Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Debdutta Banerjee

Thriller Crime

3.2  

Debdutta Banerjee

Thriller Crime

জোড়া খুনের রহস‍্য-দ্বিতীয় পর্ব

জোড়া খুনের রহস‍্য-দ্বিতীয় পর্ব

5 mins
17.2K


আবিরার বর রোহিত বাড়ি ছিল। ও একটা বড় ফার্মা কোম্পানির রিজিওনাল ম‍্যানেজার। ট‍্যুরে ট‍্যুরে বাইরেই বেশি থাকে।গত পরশু নাকি ফিরেছে , আবার আজ বিকেলেই চলে যাওয়ার কথা। আবিরার সাথে রোহিতও আলোচনায় যোগ দিল। আবিরার থেকেই সাহানা শুনলো তন্নির একটা 'বয়-ফ্রেন্ড' ছিল। তবে আপাতত বিয়ের প্ল‍্যান ছিল না। ছেলেটা পাঞ্জাবী। সফট্ওয়্যার এর ব‍্যবসা করে। আবিরার সাথে পরিচয় আছে। পুলিশকে ওর নম্বর দেবে কিনা আবিরা ভাবছিল! সাহানা এবং ওর বর যে একটা ইনভেস্টিগেশন ফার্ম চালায় ওরা জানত। তাই সাহানা চাইতেই নম্বরটা দিয়ে দিল। রোহিত বলল, -"দেখুন , ঐ ছেলেকে নিয়ে দিদার সাথে কিছু হয়েছিল হয়তো। রাগের মাথায় দিদাকে মেরে তারপর......"

-"যা জানো না, বোলো না তো। ওর দিদা প্রিন্সকে পছন্দ করতো। প্রিন্স আসতো, দিদার দেখাশোনাও করত। আর তন্নিকে ওর দিদা চোখে হারাত। তন্নি এমন কাজ করতেই পারে না। " আবিরা ঝাঁঁঝিয়ে ওঠে।

-"এয়ার হোস্টেসদের এমন কত প্রিন্স থাকে জানো ? ওরা যখন যে শহরে যায় বয়ফ্রেন্ড বানায়। হয়তো সে সব নিয়েই দিদার সাথে কিছু হয়েছিল।" রোহিত আবার বলে।

-"তন্নি অমন মেয়ে ছিল না। তুমি তো ওকে দেখেছো, কি করে এসব বলছ?" আবিরা বলে।

-"আমি প্রতিদিন ফ্লাইটে তন্নির মতো কত মেয়ে দেখি যারা...." রোহিতের কথা শেষ হওয়ার আগেই আবিরা বলে, -"ও খুব ভদ্র ভালো মেয়ে ছিল।তুমি তো সেভাবে মেশো নি কখনো।"

সাহানা বলে -"আবিরা , তোমার কি মনে হয় ?"

-"আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, আমার তো চেঁচামেচিতেই ঘুম ভাঙ্গল সকালে। রোহিত উঠে পড়েছিল, পেপার পড়ছিল। ওকে বললাম কিছু হয়েছে মনে হচ্ছে। তারপর নিচে নেমে দেখি....।কাল রাতেই মেয়েটা ফিরেছিল তিনদিন পর। আজ থেকে ওর অফ্ ছিল। তিন দিন আগে ব‍্যাঙ্গালোর থেকে আমায় ফোন করেছিল একবার। বাইরে গেলে দিদাকে না পেলে আমায় ফোন করত অনেক সময়। ও টানা দু তিনদিন ডিউটি করতো বরাবর।"

-" কাল কখন ফিরেছিল?" সাহানা প্রশ্ন করে। 

-"রাত সাড়ে দশটা হবে। আমি রমলা মাসিমার সাথেই গল্প করছিলাম । ও ফিরতেই রোহিত আমায় খেতে ডাকলো । আমিও খেতে দিতে চলে এলাম। " 

-"আমি কাল রাতে ওদের ঘরে ঝগড়ার আওয়াজ শুনেছি। ওধারের ব‍্যালকনিতে বসে সিগারেট ধরিয়েছিলাম, ওদের বেডরুমে ঝগড়া হচ্ছিল। পরিস্কার শুনেছি, দুজনেই উত্তেজিত ছিল।" রোহিত বলে।

ওদের সাথে আরেকটু গল্প করে সাহানা 7B তে যায়। বীনা বৌদি যদি কিছু খবর দেয়। কিন্তু ওনারা সাহানাদের প্রফেশন্ জানে বলেই হয়তো মুখে কুলুপ এঁটেছিল। 

7A ফ্ল্যাটে থাকে একটা ছেলে মেহুল দেবরায়। সকাল থেকে ওকে দুবার দেখলেও কথা বলার সুযোগ হয় নি। ছেলেটা 'আই-টি' ইঞ্জিনিয়ার। সাহানা কি মনে করে ওর বেলটাও বাজায়। 

 দরজা খোলে মেহুল, সাহানাকে দেখে একটু অবাক হয়েছে। 

-"সকাল থেকে যা হচ্ছে .... তোমার পাশের ফ্ল্যাট... " সাহানাকে প্রশ্নের সুযোগ না দিয়ে ছেলেটা বলে, -"আমার যা বলার পুলিশ কে বলেছি। আমার সাথে তেমন পরিচয় ছিল না ওনাদের। "

-"কোনো আওয়াজ বা ঝগড়া ঐ ফ্ল্যাটে ..."

-"আমি সারাক্ষণ বাড়ি থাকলে ল‍্যাপটপ্, নয় ফোন নিয়ে থাকি। তেমন কিছু কানে আসেনি। খেয়াল ও করিনি।"

দরজার ফাঁক দিয়ে সাহানা দেখে নেয় একটা অগোছালো ড্রইংরূমের ছবি। 

নিচে নামার সময় গুপ্তা ভাবী ডেকেছিল। এই মহিলার একটু সন্দেহ বাতিক আছে। ওনার বক্তব‍্য মেয়েটা সুবিধার ছিল না। 

সন্তোষজনক কোনো খবর জোগাড় করতে না পেরে সাহানা মনমরা হয়ে ফ্ল্যাটে ফিরে আসে। বিকেলে তন্নির বাবা-মা এসে পৌঁঁছায়। একতলার গেষ্ট হাউসে উঠতে হয়েছে। ফ্ল্যাট তো সিল। বক্সি'দা আর আলোক ওনাদের সাথে কথাও বলেছেন। ওনারা ভীষণ অবাক।আগেরদিন রাতে মেয়ে ফিরে ফোন করেছিল। রমলা দেবীও কথা বলেছিলেন। সব স্বাভাবিক এবং নর্মাল ছিল। 

পুলিশ কাউকে শহর ছাড়তে মানা করেছে। রোহিত বাবু , ঘোষদা আর পাঁচ তলার ব্রজেন বাবু একটু গাঁইগুঁই করেছিলো। আগরওয়াল'জি সেদিন সিঙ্গাপুর যাবেন ব‍্যবসার কাজে। যাদবদার ও অফিস ট‍্যুর রয়েছে। কিন্তু বক্সি বলেছে বেশি অসুবিধা হলে ও থানায় তুলে নেবে সবাইকে। কড়া আর রগচটা বলে বক্সির বদনাম আছে। আসলে পুলিশ, বিল্ডিং এর কাউকে সন্দেহ করছিল। কারণ সিকিউরিটির নজর এড়িয়ে বাইরের কেউ আসেনি। নিচে অনেকেই জগিং করছিল। তারাও কাউকে ঢুকতে দেখেনি। তবে দুধ-ওয়ালা, পেপার-ওয়ালা, ফুল বিক্রেতা এরা ঢুকেছিল। তন্নি আর আবিরার ঘরে দুধের প‍্যাকেট দিয়েছিল ইকবাল। প্রভু পেপার দিয়ে গেছিল সবার ঘরে। কানাই আসে ফুল দিতে। এদের সবাইকে পুলিশ জেরা করেছিল, হয়তো এদের মধ‍্যে কেউ ....?

সেদিন সন্ধ‍্যায় প্রিন্স (তন্নির বয়ফ্রেন্ড) এসেছিল। পুলিশ ওকেও জেরা করেছে। সেও ভীষণ অবাক।আগের রাতে ফোনে তন্নি নাকি মুভির টিকিট কেটে রাখতে বলেছিল ! চায়না টাউন যাবে বলেছিল।আবার কি কথায় যেন বলেছিল ছেলেদের বেশি বিশ্বাস করতে নেই। বিয়ের পর ছেলেরা বদলে যায়। লাষ্ট দুদিন ধরেই ও এসব বলছিল।

 প্রিন্সের বক্তব‍্য মুভির প্ল‍্যান করে কেউ আত্মহত‍্যা করে কি?ও ছিল প্রাণ প্রাচুর্যে ভরা উচ্ছল চঞ্চল একটা মেয়ে। ওকে মেরে ফেলার মোটিভটাই তো পাওয়া যাচ্ছে না! রমলা দেবীর তেমন কোনো শত্রু ছিল না। সবাই তাই চিন্তিত।

কাজের ঠিকা মেয়েটাকে পুলিশ জেরা করেছিল , সে বেলা আটটায় কাজে আসে। আবিরার ঘরেও কাজ করে , সাহানাদের ঠিকা কাজটুকুও করে। ও তেমন কিছুই বলতে পারল না। 

তন্নির দু জন বন্ধু পাশেই আরেকটা ক‍্যাম্পাসে ফ্ল্যাট নিয়ে থাকত। তারাও কিছু জানে না, তবে বলল, ও ফিরে এসে কি একটা বলবে বলেছিল। ওর ফোনে লাষ্ট কল আগেরদিন রাতে প্রিন্স কে। 'হোয়াটস- আ্যপে' গল্প করেছে একটা গ্ৰুপে। সেই গ্ৰুপ চ‍্যাটেও লাষ্ট তিনদিন আগে ও লিখেছিল 'ছেলেরা কি বিশ্বাসের দাম দেয় ? একটা ছেলেকে কি জীবনের মত বিশ্বাস করা যায়? '

ওর এক বন্ধু এর উত্তরে জানতে চেয়েছিল যে প্রিন্সের সাথে কিছু হয়েছে কিনা।ও উত্তরে লিখেছিল 'প্রিন্স নয়, অন‍্য কারো কথা হচ্ছে। ' গত দু দিন এই বিষয়টা ওদের কথায় বারবার উঠে এসেছে। 

সকালে মিউজিক শুনতে শুনতে জগিং করত ও । তাই ইয়ার ফোন কানে ছিল। আর কারো সাথে কোনো কথা হয় নি ওর। 

স্কাই ওয়াকের জন‍্য যে কাজ হচ্ছিল সেদিকে ও যেত না। বালি সিমেন্টে জায়গাটা মাখামাখি। কেন ও ওখানে গিয়ে লাফ দিলো?নাকি, কেউ ওকে ঠেলে দিলো এটাই প্রথম প্রশ্ন!

আলোক এমন কেস এর আগে পায় নি। কেউ কোনো ক্লু দিতে পারছে না। রমলা মাসিমার ঘরে বাইরের লোক ঢুকবে কি করে এটাও প্রশ্ন! তন্নি তো ল‍্যাচ্ টেনে জগিং এ যেতো। চাবি ওর পকেটেই ছিল। অন‍্য চাবিটা ঘরে পাওয়া গেছিল। কেয়ারটেকাররা ও বলতে পারলো না কিছু!!

তন্নির কল লিস্ট ঘেঁটে একটা আননোন্ নম্বর পাওয়া গেছিল, যেটা থেকে ওর ফোনে 'মিসকল' আসতো। ও নাকি প্রিন্সকেও গত মাসে এটা বলেছিল। গত মাসে চারবার আর এ মাসে ছবার ফোন এসেছিল। তন্নির বান্ধবী অদিতিও জানত এটা। ওরা ফোন করে দেখেছে নম্বরটা সুইচ অফ্। বক্সিও ট্রাই করে বন্ধ পেয়েছে। তবে টাওয়ার লোকেশন দেখাচ্ছে এই ক‍্যাম্পাসেই ছিল ফোনটা!! এটাই ভাবাচ্ছে সবাইকে!!(চলবে)


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Thriller