Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sayandipa সায়নদীপা

Abstract

2  

Sayandipa সায়নদীপা

Abstract

রহস্যময় মেসেজটা

রহস্যময় মেসেজটা

15 mins
1.0K


".... Samsung Galaxy Star pro…. Milk white phone with a sinchan sticker on the back. The upper portion of the sticker has got scratches from your sharp brown nails….."


  আরও অনেক, অনেক কিছু লেখা ছিল এর সঙ্গে। মেসেজটার দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ স্তম্ভিত হয়ে রইল তাতাই। অপর প্রান্তের মানুষটা উত্তরের জন্য বেশ খানিক্ষণ অপেক্ষা করল, তারপর আস্তে আস্তে ওর নামের পাশে জ্বলতে থাকা সবুজ আলোটা নিভে গেল। ল্যাপটপটা বন্ধ করল তাতাই। শীতকাল, তবুও বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে তার কপালে। মাথার স্কার্ফটা খুলে দিয়ে Samsung Galaxy Star Pro ফোনটা তুলে নিয়ে একটা নাম্বার ডায়াল করল তাতাই। কিছুক্ষণ রিং হওয়ার ওর ওপ্রান্ত থেকে সাড়া মিলল,

---- হ্যালো।


---- হাউ ডেয়ার ইউ?


---- কে?


---- আমি, তৃষা।


---- আরে এই নাম্বারটা কবে নিলি?


---- যবেই নিই, এবার এই নাম্বারটাও সাপ্লাই করে দে তাকে।


---- তুই এসব কি বলছিস? কাকে সাপ্লাই করব? 


---- কেন! সৌরভ রাঠিকে…


---- সৌরভ!


---- চিনতে পারছিস না নাকি?


---- আরে চিনতে কেন পারব না! বাট তুই এভাবে কথা বলছিস কেন? হোয়াট হ্যাপেন্ড? 


---- অরণ্য তুই না আমার বন্ধু ছিলিস। সেই বন্ধুত্বের এই প্রতিদান দিলি?


---- রিল্যাক্স ত্রি। আরে বাবা কি হয়েছে আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা। প্লিজ আগে তো বল কি হয়েছে!


---- কি হয়েছে! তুই কি করে একটা অচেনা ছেলেকে আমার সম্বন্ধে এসব পার্সোনাল ডিটেইলস দিতে পারলি!!! মানছি ও তোর পরিচিত কিন্তু আমার তো নয়। তাহলে আমাকে একবারও না জিজ্ঞেস করে তুই কি করে ওকে এইসব তথ্য দিলি!!


---- তথ্য! ত্রি ট্রাস্ট মি, আমি ওকে তোর সম্বন্ধে কিছুই বলিনি। ইন ফ্যাক্ট ও আমাকে জিজ্ঞেসও করেনি। 


---- কি করে বিশ্বাস করি আমি ??? তুইই তো…


---- আমি স্বীকার করছি, আমিই তোকে ফোর্স করেছিলাম ওর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করার জন্য। কিন্তু এর বেশি আমি আর কিছু করিনি। তুই বিশ্বাস কর। 


---- তাহলে ও আমার সম্বন্ধে সেই সব তথ্য জানলো কি করে যা আমার ঘনিষ্ট বন্ধুরা ছাড়া আর কেউ জানেনা?


---- আমি জানিনা। তবে রাজমিতকে চিনিস?


---- চিনি। ফেসবুকে আছে, একবারই দেখা হয়েছিল বিনয় স্যারের ছেলের জন্মদিনে।


---- রাজমিত কিন্তু সৌরভের বেস্ট ফ্রেন্ড। সো এমনটা তো হতে পারে যে রাজমিত…


---- এটা কি করে সম্ভব!!! রাজমিত আর আমি একই স্যারের কাছে টিউশন পড়ি কিন্তু সেটা যে যার বাড়িতে। আর ওর সাথে আমার যে প্রথম এবং শেষ দেখা হয়েছিল সেটাও প্রায় এক বছর হতে যায়। রাজমিত কি করে এসব ডিটেইলস জানবে?


---- আমি জানিনা। আমি শুধু জানি আমি সৌরভকে কোনো ইনফরমেশন দিইনি তোর সম্বন্ধে। যাইহোক, আমার মনে হয় তুই রাজমিতের সাথে একবার কথা বল।


---- ওকে।


     ফোনটা রেখে দিয়ে চুপচাপ বসেছিল তাতাই। ল্যাপটপটা খুলতেই ভয় লাগছে। তাতাইয়ের মনে পড়ে গেল এসবের সূচনা ঠিক এক সপ্তাহ আগে। 


                   ★★★★★


বিকেলে ফেসবুকে চ্যাট করে সন্ধ্যা ছ'টা নাগাদ পড়তে বসে সে। দু'ঘন্টা পড়ার পর স্বভাবতই মনটা একটু অন্যদিকে চলে যায়। তখন আবার ফেসবুক খোলে। ফেসবুক দেখাচ্ছে ৯৯+ নোটিফিকেশন। দু'ঘন্টায় এতো নোটিফিকেশন!!! কি করে সম্ভব!!! নোটিফিকেশনগুলো খুলেই আপন মনে হাসে তাতাই, সবই সম্ভব। জনৈক Ghost Rider মহাশয় ধরে ধরে তাতাইয়ের সব পোস্ট,ছবি ইত্যাদি লাইক করেছেন। ফেসবুকটা বন্ধ করে দেয় তাতাই। মাঝে মাঝে দেখা যায় এরকম একেকটা পাগল। রাতের বেলা আবার ফেসবুক খুলতে একই ব্যাপার দেখে সে। টানা দু'দিন এরকম চলার পর ক্ষান্ত দেয় Ghost Rider । তাতাই ভাবে সব পোস্ট বোধহয় শেষ। হুমম পোস্ট হয়তো শেষ হয়েছিল তাই এবার আসে ভুত মহাশয়ের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। সযত্নে ডিলিট করে তাতাই। ডিলিট করার ঘন্টা খানেকের মধ্যে আবার রিকোয়েস্ট জমা পড়ে। এবার আর ডিলিট না করে পেন্ডিং রাখে তাতাই। বিকেলে ভুতে "পোক" করে তাকে। তাতাই মনে মনে ভাবে আচ্ছা নাছোড়বান্দা পাবলিক তো! এর পরের দিন সেই ভদ্রভুত আবার নিজের রিকু ডিলিট করে নতুন করে পাঠান। বিরক্তি লাগে তাতাইয়ের। মাঝে এরপর কেটে যায় কয়েকটা দিন। তারপর শনিবার নাগাদ অরণ্য ফোন করে বলে, 

---- ghost rider নামে একটা রিকু আছে তোর কাছে, প্লিজ একসেপ্ট কর।


---- তুই তো জানিস বন্য আমি এরকম সম্পূর্ণ অচেনা লোকের রিকোয়েস্ট নিইনা।


---- ও কিন্তু তোর সম্পূর্ণ অচেনা নয়। ওর প্রোফাইল পিকটা দেখলেই বুঝতিস।


---- কেন? কে ও?


---- চিনতে পারিসনি?


---- না।


---- ব্রেনোলিয়া খা।


---- ধ্যাত!


---- আরে ও সৌরভ। সৌরভ রাঠি। মনে আছে সৌগত স্যারের টিউশনে এসেছিল দু' সপ্তাহ। স্যারের রিলেটিভ।


---- মনে পড়ছে। তবে যে দু সপ্তাহ ও এসেছিল তার এক সপ্তাহ তো আমি টিউশনই যাইনি। আর যে সপ্তাহে গেলাম, সত্যি বলতে ওর মুখটা ভালো করে দেখিনি।


---- কিন্তু ও তোকে ভালো করে দেখেছিল হে হে… যাইহোক, এবার প্লিজ একসেপ্ট কর। নয়তো আমার মাথা খেয়ে নেবে।


---- আমি করব না। 


---- প্লিজ প্লিজ আমার কথা শোন। আমি ওকে অনেক বছর ধরে চিনি। খারাপ নয় ছেলেটা। আচ্ছা তুই একবার একসেপ্ট কর, ও কি বলতে চায় শুনে আনফ্রেন্ড করে দিস। 


---- জোর জবরদস্তি নাকি!!


---- বন্ধুর জন্য এটুকু কর। ও আমার মাথা খেয়ে নিচ্ছে।


---- আমি এরকম উদ্ভট নামের কাউকে ফ্রেন্ড লিস্টে রাখিনা।


---- আচ্ছা। আমি ওকে বলে দিচ্ছি।


   পরের দিন সকাল সকাল এসেছিল রিকোয়েস্টটা--- "সৌরভ রাঠি", প্রোফাইল পিকচারে একটা ব্লেজার পরা সুদর্শন ছেলের ছবি। হ্যাঁ, এইবার ছেলেটাকে খানিক চেনা চেনা ঠেকেছিল তাতাইয়ের। ইনবক্সে অরণ্য মেসেজ করেছে, "এবার ও ভালো নামে রিকু পাঠিয়েছে বলছে। যদি তাই হয় তাহলে একসেপ্ট কর।"

বন্ধুর জন্য কি কি না করতে হয়!

রিকোয়েস্টটা একসেপ্ট করার সঙ্গে সঙ্গে এসেছিল মেসেজ, 

---- হাই।


---- নমস্কার।


---- বাঙালীয়ানা!!! বাহ্


---- অরণ্য বলছিল আপনার নাকি আমার সঙ্গে কি প্রয়োজন আছে?


---- আপনি? আমরা কিন্তু সেম এজ।


---- ওকে। বল তোর কি প্রয়োজন?


---- একেবারে তুই!!! চলো ঠিক হ্যা।


---- হুমম।


---- তুই কি প্রয়োজন ছাড়া কথা বলিস না?


---- না।


---- ওকে। কিন্তু আমি যে প্রয়োজন ছাড়াও কথা বলতে ভালোবাসি।


---- listen I don't like chitchat with unknown people, so please…


----- unknown!! Who? Me?


---- Ya, I don't know you. 


---- তাহলে কেন রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলি?


---- অরণ্য বলল তাই। 


---- অরণ্যের সাথে তুই খুব ক্লোজ না? 


---- হুমম। আমার খুব ভালো বন্ধু। 


---- ওকে। তাহলে তোর বিশেষ বন্ধু হতে গেলে কি কি গুণ থাকতে হয়?


---- তোর যদি কোনো প্রয়োজন না থাকে তাহলে বাই। আমার অনেক কাজ আছে।


---- প্রয়োজন তো আমার আছে, তবে সব প্রয়োজনের কথা কি আর সবসময় বলা যায়? বিশেষ সময়ে বলতে হয়।


   তাতাই বুঝলো ছেলেটা ঘুরিয়ে কথা বলতে অভ্যস্ত। তাই ও লিখলো,

---- ঠিক আছে সেই বিশেষ সময় এলেই নাহয় কথা হবে। এখন চললাম।

এই বলে ফেসবুক বন্ধ করে দিল সে।


   দু'দিন ফেসবুক খোলা হয়নি। তারপরের দিন খুলতেই তাতাই দেখলো সৌরভের বেশ কয়েকটা মেসেজ,


"বাপরে! একটুও সময় নষ্ট করতে রাজি নোস! শুনেছিলাম অবশ্য তুই খুব সিরিয়াস।"

"কোথায় গেলি?"

"একটা প্রয়োজনের কথা এখনই বলার ছিল।"

"তোর জন্য একটা উপহার আছে আমার কাছে, কবে নিবি বল?"

  মেসেজগুলো দেখে ভ্রু'টা কুঁচকে গেল তাতাইয়ের। সে লিখল,

---- আমার জন্য উপহার রাখার কারণ দেখছি না। তাছাড়া আমি যে কারুর কাছ থেকে উপহার নিইনা। তাই ওটা তোর কাছেই থাক।


---- একবার দেখতেও চাইবি না উপহারটা?


---- নাহ। আমার যা বলার ছিল বলে দিয়েছি।


তাতাইয়ের এই মেসেজটার পর বেশ কিছুক্ষণ ওপ্রান্ত থেকে কোনো জবাব এলো না। তারপর প্রায় মিনিট পাঁচেক পর একটা মেসেজ ঢুকলো, কোনো কথা নয়, একটা ছবি--- তাতাইয়ের পোট্রেট।


---- তুই এঁকেছিস এটা?


---- নীচের স্বাক্ষরটা তো তাই বলছে। 

উপহারটা পছন্দ?


কি বলবে কিছু বুঝে উঠতে পারল না তাতাই। অপূর্ব এঁকেছে ছবিটা। কিন্তু হঠাৎ তাতাইয়ের পোট্রেট কেন আঁকতে গেল!


---- সুন্দর এঁকেছিস।


---- ধন্যবাদ। আঁকা আমায় নেশা এবং বর্তমানে পেশা। আমার আঁকার এক্সিবিশন হয়ে থাকে মাঝে মাঝে। এছাড়া পত্রিকার জন্য ইলাস্ট্রেশন করি।


---- ওহ। ভালো।


---- আর আঁকা ছাড়াও আরেকটা শখ আছে আমার যেটা হয়তো তোর সাথে মিলে যায় অনেকটা।


---- কি শখ?


---- আমিও বই পড়তে ভালোবাসি, ঠিক তোর মতো।

তাতাই জিজ্ঞেস করলোনা কার কাছ থেকে সে জেনেছে এই শখের কথা। তাতাইয়ের জবাব না পেয়ে সৌরভ আবার লিখল,

---- আমি নিজে এক সামান্য কলমচিও বটে। আমাদের এখানকার একটি পত্রিকার সহ সম্পাদনা করে থাকি।


---- আচ্ছা।


---- উপহারটা কবে নিবি?


---- আমার যা বলার আগেই বলেছি।


---- ঠিক আছে। সরস্বতী পুজোর দিন আমি আসছি তোদের ওখানে। ওই দিনই প্রয়োজনের কথাটাও বলবো আর উপহারটাও দেব।


---- মানে? 

আর উত্তর দিলো না সৌরভ। আর একসপ্তাহ বাদেই তো সরস্বতী পূজা। কি বলল ছেলেটা! এখানে আসবে মানেটা কি? প্রথমে একটু ঘাবড়ে গেলেও পরে তাতাইয়ের মনে হল সৌরভ নিশ্চয় ভেবেছে তাতাই অন্যদের মত শাড়ি পরে ওই দিন ঘুরতে বেরোয়, কলেজ মাঠে যায়। কিন্তু তাতাই যে এসবের ধার ধারে না সেটা তো আর সে জানে না, অতএব কোনো চাপ নেই। 


     সেইদিনের পর থেকে সৌরভ রাঠি একদম চুপ করে গেছে। সরস্বতী পুজোর প্রস্তুতির চাপে তাতাইও ভুলে গেছে তার কথা। তাতাইদের পাড়ার কয়েকটা বাড়ি মিলে জমজমাট করে এক সাথে পুজো হয়, সেই নিয়েই ব্যস্ত ছিল তাতাই। পুজোর আগের দিন সন্ধ্যে নাগাদ মোটামুটি সব কাজ মিটল। তাতাই প্যান্ডেলে আলপনা দিয়ে ফিরে এসে ফেসবুকটা খুলল, আর খোলার সঙ্গে সঙ্গে পিং করে একটা মেসেজ ঢুকলো,

"কালকের দিনটা মনে আছে তো?"

"শুনেছি তোদের পাড়ায় নাকি খুব বড় করে সরস্বতী পূজা হয়?"

"জানি তুই শাড়ি পরা পছন্দ করিস না,তবুও বলবো কাল একটা শাড়ি পরিস।"

"কালকে সরস্বতী পূজা ছাড়াও আরও একটা উৎসব, সেটা কি জানিস?"

"নিশ্চয় জানিস। বসন্ত পঞ্চমী। পারলে একটা হলুদ শাড়ি পরিস, তোকে মানাবে ভালো।"

পিং পিং করতে করতে পরপর মেসেজগুলো ঢুকলো। শেষ মেসেজটা দেখে মাথাটা গরম হয়ে গেল তাতাইয়ের,

---- উপহাস করছিস আমাকে? তুই যে আমাকে ভালো করে দেখিসনি তার প্রমাণ নিজেই দিলি।


---- কেন? উপহাস কেন?


---- আমায় মানাবে হলুদ রং? বাহ্…


---- মানুষের মতোই হলুদেরও কিন্তু অনেক শেড থাকে। ট্রাস্ট মি রংটায় তোকে মানাবে বেশ।

  রাগে আর উত্তর দিলো না তাতাই। তাই সৌরভ আবার লিখলো,

---- কাল আসছি। সেই প্রয়োজনের কথাটা বলবো কিন্তু।


  বুকটা ধক করে উঠল তাতাইয়ের। কাল আসছে মানেটা কি! পাড়ার খবর অবধি নিয়ে নিয়েছে, এখানে এসে হাজির হবে না তো! আচ্ছা তাতাই কি ওকে ব্লক করে দেবে! কিন্তু ব্লক করলেও ও যে হাজির হবে না তার কি মানে? 


    পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙার থেকে ভয়ে হাত পা যেন পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে যাচ্ছিল। ভালো করে সাজগোজও করতে পারলোনা তাতাই। পুজো শেষের হুল্লোড়েও ঠিক মন বসল না। রাস্তা দিয়ে যেই কেউ যাচ্ছিল তাতাইয়ের বুকটা ধক করে উঠছিল, সৌরভ রাঠি নয় তো! বেলা এগারোটা নাগাদ মন্ডপ থেকে বাড়ি ফিরল তাতাই। ফোনটা কাবার্ড থেকে বের করে অন করতেই দেখলো রাঠির মেসেজ,

"মাঝে রাত দিন বস মুঝে চাহাতি হো, মুঝে রাত দিন বস মুঝে চাহাতি হো…

কহো না কহো মুঝকো সব কুছ পতা হ্যা, হাঁ মুঝে রাত দিন বস মুঝে চাহাতি হো…"

"সকাল থেকে তো শুধু আমার কথাই ভেবেছিস তাই না?"

মেসেজ দুটো পড়ে সর্বাঙ্গ কেঁপে উঠল তাতাইয়ের। সে ঘামে ভেজা হাতে লিখলো,

"হোয়াট ননসেন্স!"

"জানতাম স্বীকার করবি না, কিন্তু স্বীকার না করলেই কি সত্যিটা মিথ্যে হয়ে যাবে? সত্যি করে বলতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলিস না?"

"ভয়? কিসের জন্য?"

"হাঃ হাঃ… ভয় না পেলেও পারতিস। আমি কি এমন কিছু করতে পারি যাতে লোকের সামনে তুই অপ্রস্তুতে পড়িস।"

তাতাইয়ের মাথাটা ঝাঁ ঝাঁ করছিল। ফোনটা রাখতে গেল সে, কিন্তু তার আগেই আবার একটা মেসেজ ঢুকলো,

"প্লিজ রাখিস না ফোনটা এখনই।"

একটু হলেও থমকে গেল তাতাই। দ্বিতীয় মেসেজটা ঢুকলো,

"আজ বলেছিলাম সেই প্রয়োজনের কথাটা বলবো। শুনবি না?"

দু'মিনিট ভাবলো তাতাই, তারপর দ্রুত হাতে টাইপ করল,

"তাড়াতাড়ি বল, আমার কাজ আছে।"


"শীতল পাহাড়ে হঠাৎ উঠেছে অচেনা কোনো ব্যাথা

ছিন্ন ভিন্ন হচ্ছে সে এক অস্থির ব্যাকুলতা।।

পাহাড়ি পথে প্রতি বাঁকে আজ তোর নামেই ধ্যান

তোর কাছে এ খবর পৌঁছে দেবে বসন্তের পোস্টম্যান।।"


সৌরভ রাঠি বলেছিল সে কবিতা লেখে। কিন্তু এটা…!!

"আমি কবিতা পড়িনা। ধন্যবাদ।"

"উত্তরের অপেক্ষায় আছি। কখন পাবো উত্তর?"

"কিসের উত্তর?"

"সেটা না বোঝার মতো বোকা তো তুই নোস।"

"তুই ভুল জানিস। আমি না ভীষণ বোকা।"

"ঠিক আছে তবে তাই সই। 

I love you. I like you from the moment I first saw you."

"এই শব্দগুলো ভীষণ সস্তা তাই না? কাউকে দেখেই সঙ্গে সঙ্গে ভালোবাসা হয়ে যায়?"

"তুই বোধহয় আমার মেসেজটা ভালো করে লক্ষ্য করিসনি। আমি লিখেছি আমি যে মুহূর্তে তোকে দেখেছিলাম আমার ভালো লেগেছিল। তোর মুখের মধ্যে অন্যরকম ব্যাপার আছে, সেটা তুই বুঝবি না। আর সেদিনের পর তাই তোর সম্বন্ধে খোঁজ নিই ভালো করে এবং আস্তে আস্তে আমার ফিলিংগুলো ডেভেলপ করে।"

"বাহ্ তাহলে লোকের মুখে শুনে শুনে ভালোবাসা হয়ে যায়? কার কাছ থেকে শুনেছিস শুনি?"

"সেটা বড় কথা নয়। কিন্তু আমি আমার তরফ থেকে নিজের অনুভূতি সম্পর্কে নিশ্চিত।"

"আমার কোনো অনুভূতি নেই তোর প্রতি, থাকার কথাও নয়। তাই অনুরোধ করছি আমাকে আর বিরক্ত করিস না। এরপর ব্লক করতে বাধ্য হবো।"


                  ★★★★★


আবার ফেসবুকটা অন করল তাতাই। রাজমিতের প্রোফাইলে গেল, অনলাইন আছে সে। মেসেজ করল তাতাই,

---- হাই।

মিনিট খানেকের মধ্যে রিপ্লাই চলে এলো,

---- হ্যাল্লো ম্যাডাম। কি খবর?


---- সৌরভ রাঠিকে চিনিস?


---- সৌরভ? ইয়া অফকোর্স।

He is my bro, my bestest friend.

কিন্তু হঠাৎ ওর কথা জিজ্ঞেস করছিস কেন?


---- তুই আমার সম্বন্ধে ইনফো দিয়েছিস ওকে?


---- ইনফো বলতে?কেসটা কি?


তাতাই রাজমিতকে বলল ব্যাপারটা। রাজমিত সব শুনে লিখলো,

---- ট্রাস্ট মি আমি এসব কিছুই জানতাম না। ও আমাকে বলেছিল ওর একজনকে ভালো লাগে বাট তার নামটা এখনই বলবে না। কিন্তু সেটা তুই বলে আমি জানতাম না। 

আর তৃষা তোর কোনো পার্সোনাল ইনফো আমি কি করে জানবো? 


---- তাহলে তোর বেসটেস্ট ফ্রেন্ড কোথার থেকে এসব জানছে সেটা তো বল।


---- আমার কোনো আইডিয়া নেই বিশ্বাস কর। আমি এসব কিছুই জানিনা। তোর পার্সোনাল ইনফো যখন তখন সেগুলো তোর কোনো বন্ধুই ওকে বলছে নিশ্চয়। তুই তাদের কাছে আগে খোঁজ নে।


   ফেসবুকটা বন্ধ করল তাতাই। সত্যিই রাজমিতের পক্ষে ওর পার্সোনাল ইনফরমেশন জানা সম্ভব নয়। কিন্তু তাহলে কে ওই ছেলেটাকে খবরগুলো দিচ্ছে! তাতাই ভেবেছিল সরস্বতী পুজোর দিনের ঘটনার পর ওই সৌরভ আর বিরক্ত করবে না। কিন্তু সেটা হয়নি। দু দিন চুপচাপ থাকার পর সৌরভ ফিরেছিল নতুন রূপে। টুকটাক মেসেজ করছিল, তাতাই উত্তর না দিয়ে ব্লক করে দিয়েছিল। কিন্তু আজ সকালে সৌরভের অন্য প্রোফাইল থেকে মেসেজটা আসে। মেসেজটা শুরু হয় এইভাবে,

"তুই বলেছিস না আমি তোকে চিনিনা। তাহলে শোন…."

এই বলে পরপর সে এমন এমন তথ্য লিখেছিল তাতাইয়ের সম্বন্ধে যেগুলো ওর ঘনিষ্ট বন্ধুরা ছাড়া কেউ জানেনা। এই নতুন ফোনটা তো কেনার পর থেকে তাতাই বাইরে কোথাও নিয়ে যায়নি তাও সে এটার কথা জানে, তাতাই বেশিরভাগ সময় ব্রাউন কালারের নেল পলিশ পরে… তবুও এগুলো তো ছোটখাটো তথ্য, এগুলোর পরেও ওর লিস্টে এমন অনেক জিনিস ছিল যা ঘনিষ্ট কেউ ছাড়া জানা সম্ভব নয়। কি করে সম্ভব!!!


---- সৌরভ আমি একজনকে লাইক করি। তাই প্লিজ আমাকে আর বিরক্ত করিস না।

অনেক ভেবে কথাগুলো লিখলো তাতাই। সৌরভ অনলাইন ছিল না। রিপ্লাই এলো বিকেলে,

---- জানি। ঋদ্ধিমান চক্রবর্তী। কিন্তু তাকে আর লাইক করে কি লাভ আছে? আমি সবই জানি তার আর তোর বন্ধু নিশার কথা।

আমি কিন্তু ওরকম নই।

  ঢোক গিলল তাতাই। তারপর লিখল,

---- ভুল জানিস।


---- তাই?


---- হুমম। কারণ আমি যাকে লাইক করি সে অন্য একজন।


---- কে? অভিরূপ পাল?

মেসেজটা দেখেই চমকে উঠল তাতাই। তার আর বাক্যস্ফূর্তি হলনা। সৌরভই আবার লিখলো,

---- তুই অভিরূপ পালকে আজীবন লাইক করলেও আমার সমস্যা নেই, কারণ অভিরূপ পাল বলে কারুর অস্তিত্বই নেই। এই নামটা তো তোর কল্পনা মাত্র, ফেসবুক প্রেমিকদের দূরে সরানোর জন্য।


---- বাহ্, অনেক কিছু জেনে গেছিস দেখছি। অনেক বেশি কিছু। তা এটাও তো জানিস যে এইসব ফেসবুক প্রেম থেকে আমি দূরে থাকি।


---- আমি তো ফেসবুকেই শুধু নেই। আমি তো রক্ত মাংসের মানুষ, আমাকে তুই দেখেছিস, আমার অস্তিত্ব নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আর তাছাড়া এতদিনে নিশ্চয় বুঝেছিস আমি এসব সো কলড ফেসবুক প্রেমিকদের মত নই।


---- সৌরভ তুই যাই হ, কিন্তু প্লিজ আমাকে ছেড়ে দে। দেখ সবার তো সবাইকে দেখে অনুভূতি আসে না। বোঝার চেষ্টা কর।


---- আমাকে সুযোগ দে। 


---- কোনো লাভ নেই।


---- তৃষা… আমার পেছনে কত মেয়ে ঘোরে জানিস? আমার ট্যালেন্ট আছে, আমার বাবার টাকা আছে। আমার কাছে সব আছে কিন্তু আমি তোকে চাই।


   শেষ মেসেজটা দেখে চমকে উঠল তাতাই। এতদিন ছেলেটাকে নাছোড়বান্দা ভাবত শুধু, কিন্তু আজ তো দেখা যাচ্ছে সে চরম উদ্ধত, অহংকারী…!!! নয়তো নিজের সম্বন্ধে কে এরকম বলে!!!

আর কোনো উত্তর দিতে ইচ্ছে করছিল না তাতাইয়ের। সে ফেসবুকটা বন্ধ করল। মাথাটা ভার হয়ে আছে। এরকম ভাবে চলতে পারে না। ছেলেটা তো পরোক্ষভাবে ওকে থ্রেট করে গেল…


                 ★★★★★


তাতাইয়ের সামনে একটা ডায়েরী খোলা। ডায়েরীর ওপর ছ'টা নাম…


অরণ্য             সিক্তা               রামিয়া

কৌস্তভ            রিয়া               অনন্যা


ডায়েরীর এক কোণে লেখা নাম সৌরভ রাঠি। হিসেব কষতে বসল তাতাই। সৌরভের সাথে সবচেয়ে ঘনিষ্ট অরণ্য। কিন্তু অরণ্য ছেলেটা খুব একটা জটিল নয়, এটুকু তাতাই জানে। সে সৌরভকে কোনো তথ্য দিলেও স্বীকার করত সেটা। কৌস্তভ অরণ্যের রুমমেট। সেই সুবাদে সৌরভকে চেনে মাত্র, সেভাবে আলাপ নেই। সিক্তা আর অরণ্যের মধ্যে এখন পূর্বরাগের পর্যায় চলছে, তাই দুজনেই দুজনের বন্ধুদের মোটামুটি চেনে। তাতাই চেক করে দেখেছে ghost rider সিক্তার বন্ধু তালিকায় আছে, সুতরাং ওকে সন্দেহের তালিকায় রাখতেই হয়। কিন্তু বাকি তিনজনের সঙ্গে ওই সৌরভ রাঠির কোনো সম্পর্ক আছে বলে কোনো সূত্র পায়নি তাতাই। আপাতত তাই ওদের সন্দেহ করা যাচ্ছে না। তাহলে প্রত্যক্ষভাবে অরণ্য আর সিক্তার মধ্যে কেউ কাজটা করছে। কিন্তু অরণ্য মিথ্যে বলবে বলে মনে হয়না, আর সিক্তা তো তাতাইয়ের সেই নার্সারিবেলার বন্ধু, সে কেন এমন করবে??? 

আর কিছু ভাবতে পারছে না তাতাই। আচ্ছা এমন তো নয় যে কোনো একটা পয়েন্ট তাতাইয়ের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে! হতেও পারে। সৌরভ দিনকে দিন যেন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তাতাই ঠিক করেছে নিজে যদি আজকের মধ্যে সমাধান না করতে পারে তাহলে বাড়িতে জানাবে। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।


   ফেসবুকটা খুলতেই রাজমিতের মেসেজ ঢুকলো,

---- ওই একটা হেল্প করবি?


---- কি?


---- রিয়া ব্যানার্জি তোর বন্ধু?


---- হুমম।


---- ওর বোনকে চিনিস?


---- রিমার কথা বলছিস?


---- হ্যাঁ, চিনিস?


---- কেন বলতো?


---- বল না।


---- কিছু চেষ্টা চালাবি?


---- হেঁ হেঁ


---- ওকে তুই চিনলি কি করে?


---- এক বন্ধুর দ্বারা রেকমেন্ডেড।


---- বন্ধুর নাম কি সৌরভ রাঠি?

  


---- কি করে বুঝলি? তুই ওর নাম শুনলেই রেগে যাস বলে নামটা বলিনি।

  সৌরভের নামটা তাতাই এমনিই বলে দিয়েছিল কিন্তু সেটা মিলে যাবে ভাবেনি। হঠাৎ তাতাইয়ের মাথায় বিদ্যুৎ তরঙ্গ খেলে গেল। রিয়ার বোন রিমা, সৌরভের বেস্ট ফ্রেন্ড রাজমিত। সৌরভ রাজমিতকে রিমার সাথে রিলেশন যাওয়ার কথা সাজেস্ট করেছে!!! অদ্ভুত ব্যাপার তো… হঠাৎ একটা কথা মনে পড়ে যেতেই রিয়াকে তড়িঘড়ি ফোন লাগলো তাতাই। ওপ্রান্তে কেউ ফোনটা তুলেছে বুঝতে পেরেই তাতাই বলে উঠল,

---- রিয়া তুই কিছুদিন আগে বলছিলি না রিমা নির্ঘাত প্রেমে পড়েছে। ছেলেটার নাম জানতে পেরেছিস?


---- তুমি কেন এসব জানতে চাইছো তৃষা দি?

  চমকে উঠল তাতাই। রিমা ফোনটা ধরেছে। 

---- তোর দিদি কোথায়? ওর ফোন নিয়ে কি করছিস?


---- দিদি বাথরুমে, তাই ফেসবুক করছিলাম ওর ফোন থেকে।


---- ওহ। তা বলছি ছেলেটার নাম কি রাজমিত?

  ওপ্রান্ত থেকে কোনো উত্তর এলোনা, কিন্তু তাতাই স্পষ্ট বুঝতে পারল ওর প্রশ্নে বেশ চমকে গেছে রিমা। তাতাই অপেক্ষা করল উত্তরের। কিছুক্ষণ পর রিমার গলা ভেসে এলো,

---- নানা এসব কি বলছো তুমি। আমি প্রেমে টেমে পড়িনি। দিদি ভুলভাল কি বলেছে।


---- ওহ আচ্ছা।

  ফোনটা রেখে দিল তাতাই। কোথাও যেন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সুতোগুলো জোড়া লাগতে শুরু করেছে। ল্যাপটপটা খুলে রিমার প্রোফাইলে গেল তাতাই। ফ্রেন্ড লিস্ট লক করা আছে, দেখার উপায় নেই। সৌরভের ফ্রেন্ড লিস্ট চেক করল,নাহ রিমার অস্তিত্ব নেই কোথাও। তাহলে কি অনুমানটা ভুল ছিল? ধুরর… একটা আশার আলো দেখা গিয়েছিল সেটাও গেল, প্রমাণ ছাড়া কি করা যাবে! ফেসবুকটা লগ আউট করতে গিয়েও কিছু একটা মনে পড়তে থমকে গেল তাতাই। তাড়াতাড়ি ব্লক লিস্টটা খুলল, সবার প্রথমে জ্বলজ্বল করছে একটা নাম "সৌরভ রাঠি"। আনব্লক করল তাতাই। সেদিনের সেই মেসেজটা তো Ghost Rider একাউন্ট থেকে এসেছিল। তাতাইয়ের ধারণা ছিল Ghost Rider নাম পাল্টে সৌরভ রাঠি করেছিল। কিন্তু তা তো নয়। দুটো একাউন্ট ওর। ভাগ্যক্রমে সৌরভ রাঠির ফ্রেন্ড লিস্ট ওপেন ছিল, একটু খুঁজতেও রিমা ব্যানার্জির নাম পাওয়া গেল। বহুদিন পর হাসি ফুটল তাতাইয়ের মুখে… 


                 ★★★★★


"আমি কিন্তু সৌরভের থেকে বেশি হেল্প করতে পারি তোকে, ভেবে দেখ কি করবি? তুই একটা অন্যায় করেছিস সেটা জানাজানি হোক চাইবি নাকি রাজমিতের সাথে তোর সম্পর্কটা তৈরি হোক সেটা চাইবি?"


"রিমার সাথে ভালো মানাবে তোকে। আমি তোকে সাহায্য করতে রাজি রাজ কিন্তু বিনিময়ে তোকেও একটা হেল্প করতে হবে আমায়…" 




দু তিন দিন পর তাতাইয়ের ইনবক্সে একটা মেসেজ ঢুকলো,

---- এটা তোর আর আমার মধ্যে ছিল?


---- রাজকে কেন টানলি?


---- যে কারণে তুই রিমাকে ব্যবহার করেছিলি। রিমা রাজমিতকে পছন্দ করে বলে তুই ওকে এক্সপ্লয়েট করে আমার সম্বন্ধে সব ডিটেইলস জানলি ওর থেকে। ওর দিদি আমার ভীষণ ক্লোজ ফ্রেন্ড, তাই আমাদের দুজনের চ্যাটের স্ক্রিনশট রিমা পাঠাতো তোকে। 

আর তুই সেগুলো ব্যবহার করলি আমাকে ভয় দেখাতে! কিন্তু তুই একটা ব্যাপার জানতিস না সৌরভ--- ভয় দিয়ে ভালোবাসা হয়না। বরং তোকে এখন আরও বেশি করে ঘৃণা করি। 

আর কনগ্রাচুলেশন্স… তোর সম্পর্কে এখন আমিও অনেক কিছু জানি।


   এতো বড় মেসেজটা পাঠানোর পর বেশ কিছুক্ষন কোনো রিপ্লাই এলো না ওপাশ থেকে। তারপর একটু পরে মেসেজটা ঢুকলো,

---- হুমম ঠিকই বলেছিস তুই আমার সম্বন্ধে অনেক কিছু জেনে গেছিস। আর তাই এমন একটা মানুষের সাহায্য নিলি যার কথা আমি মরে গেলেও ফেলতে পারব না। রাজ আমার বন্ধুই নয় আমার ভাই বলা যায় ওকে, আর ও যখন বলেছে আমি আর তোকে কোনোদিনও মেসেজ করব না। 

তবে একটা কথা শুনে রাখ আমার মত ছেলে আর দ্বিতীয় পাবিনা।


   মেসেজের শেষ লাইনটা দেখে কপালের দু'পাশের রগ চেপে ধরল তাতাই--- এমনও মানুষ হয়!!!

"সত্যিই তোর মত আর দ্বিতীয় নেই…" মেসেজটা লিখেও আর পাঠালো না তাই, আঙ্গুলটা সরিয়ে তিনটে ডটে চাপ দিল। অপশন এলো কয়েকটা তার মধ্যে নীচ থেকে দ্বিতীয় অপশনটায় আঙ্গুলটা সজোরে চালিয়ে দিল---- "ব্লকড"।



                   ●●●●●


বেশ কয়েকটা বছর কেটে গেলেও তাতাই আজও সৌরভের সেই দীর্ঘ মেসেজটার কথা ভুলতে পারেনি। জীবনে প্রথমবার এবং হয়তো শেষবারের মত ব্ল্যাকমেইল কাকে বলে টের পেয়েছিল। সেই সাথে এই ঘটনা থেকে দুটো জিনিস শিখেছিল… এক, অহেতুক ভয় পেলে যুক্তি তর্কের ক্ষমতা হারিয়ে যায়, তাই যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন সবসময় মাথা ঠান্ডা রেখে যুক্তি দিয়ে ভাবতে হবে। আর দুই হল, যেই অনুরোধ করুক না কেন যারই পরিচিত হোক না কেন, অচেনা লোককে বন্ধু তালিকায় ঠাঁই দেওয়া!!! তওবা তওবা…


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract