Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Ipsita Ghosh

Romance Comedy

2.3  

Ipsita Ghosh

Romance Comedy

মুগাম্বি

মুগাম্বি

9 mins
10.4K


''দ্যাখ দ্যাখ, তোর মুগাম্বি এই দিকেই আসছে। দেখলেই মনে হয় এখুনি সব কিছুকে ফায়ার করে দেবে।” বলেই দর্পণের দিকে তাকিয়েই ফ্যাক্ ফ্যাক্ করে হাসতে থাকল পাড়ার মিন্টুটা। দর্পণ কটমট করে তাকিয়েই পর মুহুর্তেই হেসে ফেলল। একটা ঘুঁষি পাকিয়ে লাজুক একটা হাসি হেসে বলল, -“ দ্যাখ, ভালো হবে না বলছি। আমি কিছু বলি না বলে তোরা যা খুশি বলে যাবি ওকে নিয়ে। বিয়ের পর এইসব শুনলে তোদের কিন্তু কেলিয়ে শেষ করে দেব।” এরমধ্যেই অগ্নিতা কাছাকাছি এসে পড়াতে দর্পণ গুডি বয়ের মতো মুখ করে অগ্নিতার দিকে তাকিয়ে থাকল। একবার চোখাচুখি হতেই অগ্নিতা চোখ সরিয়ে নিয়ে চলে গেল।“বুকের মধ্যে যেন একটা মিশাইল ছুড়ে দিয়ে গেলো রে” দর্পণ বুকে হাত বোলাতে বোলাতে বলল ।

''মিন্টু,-আচ্ছা তোর ব্যাপারটা আমি ঠিক বুঝতে পারি না। তুই হল গিয়ে বরাবর ফাজিল টাইপের ছেলে। এখন মোটামুটি সফটওয়ারে ভালোই চাকরি করছিস, অফিসে কতো মেয়ে ,স্ক্যান্ করে তাদের থেকে কাউকে বেছে নে না। তা না, ঐ গোমড়ামুখো অগ্নিতার পেছনে পড়ে আছিস, যে কি না তোকে পাত্তাও দেয় না।” 

দর্পণ- “ এই ব্যাথা তো আর আজকের না , যবে থেকে ওরা এই পাড়ায় এলো তবে থেকে। সেই যে বারান্দায় পায়চারি করে পড়ত, তবে থেকে। ওর ঐ মুখের মধ্যে গনগনে আগুনের  আঁচের মতো একটা বিউটি আছে। একদিন বুঝলি, বাস স্টাণ্ডে দাঁড়িয়েছিল, মনে হয় বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিল তাই হয়ত মুখটা বেশ হাসিহাসি ছিল। আমি তক্কে তক্কে সেল ফোনে একটা ফটো তুলে নিয়েছি।” তাড়াতাড়ি মিন্টুকে ফটোটা দেখালো।

মিন্টু মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে বলল “ এটা তো একদম রেয়ার কালেকশান, মিউজিয়ামে দিয়ে আসতে পারিস। সত্যি বস্‌ , তোমারই হবে। ” বলেই পোঁ পা ছুট্। মনে মনে ভাবল এই মিন্টুটার সঙ্গে মনের কথা বলে বেকার সময় নষ্ট করল, ওরা মজা করবার জন্যেই বসে আছে। অগ্নিতার কথা ভেবে আবার মনটা একটু খারাপ ও হয়ে গেল। কবে যে জানতে পারবে অগ্নিতার  মনের  কথা ? এদিকে মা বিয়ের জন্যে তাড়া দিচ্ছে। একবার নিজেই একটা লাভ লেটার দিয়েছিল অগ্নিতাকে কিন্তু তার উত্তর এখন ও পায়নি। যাই হোক ঐসব না ভেবে স্যুটকেস গোছানোটা এখন বেশি দরকার, দু মাসের জন্যে আজ দর্পণকে অস্ট্রেলিয়াতে যেতে হবে। ফিরে এসে হয়ত মাকেই এই ব্যাপারে এগনোর জন্যে বলতে হবে।

               আজ অগ্নিতার ভালো কাজের চাপ ছিল। ইন্সটিটিউটের একজন স্যার আসেনি তাই তার জাভার ক্লাসটাও ওকেই নিতে হল শেষ পর্যন্ত। আপাতত কম্পিউটার রুমটা ফাঁকা, রেস্ট নিতে নিতে হঠাৎ মনে হল দর্পণের কথা। বেশ কয়েকদিন বাস স্ট্যাণ্ডে ওকে দেখতে পায়নি । শেষ দেখা হয়েছিল এক সপ্তাহ আগে, সঙ্গে আবার চ্যাংড়া মিন্টুটাও ছিল। হঠাৎ সেল ফোনটা বেজে ওঠাতে চমকে উঠে দেখল টিঙ্কির নাম্বার। টিঙ্কি নাকি একটা কাজে আটকে গেছে তাই অগ্নিতার কাছে আসতে আসতে এক ঘন্টা হয়ে যাবে। আজ আসলে টিঙ্কির সঙ্গে ফোরামের  মাল্টিপ্লেক্সে  একটা সিনেমা দেখতে যাওয়ার কথা। এখন ইন্সটিটিউট থেকে অনেকেই বেরিয়ে গেছে, শুধু গুঞ্জনদা শেষের একটা ক্লাস নিচ্ছে। তাই টিঙ্কির না আসা পর্যন্ত কিছু করার নেই ইন্টারনেট ব্রাউস করা ছাড়া। মেল চেক করার জন্যে মেল বক্সটা খুলেই দেখলো ফেসবুকে শ্রেষ্ঠা বলে কেউ একটা মেসেজ লিখেছে আর ফ্রেণ্ড রিকোয়েস্ট ও পাঠিয়েছে। এই নামের কাউকে চেনে না অগ্নিতা তবে এরকম অচেনা লোকজন ফ্রেণ্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতেই থাকে কিন্তু ও সেগুলোকে পাত্তাই দেয় না। ফেসবুকে গিয়ে মেসেজটা পড়ে দেখল যে শ্রেষ্ঠা বলে মেয়েটা লিখেছে, গানের একটা কমিউনিটি থেকে ওকে খুঁজে পেয়েছে। বম্বে থেকে চাকরির জন্যে কলকাতায় এসেছে, তাই এখানে বন্ধু করতে চায়। মেয়েটার কথা শুনে ওর নিজের কথা মনে পড়ে গেলো। ওরা যখন প্রথম আসাম থেকে কলকাতায় এলো কতদিন কোন বন্ধু ছিল না, কিরকম একা একা লাগতো। এমনিতে একটু মুখচোরা তাই বন্ধু ও হাতে গুনে কজন। কিন্তু চ্যাটে সেইদিক থেকে মনখুলে অনেক কথা বলতে পারে কারণ, ওখানে তো আর মুখে কথা বলার কোন দরকার পড়েনা, লেখালেখিতেই কথা হয়ে যায়। যাই হোক শ্রেষ্ঠার প্রোফাইল ফটোটা দেখে বোঝা যাচ্ছিল বেশ একটা বাচ্চা মিষ্টি মেয়ে। ওকে তাই নিজের ফ্রেণ্ডে এ্যাড্ করে নিল। প্রোফাইলে গিয়ে মনে হল নতুন এ্যাকাউন্ট খুলেছে তাই বন্ধুর সংখ্যাও খুব কম।

                      পরের দিন ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ঢুকে দেখে শ্রেষ্ঠা তখন অনলাইনে আছে। অগ্নিতা নিজের থেকে কিছুই বলল না কারণ ও চট করে নতুন কারোর সঙ্গে কথা বলতে পারে না। কিছুক্ষণ  পরে শ্রেষ্ঠাই ওকে পিং করলো। অগ্নিতাও ওকে জবাব দিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ কথা বলার পর অগ্নিতার বেশ ভালোই লাগছে, বেশ মিশুকে মেয়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কিরকম আপন করে নিয়েছে। ওর গান শেখার ইচ্ছে তাই অগ্নিতা ওর নিজের  গানের স্কুল 'দক্ষিণীর' নামটা বলে দিল। শুনে শ্রেষ্ঠা বেশ উৎসাহ পেলো। আসলে ওর মা- বাবা বম্বেতেই আছে এখনো, তাই ছুটির দিনগুলি খুব একা একা লাগে। গান শেখার মধ্যে দিয়ে সেই ব্যাপারটা অনেকটা পুষিয়ে যাবে। শ্রেষ্ঠা অগ্নিতাকে ফোনে কথা বলা বা ভিডিও বা ভয়েস চ্যাটের জন্য জোরে করেনি, তাই অগ্নিতাও বেশ স্বচ্ছন্দ। ও এমনি চ্যাট্-ই বেশি পছন্দ করে, আর শ্রেষ্ঠার মতো ও তো আর ভালো কথা বলতে পারে না। এরপর বেশ মাঝে মাঝেই চ্যাট হয় শ্রেষ্ঠার সঙ্গে। অগ্নিতা আর শ্রেষ্ঠার মধ্যে নিজেদের অফিস নিয়ে, সিনেমা নিয়ে, আশে পাশে কি কি হচ্ছে সে সব নিয়ে বেশ ভালোই আড্ডা হয়। 

 

                                   হঠাৎ একদিন অগ্নিতার মনে হল শ্রেষ্ঠার মনটা একটু খারাপ। নাহলে ও নিজেই বকবক করে, আজ যেন একটু চুপচাপ।

 “আজকে তোমার কি হয়েছে ? এতো চুপচাপ কেনো?” -অগ্নিতা

 “ না আসলে এক মাস আগে এই দিনে আমার বয়ফ্রেণ্ডের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়, তাই আজ বারবার ওর কথা মনে হচ্ছে আর মন ও খারাপ হয়ে যাচ্ছে।”- শ্রেষ্ঠা

 “ ওহ, সরি। আমি ঠিক বুঝতে পারিনি তাই তোমাকে জিজ্ঞাসা করে ফেলেছি।”- অগ্নিতা

 “না না, এতে তোমার কি দোষ। তুমি আমার কথা ভাবো বলেই তো আমাকে জিজ্ঞাসা করেছ। সব দোষ আসলে আমার ভাগ্যেরই। যাই হোক এই সব কথা বলে আমি আর তোমাকে বোর করবো না। এবার তোমার প্রেম কাহিনী শুনি, তাহলে তাও আমার ভালো লাগবে। ”- শ্রেষ্ঠা

 “আমার আবার কি প্রেম কাহিনী থাকবে। লোকের সঙ্গে মিশতে পারি না।”- অগ্নিতা

 “তাতে কি হয়েছে ? এতে প্রেম করতে বাধা কোথায়? তুমি এতো সুন্দর দেখতে, তোমাকে কোনো ছেলের পছন্দ হয়নি এটা ঠিক মানতে পারছি না।”- শ্রেষ্ঠা

অগ্নিতা একটু হেসে লিখল, “ হ্যাঁ , আছে একজন। তুমি কি করে জানলে?”

 “ একটা অনুমান করলাম আর সেটা লেগে গেল। তা সে কে? কি একটু বলো শুনি। এতোদিন লুকিয়ে রেখেছিলে তাহলে।”- শ্রেষ্ঠা

 “ না না, লুকিয়ে রাখার কিছু নেই। তুমি যেরকম ভাবছো সেরকম কিছুই না এখনো। সে আমাদের পাড়ায় থাকে। রাস্তায় বেরোলে সামনা সামনি হয়ে গেলে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। একবার একটা লাভ লেটার ও দিয়েছিল ।”- অগ্নিতা

 “ কিছু না এখনো, মানে ভবিষ্যতে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলো।”- শ্রেষ্ঠা

 “ আরে তুমি ও না, ওই কথা নিয়েই পড়েছো।”- অগ্নিতা

 “ ঠিক আছে, শুধু এটা বলো লাভ লেটার পাওয়ার পর হ্যাঁ বা না কি জবাব দিলে ?”- শ্রেষ্ঠা

 “ কিছুই না, আসলে সেটা লিখে উঠতে পারিনি, সঙ্কোচে। জানোই তো প্রথমে ঠিক আমি জড়তা কাটিয়েই  উঠতে পারি না। তোমার সঙ্গে মনের কথা বলতে পারি কারণ তুমি এতো মিশুকে ।”- অগ্নিতা

 “আচ্ছা, ছেলেটা কি তাহলে মিশুকে, না গম্ভীর ? ”- শ্রেষ্ঠা

 “ হ্যাঁ, খুব মিশুকে, পাড়ায় সেই জন্যে বেশ জনপ্রিয়ও। বুঝতেই পারছো আমরা দুজনেই  একদম উলটো। তাই বুঝতে পারি না আমাকে কি করে ও পছন্দ করে”- অগ্নিতা।

 “ কার যে কি পছন্দ হয়ে যায় তা কেউ বলতে পারে না। আর তুমি বলছো ছেলেটি ও একই পাড়ায় থাকে , তাহলে সে তোমার স্বভাব খুব ভালো করেই জানে। তুমি যে এতো শান্ত, স্নিগ্ধ সেটাই হয়তো তার ভালো লেগেছে। সব সময় জানবে বিপরীত মেরু একে অন্যকে আকর্ষণ করে।”- শ্রেষ্ঠা।

 “ বাব্বা, তোমার সত্যি বোঝা যাচ্ছে বেশ অভিজ্ঞতা আছে এই ব্যাপারে।”- অগ্নিতা

 “ হ্যাঁ, সে তো আছেই। সেই কলেজ থেকে। আচ্ছা, এই সব জ্ঞানের কথা রাখো এবার, তোমার মনের কথাটা শুনি। সত্যি করে বলো তোমার কি কিছু মনে হয় না মানে, এই ধরো সে যখন তোমাকে দেখে বা যখন লাভ লেটারে প্রেম নিবেদন করে ?”- শ্রেষ্ঠা

 “ হ্যাঁ, ভালোই লাগে। মনে হয় আমার জন্যে তাও কেউ আছে। যে আমাকে পছন্দ করে। না হলে বাকিরা তো আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে। ইদানিং ওকে কয়েকদিন দেখতে পাচ্ছি না। হয়তো কোথাও গেছে।”- অগ্নিতা

 “ তার মানে তুমিও ওকে রাস্তায় বেরোলে দেখতে চাও। কি ঠিক তো ?”- শ্রেষ্ঠা

 “ হ্যাঁ, তোমাকে বলতে লজ্জা নেই। রাস্তায় বেরোলেই আমার চোখ সব সময় ওকেই খুঁজতে থাকে ” -অগ্নিতা ।

“ এতোই যখন তাকে মিস করছো তাহলে বলোই না বাবা যে তুমি ও ওকে ভালোবেসে ফেলেছো।”- শ্রেষ্ঠা

 “ হ্যাঁ, হয়তো তাই। সত্যি এখন ওকে না দেখে আর থাকতে পারছি না।”- অগ্নিতা

 “ দূরত্বই হয়তো তোমাকে ভালোবাসার অনুভব করিয়েছে। যখন কাছে ছিল তখন তার কদর করোনি, আর দূরে যাওয়াতে না দেখে থাকতে পারছো না। আচ্ছা, তোমার কথা তো শুনলাম। এবার আমার নতুন প্রোফাইল ফটোটা দেখে বলতো কেমন হয়েছে ?”- শ্রেষ্ঠা

অগ্নিতা শ্রেষ্ঠার প্রোফাইল ফটোটা দেখে একেবারে হাঁ হয়ে গেছে। এ কি ! এতো দর্পণের ফটো।

 “ আগে বল ,তুমি দর্পণের ফটো কি করে পেলে ? তুমি কি ওর বোন বা বান্ধবী?”- অগ্নিতা

 “ আর বোন বা বান্ধবী না হয়ে যদি আমি নিজেই দর্পণ হই তাহলে ?”

 “ তার মানে ? আমি জানি তুমি মজা করছো”- অগ্নিতা

 “ না নিতা, আমি সত্যিই তোমার সঙ্গে কোন মজা করছি না। আমার কাছে তোমার মনের কথা জানবার আর কোন উপায় ছিল না, মেয়ে সাজা ছাড়া। আজকে তুমি শ্রেষ্ঠার কাছে যে কথাটা বলেছো হয়তো জীবনেও আমাকে বলতে পারতে না। এটাই আমার সারা জীবনের দুঃখ থেকে যাবে যে, আমাকে তুমি ভালোবাসো সেই কথাটা আমার আগে তুমি অপরিচিত একটি মেয়েকে বললে। যা শোনার অধিকার সবার আগে আমার ছিল সেটা তুমি শ্রেষ্ঠাকে দিয়ে দিয়েছো। এখন আর নিশ্চই আমার সঙ্গে আর তুমি কোন দিনই কথা বলবে না। তাই এখন আমার মনকে সেই ভাবেই তৈরী করে নেওয়াই ভালো।”- দর্পণ

এই কথা শুনতে শুনতে অগ্নিতার চোখ দিয়ে সমানে জল পড়ে পড়ে যেন ওর সমস্ত সঙ্কোচ লজ্জাকে ধুয়ে দিচ্ছিল। শেষের কথা গুলোতে ও আর নিজেকে আটকাতে পারলো না।

 

“প্লিজ, পার যদি আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো। তুমি আমাকে আমার মনের প্রতিচ্ছবি দেখিয়ে দিয়েছো। না হলে হয়তো আমি কোনদিনই স্বীকার করতে পারতাম না যে আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি জানি এটাই আমার চরিত্রের নেগেটিভ দিক। তুমি পাশে থাকলে আমি হয়তো নিজের এই কমজোর দিকটা কাটিয়ে উঠতে পারবো। জানি অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমাকে, কিন্তু তোমাকে বলতে যেন আমার ইগোতে লাগছিল। কিন্তু আজ সেই সব ইগো ধুয়ে মুছে গেছে। জানি তুমি আমার থেকে অনেক ভালো মেয়ে পেতে পারতে, কিন্তু তাও তুমি আমার জন্যে যখন এতোদিন অপেক্ষা করেছো আজ প্লিজ আমাকে ছেড়ে আর কোথাও যেও না ।”- অগ্নিতা

 “ ঠিক আছে, মাকে তাহলে তোমাদের বাড়িতে গিয়ে পাকা কথা বলার জন্যে বলে দি, না হলে হয়তো মা অন্য কোন মেয়েকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দেবে। আমার ফিরতে ফিরতে আরো দু সপ্তাহ হয়ে যাবে । তারপর গিয়ে না হয় বাকি  প্রেমটুকু করা যাবে। কি মুগাম্বি খুশি তো।”- দর্পণ

 “ কি আমাকে মুগাম্বি বলা হচ্ছে? দাঁড়াও ফিরে এলে তোমার মজা দেখাচ্ছি।”- অগ্নিতা

“ আমার কি দোষ বল? পাড়ার ছেলেরা তোমার গম্ভীর গম্ভীর  হাবভাব দেখে মিস্টার ইণ্ডিয়া সিনেমার মুগাম্বোর ফিমেল ভারসান্ করে তোমার নাম  দিয়েছে। তবে এরপর যদি আমার গার্লফ্রেণ্ডকে নিয়ে ইয়ার্কি মারে তাহলে সোজা দু -চার ঘা দিয়ে দেবো।” -দর্পণ

 অগ্নিতা হাসতে হাসতে বলল, “ ঠিক আছে বাবা। আচ্ছা, একটা কথা বলো শ্রেষ্ঠার প্রোফাইলে আগে যে মেয়ের ফটো ছিল সেটা কি তোমার কোন বান্ধবী?”

 “ এবার অন্যদিক থেকে একটু যেন সন্দেহ মাখানো পোড়াপোড়া গন্ধ পাচ্ছি। তবে এখন আর আমার কোন সন্দেহ  নেই, বোঝা যাচ্ছে আমার প্রেমে তুমি কতটা হাবুডুবু খাচ্ছো। ও আমার পিসতুতো দিদির মেয়ে, মানে আমার ভাগ্নী। নামেই ভাগ্নী, ও আসলে আমার বোন কাম বন্ধু। ওকে প্ল্যানটা বলাতে ও নিজেই ওর ফটো লাগাতে বলেছিল প্রোফাইলে। তবে চিন্তা নেই ওর নাম শ্রেষ্ঠা না শ্রেয়া।” -দর্পণ ।তারপর দুজনেই হাসতে লাগলো।

        বউভাতের দিন মিন্টু আর পাড়ার অন্য ছেলেরা বিয়ে বাড়ির সামনে এসে চোখ পুরো ছানাবড়া। সামনের গেটে ফুল  দিয়ে লেখা আছে “দর্পণ( মুগাম্বো) ওয়েডস অগ্নিতা( মুগাম্বি )”। ওপরে গিয়ে মিন্টু প্রায় অগ্নিতার পায়ে পড়ে আর কি “ আমাদের প্লিজ ক্ষমা করে দাও বৌদি। আর কখনো ওই নামে ডাকবো না।” 

অগ্নিতা হাসতে হাসতে বলল, “ আরে আমার পছন্দ হয়েছে বলেই তো সামনের গেটে লেখাতে বলেছি। কতো ইনোভেটিভ চিন্তা তোমাদের। এতোদিন ভালো করে জানতেই পারিনি। তোমরা তো একদম কুল ডুড ।” 

মিন্টুর মুখ পুরো হাঁ হয়ে গেছে, নিজের কানকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না। যে মেয়েকে জীবনে কোনদিন হাসতে দেখে নি, সে কিনা হাসতে হাসতে ওকে বলছে কুল ডুড!

অগ্নিতার মিন্টুর এই অবস্থা দেখে বেশ মজা লাগছিল, বলল, “ অতো ভেবো না, কোল্ড ড্রিঙ্কস খাও আর জাস্ট চিল্” ।

মিন্টুর প্রায় এবার ভিরমি খাওয়ার জোগাড়। পাশে রাখা একটা খালি চেয়ারে ধপ্ করে বসে পড়ে দর্পণের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো “কি করেছিস রে ?”।

দর্পণ- “ এখন কি আমার টাইপের বলে মনে হচ্ছে ?”

মিন্টু- “ একদম হান্ড্রেড পার্সেন্ট, মেড ফর ইচ আদার।” 

অগ্নিতা, দর্পণ দুজনে হো হো করে হেসে উঠলো।


Rate this content
Log in

More bengali story from Ipsita Ghosh

Similar bengali story from Romance