Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Himansu Chaudhuri

Tragedy

5.0  

Himansu Chaudhuri

Tragedy

শাস্তি

শাস্তি

2 mins
1.2K


হিমাংশু চৌধুরী


শাস্তি


নরেন টিকাদারই প্রথম দেখে বৌমা রাধার ডেডবডি পড়ে আছে বারদরজার চৌকাঠে। মুখে গ্যাঁজলা, চোখ বিস্ফারিত, দেখে মনে হচ্ছে সাপে কেটেছে। নরেন ভোর ভোর যাচ্ছিলো তার ক্ষেতে শ্যালো দিয়ে জল দিতে। লোকজনকে ডাকলো সাথে সাথে, সবাই উল্টেপাল্টে দেখলো, কই, সাপে কাটার নিশান তো নেই! রাধার শাশুড়ি বিমলা রায় দিলো, "বেধবা মেয়েছেলে রাতবেরেতে ঘরের বাইরে গেছিলো কেন? ও মাগীর স্বভাবচরিত্তির মোট্টে ভালো ছেলো না। কার সাথে আশনাই করতে ওখেনে গেছলো, কে জানে?"


রাধার স্বামী পরিতোষ বছর খানেক আগে শ্যালোর জন্য হুকিং করতে গিয়ে কারেন্ট খেয়ে মারা যায়। রাধার বাবা মা নেই, মামারা বিয়ে দিয়ে হাত ঝেড়ে ফেলেছে। অতএব বিধবা রাধা শ্বশুরবাড়িতেই থেকে গিয়েছিল, বাধ্য হয়ে।


পুলিশ এসে বডি নিয়ে গেলো। অপঘাতে মৃত্যু। ময়নাতদন্ত হবে।


গ্রামের লোকেরা বিমলার সাথে একমত হলো। বিধবা মেয়েমানুষ রাতের বেলায় ঘরের বাইরে যাবেই বা কেন? প্রেমপিরীতির ব্যাপার নিঘ্ঘাত। তায় গতকাল অমাবস্যা ছিলো। আঁধার রাতে লুকিয়ে আশনাই জমে ভালো!


মাসতিনেক পরে রিপোর্ট এলো। রাধা দু' মাসের পোয়াতি ছিলো। ধুতরো ফুলের বীজ খেয়ে মরেছে। বিধবা মেয়েছেলে, জানাজানি হলে লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহত্যা বলে রিপোর্ট দিয়ে পুলিশ হাত ধুয়ে ফেললো।


সকলের যেটা এতদিন সন্দেহ ছিলো, সেটা মান্যতা পেলো পুলিশের রিপোর্টে। বিমলা বললো, "আগেই বলিচি, ও মাগী ঢলানি ছিলো। বেধবা মেয়েছেলে, পূজোঅাচ্চা নিয়ে থাক, তা না, সাজো রে, গোজো রে! এত বাই কিসের এখন বোঝা গেলো।"


বিমলা নাম করা খাণ্ডারনি। গ্রামের সবাই আবার একমত হলো, রাধা ঢলানি ছিলো বটে। সোমত্ত মেয়েমানুষ, বিয়ের একবছরের মধ্যে বিধবা, অনেকেরই নজর ছিলো ওর উপর। তারা গোপনে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে ভাবলো, কোন শালা ক্ষীর খেয়ে গেলো কে জানে?


নরেন টিকাদার হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। পুলিশ অবশ্য সুযোগ বুঝে কিছু টাকা খিঁচে নিয়েছে। দীঘির পারে একবিঘা জমিটা বেচতি হলো বটে, সে যাই হোক, ঝামেলাটার হাত থেকে রেহাই তো পাওয়া গেলো। আর ওরকম আগুনের খাপরা বেওয়ারিশ মেয়েছেলে ঘরে থাকলে লোভ হবে না? পুরুষ মানুষ তো বটেই । হুঁ হুঁ বাওয়া, এই ষাট বছর বয়সেও জোর আছে তালে এখনো! গর্বে ফুলে ওঠে সে। তা আত্মঘাতীই হবি, আর দু'মাস পরে হলেও তো পাত্তিস। আর দুটো মাস খেয়ে নিতুম! অবিশ্যি, পেট ফুলে বিমলা টের পেয়ে গেলে কুরুক্ষেত্তর করতো।


আর বিমলা ভাবছিলো, পুরুষমানুষের কোন বিশ্বাস নেই গো! ক'দিনের জন্য বাপের বাড়ি গেছি কি যাইনি, বাড়িতে ডবকা মেয়েছেলে দেখেই নোলা অমনি সকসক করে উঠেছে। সম্পক্কো অসম্পক্কো রেয়াত করলো নি! আর তুইও বাপু তেমনি বেবুশ্যে মেয়েছেলে। সোয়ামী নেই তো নেই, তা বলে তুই শ্বশুরের সাথে ঢলাবি? আমারও নাম বিমলা, আমার সঙ্গে ঢ্যামনাগিরি!


মাসতিনেক পরে নরেন টিকাদারও মারা গেলো। রাত্রে শুতে গেলো ভালো মানুষ, সকালে ঘুম থেকে উঠে বিমলা দেখে মানুষটা নড়ছে চড়ছে না, বাহ্যি, পেচ্ছাপ করে ফেলেছে বিছানাতেই। ডাক্তার এসে দেখে টেখে বললো, ঘুমের মধ্যেই স্ট্রোক।


বিমলা ততক্ষণে একটা গোটা বালিশ চোখের জল ফেলে ভিজিয়ে ফেলেছে।


কিস্তিমাৎ।


(সমাপ্ত)


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy