Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer
Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer

Sayandipa সায়নদীপা

Drama Horror

3.5  

Sayandipa সায়নদীপা

Drama Horror

সে

সে

8 mins
2.0K


সন্ধ্যে থেকে একনাগাড়ে বৃষ্টি পড়ে চলেছে। বৃষ্টির ঝমঝম শব্দটা শুভর বরাবরের পছন্দ, কিন্তু আজ মনে হচ্ছে যেন প্রতিটা বৃষ্টির ফোঁটা শলাকার মত এসে বিঁধছে তার বুকে। আগে এরকম বৃষ্টিভেজা রাতগুলো কাটত হিমানীর সাথে ফোনালাপে, সকাল হত মায়ের হাতে তৈরি ধোঁয়া ওঠা চায়ের চুমুক দিয়ে... আর কি কোনোদিনও শুভ ফিরে পাবে সেসব দিন! এখনও চোখটা বন্ধ করলেই বৃষ্টির শব্দ চাপা পড়ে গিয়ে ওর কানে যেন বেজে উঠছে বাবার তীক্ষ্ণ কণ্ঠস্বর, 

“সোমবাবুর ছেলে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করার দেড়বছরের মাথায় চাকরি পেয়ে গেল, আর তুমি! তিন বছর কেটে গেল তাও কিস্যু করতে পারলেনা! কলকাতায় থেকে কম্পিটিটিভ এক্সামের প্রিপারেশন নেওয়ার নামে আদৌ যে কি করছ সেই নিয়ে এখন যথেষ্ট সন্দেহ হচ্ছে আমার।” 

বাবা তো অমন করে কথা প্রায়ই বলে থাকেন, শুভ এসব এতদিন গায়ে মাখতো না বিশেষ, কিন্তু সেদিন বাবার রুক্ষ শব্দগুলোর থেকেও ওকে আরও বেশি আঘাত করেছিল মায়ের মৌনতা। মৌনতাই তো সম্মতির লক্ষণ, তার মানে মাও আর বিশ্বাস রাখতে পারেননি শুভর ওপর! তার ওপর এই পরিস্থিতিতে যাকে পাশে সবথেকে বেশি দরকার ছিল সেই হিমানীও তো ওর কোনো কথা শোনার আগেই বললো যে সে আর এভাবে অপেক্ষা করতে পারছেনা, তার বাড়ির লোকেরা নাকি বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে ক্রমাগত!


  এখানে সারাটা দিন কাজের মধ্যে কাটে কিন্তু রাত নামলেই যখন সবাই একে একে বাড়ি চলে যায় তখন থেকে একটা ভয়ঙ্কর খারাপ লাগা গ্রাস করতে শুরু করে শুভকে, শ্বাস নিতেও যেন কষ্ট হয়। আসলে শুভ বোঝে বাতাসের অক্সিজেনের বাইরেও আর একটা অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় মানুষের যেটা হলো আপনজনদের সঙ্গ। এখানে সেই অক্সিজেনটাই যে বিন্দুমাত্র নেই ওর কাছে, তাই এই শ্বাসকষ্ট। 


  “শুভজি?” একটা অপরিচিত মেয়েলি কন্ঠস্বর আসতেই চমকে উঠল শুভ, ডিম লাইটের আলো-আঁধারীতে আচমকাই শুভর সামনে স্পষ্ট হলো একটা নারী অবয়ব, পরনের পোশাকের রংটা বোধহয় সবুজ। ধড়পড় করে উঠে বসল শুভ, অসচেতন ভাবেই নিজের মাতৃভাষা বেরিয়ে এলো মুখ দিয়ে, “কে?” তারপরেই খেয়াল পড়তেই নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কৌন?”

“ম্যায়? সোচ লি জিয়ে ম্যায় হুঁ এক পরি, খুশিওঁ কি দেবী নে জিসে ভেজা হ্যা আপকে গুমসুম চেহেরে পে থোড়ি সি মুসকান লানে কে লিয়ে।” কথাটা বলেই খিলখিল করে হেসে উঠল মেয়েটা।

“কি!”

“হাঃ হাঃ ডর গ্যায়ে ক্যায়া? আরে ডরিয়ে মত, ম্যায় তো মজাক কর রহি থি। ম্যায় হু মুসকান।”

“মুসকান! রামরতন জি কি বেটি মুসকান?” 

“জি।”

“হাঁ কাল হি রামরতন জি সে তুমহারা নাম শুনা থা। পর তুমি ইঁহা...?”

“হাঁ জনাব ম্যায় ইঁহা… আজ রাত আপনে খানা নেহি খায়া না?”

“তুমহে ক্যায়সে পাতা?”

“বাবা নে বাতায়া কি বারিষ কি ওয়াজা সে আপ খানে কে লিয়ে বাহার নেহি যা পায়ে, অউর ইসিলিয়ে মেরি আম্মি নে খানা ভেজা হ্যা আপকে লিয়ে।”

“রিয়েলি! আই কান্ট বিলিভ। ম্যায়নে শুনা তো থা গেস্ট কি খাতিরদারী করনে মে তুম গুজরাটি লোগোকা জবাব নেহি, পর আজ দেখ ভি লিয়া। থ্যাংক্স এ লট মুসকান, ম্যায় তো আজ ভুখা হি শোনে কা প্ল্যান বনা রাহা থা।”

“পতা হ্যা মুঝে। কাল ভি আপনে এইসা হি কিয়া থা।”

“হাঁ, পর এক বাত বতাও তুম অন্দর ক্যায়সে আয়ি?”

“আপ পিছে কা দরওয়াজা লাগানা ভুল গ্যায়ে থে। ও খুলা দেখা তো ম্যায় সিধা অন্দর চলি আয়ি। সরি…”

“আরে ইটস ওকে।”

“শুভজি…”

“হাঁ?”

“আপ বুরা না মানে তো এক বাত বোলু?”

“বোলো।”

“আপ না মেরে বাবা ইয়া কিসি অউর কো মত বাতানা কি ম্যায় আপকে লিয়ে খানা লায়ি, প্লিজ?”

“পর কিঁউ?”

“কিঁউকি… আপ ক্যায়া সচমে সমঝ নেহি পা রহে হ্যা?”

“ওহ...আই ক্যান আন্ডারস্ট্যান্ড। তুম বেফিকর রহো। এন্ড থ্যাংক ইউ সো মাচ, আন্টি কো ভি থ্যাংক্স কেহেনা মেরি তরফ সে। রিয়েলি আই কান্ট বিলিভ তুমনে অউর আন্টিজি নে ইতনা রিস্ক লেকে মেরে লিয়ে খানা ভেজা…”

“জি ম্যায় অভি চলতি হুঁ।”

  এই বলে আর এক সেকেন্ডও দাঁড়ালো না মেয়েটা, ছুটে চলে গেল রুদ্ধশ্বাসে। ও চলে যাওয়ার দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল শুভ। তারপর আলতো হেসে খাবারের প্রথম গ্রাসটা মুখে তুলল। খাবারটা জিভের মধ্যে মিশে যেতেই চোখে জল চলে এল শুভর, পৃথিবীর সব মায়েদের রান্না বোধহয় এমনই সুস্বাদু হয়। আজ থেকে ঠিক দিন সাতেক আগে বাবা ওরকম করে অপমান করার পর শুভ নিঃশব্দে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসে, উঠে পড়ে একটা গুজরাটগামী ট্রেনে। তখনও কি ট্রেন কোথায় যাচ্ছে কিছুই খেয়াল করেনি, কেমন একটা ঘোরের মধ্যে ট্রেনের দরজার কাছে ব্যাগটা জড়িয়ে বসে থাকে ও। যথাসময়ে টিটি এসে টিকিট চাইলে সম্বিত ফেরে ওর কিন্তু বেশি ঝামেলা হওয়ার আগেই হঠাৎ দেবদূতের মত ওদের সামনে হাজির হয় জিগর জুনেজা, শুভর কলেজমেট। যদিও ডিপার্টমেন্ট আলাদা ছিল তাও ফেস্টের দিন আলাপ হয়ে ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল দুজনের। জিগর কোনোভাবে টিটিকে ম্যানেজ করে শুভকে নিয়ে গিয়ে বসায় নিজের সিটে। তারপর সব শুনে যথারীতি ওকে বলে বাড়ি ফিরে যেতে কিন্তু শুভও নাছোড়বান্দা সে কিছুতেই ফিরবেনা বাড়ি। অগত্যা শুভকে জিগর নিয়ে আসে গুজরাটে নিজের বাড়িতে। তারপর ওদের কাপড়ের দোকানে শুভকে বহাল করে কাজে। শুভ বুঝতে পারছিল নিজের বন্ধুকে দোকানের সামান্য কর্মচারীর হিসেবে দেখতে জিগরের খুবই সংকোচ হচ্ছে কিন্তু শুভ নিজে মনে শান্তি পেয়েছিল, ভেবেছিল ওর মতো অবহেলিত বেকার মানুষের জন্য এই ঢের। জিগর চেয়েছিল শুভকে নিজের বাড়িতে রাখতে কিন্তু শুভই রাজি হয়নি। তাই দোকানেরই একদিকে পুরোনো গোডাউনের পাশের একটা ছোট্ট ঘরে ওর থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। শুভ জানে ওর ঘরটার ঠিক নিচেই দারোয়ান রামরতন থাকে সপরিবারে, শুভ অবশ্য যায়নি কখনো তার বাড়ি।


******************************************************************


  কিছু কিছু মানুষ থাকে যারা প্রথম আলাপেই খুব আপন হয়ে যায়, মুসকানও ঠিক সেইরকম। এখন বর্ষাকাল, প্রায়দিনই বৃষ্টি নামছে আর সেই সাথে ক্রমাগত আদ্র হয়ে চলেছে শুভর মন। ও জানে রাতে বৃষ্টি নামলে মুসকান ঠিক আসবে খাবার নিয়ে। মেয়েটার সাথে কথা বললে শুভ যেন ভুলে যায় নিজের সব দুঃখ-কষ্ট, আপনজনদের ছেড়ে আসার যন্ত্রনা। মাঝে মাঝে শুভর মনে হয় সত্যিই বোধহয় খুশির দেবী ওর মুখে “মুসকান” আনতে মুসকানকে পাঠিয়েছেন ওর কাছে। মেয়েটা বোধহয় সবুজ রং খুব ভালোবাসে, রোজই সবুজ রংয়ের কামিজ পরে আসে। সবুজের মতোই সতেজ ওর মনটাও। বাবার ভয়ে এখানে বেশিক্ষন থাকেনা সে কিন্তু ওর ওই ক্ষনিকের উচ্ছল হাসি, নুপুরের রিনরিন শব্দ শুভকে সারাটা দিন আনন্দে থাকার একটা কারণ দিয়ে যায়। আজকাল তো যেদিন বৃষ্টি হয়না সেদিন শুভর মন খারাপ থাকে। শুভ অবাক হয়ে ভাবে আবার কি তবে ও হারিয়ে ফেলছে ওর মন! নিজের অজান্তেই ওর চোখের সামনে ভেসে ওঠে মুসকানের মুখটা, সে যেন ওর বুকে মাথা রেখে বলছে, “নিজের করে নাও আমায়”। শুভ ওর কপালে একটা চুমু দিয়ে ভাবে নাই বা হলো হিমানীর মত আধুনিকা, শিক্ষিতা; নাই বা থাকলো ওর কোনো হাইফাই সোশ্যাল স্ট্যাটাস তাও আজ মুসকানই ওর একমাত্র খুশির কারণ, বাঁচার নতুন তাগিদ। কিন্তু এসব ভাবতে ভাবতেই আবার বাস্তবের মাটিতে নেমে আসে শুভ, বুকটা কেঁপে ওঠে ওর...মুসকান যদি ওকে গ্রহণ না করে! কিংবা মুসকানও যদি হারিয়ে যায় হিমানীর মত! 


  আজ এক কাস্টমারের কাছ থেকে পেমেন্ট আনতে গিয়ে বৃষ্টিতে ভিজে গিয়েছিল শুভ, এমনিতেই ওর ঠান্ডা লাগার ধাত তার ওপর আবার বৃষ্টি… মাথাটা যন্ত্রনায় ছিঁড়ে যাচ্ছে, নিশ্বাসও ভারী হয়ে আসছে, জ্বরটা চলেই এলো মনে হয়! অসুস্থতার সময় একা থাকলে মানুষের বোধহয় সবচেয়ে বেশি অসহায় লাগে নিজেকে, শুভরও তাই লাগছে এখন। কাউকে একটা পাশে পেতে ভীষন ইচ্ছে করছে। হঠাৎ আলো আঁধারিতে ওর মনে হল কে যেন এসে দাঁড়িয়েছে সামনে… কে? হিমানী! নানা হিমানী এখানে আসবে কি করে এ নিশ্চয় মুসকান, খাবার নিয়ে এসেছে। শুভর মাথাটা ঘোরাচ্ছে, কেন মনে হচ্ছে সামনে হিমানী দাঁড়িয়ে! কেন ইচ্ছে করছে ওকে গিয়ে ছুট্টে জড়িয়ে ধরতে! নানা এ হিমানী নয়, এ মুসকান। শুভর অবাধ্য ইচ্ছেটাকে বাধা মানতেই হবে নাহলে মুসকান চরিত্রহীন ভাববে ওকে! ভাববে সুযোগ নিচ্ছে ও… জ্বরের ঘোরে এ কি সব ইচ্ছে হচ্ছে ওর! যে করে হোক নিজেকে সামলাতেই হবে ওকে। চোখের সামনে সব ঝাপসা লাগতে শুরু হয়েছে, মুসকান যেন মিলিয়ে যাচ্ছে সামনে থেকে… তবে কি জ্ঞান হারাচ্ছে শুভ!


  মাথায় অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে ঘুম ভাঙলো শুভর, অনেক বেলা হয়েছে বোধহয়। ঘরের কাছে কোলাহল শোনা যাচ্ছে খুব, কি হয়েছে কে জানে! কাল রাতে কি হয়েছিল, কিছুই তো মনে পড়ছে না। ঘোরের মধ্যে ও কোনো ভুল করে বসেনি তো!

একি এ কে ঢুকছে দরজা দিয়ে, হিমানী! হ্যাঁ, এতো সত্যি হিমানী, দিনের আলো ভুল করতে পারেনা। ছলছল চোখে মেয়েটা এসে জড়িয়ে ধরলো শুভকে, “কেন এমন করলি আমাদের সাথে! তুই নিজেকে ছাড়া কাউকে ভালোবাসিসনা তাই না! একটা ভীতু, কাওয়ার্ড কোথাকার… সবসময় সমস্যা থেকে পালানোর চেষ্টা তোর….” অভিমান ভরা গলায় আরও অনেক কিছুই বলে যাচ্ছে মেয়েটা। শুভ দেখল দরজা দিয়ে একেক করে ঢুকছে বাবা মা, ওদের চোখেও জল। ওদের দেখে শুভকে ছেড়ে সরে দাঁড়ালো হিমানি, বাবা এসে ওকে টেনে নিলেন বুকে, বাবার শরীরটা কেঁপে উঠছে মাঝেমাঝে। বাবা কাঁদছেন! শুভ দেখল জিগর ওদের দিকে তাকিয়ে হাসছে মুচকি মুচকি, তারমানে ওই খবর দিয়েছে এদের!


****************************************************************


  সব ভালোবাসার কোনো নাম থাকেনা, কোনো পরিণতি থাকে না। কিছুকিছু ভালোবাসা নিঃশব্দে এসে আমাদের ধূসর জীবনটাকে রাঙিয়ে দিয়ে আবার চলে যায়। মুসকানও ছিল শুভর সেই ভালবাসা, শুভর এখানে থাকার অক্সিজেন। যাওয়ার আগে একটিবার মেয়েটার সঙ্গে দেখা করে যাবে বলে স্থির করেছে শুভ।


   রামরতনের স্ত্রী সবজি কাটছিল মেঝেতে বসে, শুভকে দেখে তড়িঘড়ি উঠে দাঁড়ালো। 

“নমস্তে আন্টি, মুসকান ঘর পে হ্যা?” শুভ বুঝতে পারছে ওকে দেখে একটু অবাকই হয়েছেন মহিলা, ভ্রুটা কুঁচকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, “আপ?” 

“জি আন্টি ম্যায় হুঁ শুভ, ও কাম করতা থা উপর দুকান পে। ম্যায় ইঁহা সে যা রাহা হুঁ আপনে ঘর। অব ফিরসে সায়েদ কভি মুলাকাত নেহি হোগি।

আপ প্লিজ মুসকান কো বুলা দেঙ্গি, বাই বোলনা থা উসে...” হঠাৎ গলাটা যেন ধরে এলো শুভর।

শুভর কথাগুলো শুনে খানিকটা দ্বিধাগ্রস্ত গলায় হাঁক পাড়লেন মহিলা, “মুসকান…” 

ডাকামাত্রই ঘর থেকে বেরিয়ে একটা বছর দশকের মেয়ে এসে দাঁড়ালো শুভর সামনে। হতচকিত হয়ে শুভ জিজ্ঞেস করল, “মুসকান…?”

“জি?” 

“তুমহারি দিদি ঘর পর হ্যা..?”

“দিদি কাঁহা সে আয়েগি! ম্যায় তো ঘর কি এক লতি বেটি হুঁ।”

“তো ফির মুসকান কৌন হ্যা?”

“জি ম্যায় হি তো হুঁ মুসকান।”

“ক্যায়া! ইয়ে ক্যায়সে হো সকতা হ্যা! আগর তুম মুসকান হো তো ফির ও কৌন থি যো মেরে লিয়ে খানা লাতি থি?”

“হামে নেহি পাতা, হামনে কোয়ি খানা নেহি ভেজা।” অবাক হওয়া গলায় বলল রামরতনের স্ত্রী।

মাথাটা ঘুরতে শুরু করেছে শুভর; সবকিছু এলোমেলো লাগছে। সে তো বলেছিলো সে রামরতনজির মেয়ে, কিন্তু এরা তো বলছে… তাহলে কে ছিলো সে যে বৃষ্টি হলেই নিয়ম করে খাবার আনতো ওর জন্য... যে ওর ছন্দহীন জীবনটাকে আবার ছন্দ দিয়েছিল নতুন করে... যে ওকে দিয়েছিল বেঁচে থাকার অক্সিজেন ? কে সে? এখন কোথায় খুঁজবে শুভ তাকে? কেন সে মিথ্যে পরিচয় দিয়েছিল ওর কাছে?


   রামরতনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে কাঁপা কাঁপা পায়ে সিঁড়িতে উঠতে গিয়ে পুরোনো গোডাউনটার সামনে এসে হোঁচট খেলো শুভ। আর তখনই ওর চোখ পড়ল দেওয়ালের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অব্যবহৃত ম্যানেকুইনটার দিকে। আগে কি কখনো শুভ দেখেছে ওটাকে! মনে পড়ছে না ঠিক… 

করিডোরের শেষ প্রান্তে থাকা কাঁচের জানালাটার ভাঙা পাল্লা দিয়ে রোদ চুঁইয়ে এসে পড়ছে পুতুলটার চোখে মুখে। সেদিকে ভালো করে তাকাতেই চমকে উঠলো শুভ; সবুজ পোশাক পরে স্মিত হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ম্যানইকুইনটার মুখটা বড্ড চেনা চেনা লাগছে না!


শেষ।



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Drama