Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Debmalya Dutta

Comedy

0.6  

Debmalya Dutta

Comedy

দাদুর চিতাভস্ম ও দেবুদা

দাদুর চিতাভস্ম ও দেবুদা

3 mins
2.3K


'মায়াপুরী'র ঘরে সভা বসেছে টেনি, অমর্ত্য, মন্দার,মেহেদী,অংশু,সায়ন্তন আর দেবুদা মানে আমি। প্রিয়ব্রত ফেরেনি ওর ফেরার দিনে যথারীতি পেট খারাপ করেছে। শিবাও দেশের বাড়ি গেছে।

সায়ন্তন তার বন্ধুর ঠাকুমার গঙ্গায় অস্থি বিসর্জন নিয়ে কথা বলছিল,এইসময় দেবুদা ঢুকল ঘরে। 

মন্দার-কোত্থেকে ফিরলে!

-গ্রীষ্মের বিকেলে প্রিন্সেপ ঘাটের হাওয়া খেয়ে ফিরতি ট্রামে সোজা ধর্মতলা থেকে তালতলা।যা গরম পড়েছে মানুষ পাগল হয়ে যাবে আর কিছুদিন চললে।

টেনি- তা যা বলেছ দেবুদা। আজ ক্লাসে বসে বসে শুধু ঘাম মুছে যাচ্ছি,লেকচার শুনব কখন।

অমর্ত্য-আমার তো আরো বাজে অবস্থা। একে মোটা মানুষ। ভাবছি মেসের ঘরে এসি লাগাব।

মন্দার-ব্যানার্জি পারমিশন দিলে তো!


মেহেদী -দেবুদা যখন ফ্রেশ হয়ে ফিরেছে তখন আড্ডা দেওয়া যাক। ওসব কথা পরে বলো তোমরা।

অংশু- সেই ভাল। আচ্ছা দেবুদা তুমি কখনো গঙ্গায় চিতাভস্ম বা অস্থি বিসর্জন দিয়েছো!বা দিতে দেখেছো?

দেবুদা-হুম। তোরা তো গঙ্গায় গিয়ে অস্থি বিসর্জন দিয়েছিস বা দিতে দেখেছিস। আমি গঙ্গায় না গিয়েও গঙ্গায় অস্থি বিসর্জন করেছি।

সবাই গল্পের গন্ধে একটু চেপে বসল।

মন্দার-সেটা কিরকম!তুমি গঙ্গায় যাওনি অথচ গঙ্গায় ভাসিয়েছ!তাহলে কি গঙ্গা তোমার কাছে এসেছিল না তুমি নালা কেটে সেই নালাতে ফেলেছ। যেটা গঙ্গায় গিয়ে পড়ে!

-তোর এই পুরো না শুনে বলাটা পাল্টালো না। টেনি বলে উঠল হ্যাঁ দেবুদা বলো।কি করে এই অসম্ভব কে সম্ভব করলে?

-শুনবি কিন্তু চুপচাপ। 

-সবাই মাথা নাড়ল।

-তখন সদ্য কলকাতা এসেছি।কিছু চিনি জানি না।শুধু কলেজ আর মেস। যদিও সেটা আলাদা ছিল ফিলিপস স্টপেজের গলিতে। সঙ্গে কিছু সিনিয়র দাদারা থাকে। একা একা বাইরে বেড়াতাম না। বাড়িতেও বলে দিয়েছিল। যাকগে আসল জায়গায় আসি।

বাড়ির কাছেই পদী পিসির বাড়ি। পিসির ছেলে পুলে ছিল না। স্বামী কম বয়েসে মারা গেছিল। বলে সে বাপের বাড়িতে থাকত। তার বাবা হরেন বাবু ছিল হারকেপ্পন লোক। তার চিতাভস্ম আমি গঙ্গায় না গিয়েও গঙ্গায় ভাসিয়েছি। বলে থামলাম।

মন্দার- কি হল গো থামলে কেন। নিশ্চয় গল্প বানাচ্ছে!

-আরে না আমি ঐ সাধুটার নাম মনে করছি। অনেক দিন আগের কথা।

-এখানে সাধু এল আবার কোত্থেকে।?!অমর্ত্য বলল।

-আছে আছে!হ্যাঁ মনে পড়েছে ১০৮ তৃদন্ডীস্বামী ভুতানন্দ মহারাজ। তখন মকর সংক্রান্তির সময়। সামনেই ইউনিভার্সিটি পরীক্ষা। বাড়ি থেকে ঘুরে এসেছি। এইসময় কলকাতায় সাধুবাবাজিদের সংখ্যা বেড়ে যায়। তাদের অনেক কেই ভন্ড মনে হয় সাগর মেলা যাওয়ার আগে তারা কলকাতায় বাড়ি বাড়ি উৎপাত করে আর যার কাছে যা পায় বাগিয়ে নেয়।

তেমনি একদিনে বাড়ি থেকে ফিরে বাড়ির পাঠানো ক্ষীরের নাড়ুর বাক্স টা খুলছি এমন সময় বাইরে 

'ঠক ঠক ঠক'। ঠিক যেন ঠকাতে কেউ এসেছে। আর দেহাতি মেশানো টানে 'ব্যোম শঙ্কর'!!

-কে?

-আমি সাধুবাবা আছি। ভিখ চাই!


আমি দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে নোংরা গেরুয়া পড়া রুদ্রাক্ষ মালা সমেত এক সাধু!

আমি ১০৮ তৃদন্ডীস্বামী ভুতানন্দ মহারাজ আছি... এই বলে ক্ষীরের নাড়ু সমেত বাক্সটার দিকে তার নজর চলে গেল।

আর মৌ মৌ করা ক্ষীরের গন্ধে তার নাল ঝোল বেরিয়ে এল মুখ থেকে।

ঝোল সামলে সাধু বলল -ব্যোম শঙ্কর! ভিখ চাই। ভিখ দে। নজর কিন্তু নাড়ুর দিকে।

আর আমার মাথাটা গেল গরম হয়ে।

সাধুবাবাজি সেটা বুঝতে পেরে বলল -কি দেখছিস বেটা !আমার মুখে স্বয়ং গঙ্গা মাইয়া থাকেন। আমি তাকে আবাহন করলে সে বেরিয়ে আসে।

আমি মনে মনে বললাম হতচ্ছাড়া বিরিঞ্চিবাবার নাতি। তোমার হচ্ছে!

-হ্যাঁ বাবা ভিখ দেব আর সাথে এই ক্ষীরের নাড়ু দেব। তার আগে আমার একটা কাজ করতে হবে!

-কি কাজ বেটা?

-হাঁ করুন?

তারপর চিতাভস্মের ঘট থেকে লাল শালু সরিয়ে কিছুটা কাঠ-কয়লা সমেত ছাই ভন্ডটার মুখে ঠুসে দিলাম।

-একি জিনিস আছে বেটা! কোনরকমে সে আর্তনাদ করে ওঠে।

-এটা আমার হরেন দাদুর চিতার ছাই আছে। গঙ্গায় বিসর্জন দিতে বলেছিল। সামনে পরীক্ষা তাই সময় পাচ্ছিলাম না।আজ আপনি স্বয়ং মা গঙ্গাকে মুখে করে নিয়ে এলেন তাই তার বিসর্জন দিলাম। নিন পেটে চালান করুন আরো অনেক আছে।

এই কান্ড দেখে তৃদন্ডীস্বামী দে ছুট!

-ও মহারাজ পালাচ্ছ কেন!এরপর নাড়ু গুলোকে দেব তো।

-না বাবা ও নাড়ু চাই না। তুমিই রাখো। আমি গেলাম। ব্যোম শঙ্কর!

এই বলে আমি থামলাম।

মেহেদী-বাহ দারুন অভিজ্ঞতা হল।

সায়ন্তন-দিলে তো আরেকটা ঢপ।পদী পিসিটা যেন কোথায় শুনেছি মনে হচ্ছে!আশাপূর্ণা দেবীর লেখা গল্পে আছে।

টেনি-না!লীলা মজুমদার।

সবাই হ্যাঁ হ্যাঁ করে উঠল।

-তোদের কিছু বলাই বৃথা।আর কিছু বলাই উচিত না তোদের।চল খেয়ে আসি চল ৯টা বাজতে চলল।




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Comedy