে এসো। আমি তো আগেই দেখেছি। ''

-''কিন্তু তুমি না গেলে যে আমার ভালোই লাগবে না। চল না ব‍্যাঙা। '' তিতিরের মুখে মিষ্টি আবদার। 

নির্বাণ ওকে বোঝাতে চেষ্টা করে। 


-''চল না ভাই, আর কতদিন নিজেকে এভাবে ঘরে বন্দী করে রাখবি রে। আজ চল সবাই মিলে ঘুরে আসি। '' তিতিরের বাবা পবিত্র বাবু বলতে বলতে ঘরে ঢোকেন

 -''তোরা যা, আমি ঠিক আছি। '' তিতিরের গালে একটা বড় হামু খেয়ে নির্বাণ বাথরুমে ঢুকে যায়। 

দাদার হাত থেকে বাঁচার এটাই সহজতম পদ্ধতি। 


কিন্তু দুপুরে খাওয়ার টেবিলে তিতির আবার বায়না জোরে। -''ও ব‍্যাঙা তুমি জানো মুক্তিপ্রাপ্ট ‘দ্য মাপেটস’-এর এটা নতুন গল্প। সব মিলিয়ে মাপেটদের নিয়ে বানানো আট নম্বর ছবি। এই গল্পে দেখা যায়, ডমিনিক ব্যাডগাইয়ের প্রস্তাবে কারমিট দ্য ফ্রগ ও তার মাপেট বন্ধুরা সারা বিশ্ব সফরে বের হয়। কিন্তু তারা বুঝতে পারেনি এক ভয়ানক ফাঁদে পা দিয়েছে। সর্বকালের সবচেয়ে বড় চোর হিসেবে ইতিহাসে নাম লেখানোর জন্য মাপেটদের কাজে লাগাতে চায় বিশ্বের সবচেয়ে মন্দ ব্যাঙ কনস্ট্যান্টিন। তাই সহকারী ডমিনিককে নিয়ে তার এই পরিকল্পনা। কারমিটের ছদ্মবেশ ধারণ করে কনস্ট্যান্টিন দলে জায়গা করে নেয়। আর কারমিটকে কনস্ট্যান্টিন ভেবে কারাগারে বন্দি করা হয়। স্যাম দ্য ঈগল ও ইন্সপেক্টর জ্যঁ পিয়ের নেপোলিয়ন তদন্ত শুরুর পর মাপেটরা অনুভব করতে থাকে তাদের নেতা আগের মতো নেই। এরপর ....''


-''বাঃ এই তো গল্পটা আবার জানা হয়ে গেলো। বাকিটা তুমি ফিরে এসে বলো কেমন লাগল। তাড়াতাড়ি খেয়ে নেয় নির্বাণ। 

-''ও ব‍্যঙা, তুমি সবুজ পাঞ্জাবি পরেছো কেনো, তুমিই কি কারমেট দ‍্যা ফ্রগ ?'' মাংসের হার চিবাতে চিবাতে তিতির বলে। 

-''তাড়াতাড়ি খেয়ে ওঠো তিতির। এবার দেরি হয়ে যাবে কিন্তু। '' ওর মা তাড়া দেয় মেয়েকে। 

 কিন্তু হলে গিয়েও মেয়ের শান্তি নেই। ব‍্যাঙা না আসায় ও মন দিয়ে সিনেমাও দেখে না। বাবাকে বলে -''ব‍্যাঙা তো এমন ছিল না বাবা। নিজেই কত আনন্দ করত। মুভি দেখাতো। ঘুরতে নিয়ে যেত। ঐ যে ব‍্যাঙা পরমা আন্টিকে বিয়ে করল দু জন কত ভালো ছিল। তারপর ব‍্যাঙা আমায় ফেলে পরমা আন্টিকে নিয়ে ঘু্রতে গেলো, তারপর কি যে হল !! আন্টিও এলো না আর। ব‍্যাঙাও বদলে গেলো। সারাক্ষণ ঘর অন্ধকার করে শুয়ে থাকে। আমি চুপি চুপি দেখেছি, কাঁদে জানো। ''

পবিত্র বাবু ছয় বছরের কন‍্যাকে কি বোঝাবেন বুঝতে পারেন না। ভাইকে দেখে তাদের সবার কষ্ট হয়। হানিমুনে গিয়ে একটা দুর্ঘটনা তাদের সবার সুখ শান্তি কেড়ে নিয়েছে। পরমাকে হারিয়ে নির্বাণ নিজেকে এক কঠিন চাদরে মুড়ে ফেলেছে। অফিস ও যায় না আজ দু মাস। তিতির ছাড়া আর কারো সাথে কথাও বলে না। 

-''বাবা, ওটা ব‍্যাঙাই তো? মাঝে মাঝে মনে হয় ছদ্মবেশে অন‍্য কেউ নয় তো। এই সিনেমাটায় কারমেট দ‍্যা ফ্রগের বদলে ঐ দুষ্টু ব‍্যাঙটার মতো কেউ নয় তো?''

সায়নী ওকে চুপ করে সিনেমাটা দেখতে বলে। ও বকবক করতেই থাকে। 

-''বাবা, আর দেখবো না, বাড়ি চলো । ব‍্যাঙা একা রয়েছে বাড়িতে।'' হাফটাইম থেকেই মেয়ের বায়না শুরু হলো। 

অগত‍্যা বাড়ি ফিরতেই হলো। আর চাবি দিয়ে ঘর খুলে ঘরে ঢুকেই পবিত্র বাবু আর সায়নী থ। সোফার উপর উল্টে শুয়ে রয়েছে নির্বাণ।কয়েকটা খালি হুইস্কি আর ভদকার বোতল চারপাশে গড়াচ্ছে। হাতেও একটা বোতল। চোখের জল আর এলকোহল মিশে সবুজ পাঞ্জাবি ভিজে গেছে। 

ছুটে যায় তিতির ,-'' ও ব‍্যাঙা, কি হয়েছে তোমার? আর তোমায় ছেড়ে যাবো না। ব‍্যাঙা। চোখ খোলো। এই দেখো। আমরা চলে এসেছি। ও ব‍্যাঙা। ''

ধীরে ধীরে চোখের পাতা নড়ে ওঠে নির্বাণের। তিতির কে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। বলে -''যেতে আর পারলাম কই। তুই তো আটকে দিলি । তোর এই নিস্পাপ ভালোবাসার টানেই তো ফিরে এলো তোর ব‍্যাঙা। "


-''তাহলে বলো এসব খাবে না, তুমি ঐ দুষ্টু ব‍্যাঙ কনস্ট্যান্টিন এর মত হয়ে যাবে না। তুমি তো আমার ব‍্যাঙা, কারমেট দ‍্যা ফ্রগ। বলো বলো । '' দু হাতে কাকার বুকে ঘুসি মেরে চলেছে অবুঝ মেয়েটা। 

দুই হাতে নিজের কান ধরে নির্বাণ বলে -''আর হবে না, প্রমিস তিতির পাখি। ''

পরমা চোখের জল মোছে ওড়না দিয়ে। আর পবিত্র বাবুর মনে হয় ঐ সিনেমাটার থেকে এই সিনেমাটা হাজার গুন ভালো।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama