গল্পসল্প
গল্পসল্প
লিখছি একটা ছোট্ট গল্প
পড়তে মজা হয়তো পাবে।একদিন এক মেঘলা রাতে
গর্জে ওঠে মেঘ-
গর্ভবতী মা যে আমার জন্ম দিল আমায়,বাইরে তখন সবার চিন্তাশীল হাল।
কান্নার আওয়াজ শুনে সবার একটু হাসি মুখ,মনে মনে সবার একই ভাবনা
মেয়ে না হয়ে, ছেলে হলেই সুখবর ।যখন বাইরে গেল
সুখবর, আপনাদের মেয়ে হয়েছে,সবার গাল ভরা হাসি আর মন বেজায় ভা্র,মা তখন স্বামীর অপেক্ষায়।
আসেনি সে দেখতে তখনও,
এভাবেই তার দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে গেছে জল।কেনই বা হবে না? নয় মাসের যে অসহ্য ব্যথা নিয়ে আজ নতুন এক প্রাণ এসেছে।
আর, বাবা হয়ে সে না এল!কেন'র উত্তর সে পায়নি কখনও
পরিবারে কেউ লক্ষী ভাবে, কেউ বা ভাবে বোঝা
মেয়ে হয়ে যে জন্ম নিলাম এই কি আমার সাজা?ছোট্ট থেকে অনেক বাধা
দেখেছি অনেক অনাচার
কোনটা ভালো কোনটা খারাপ
বুঝতে গিয়ে চতুর্দশী তে পা ।তখন গুছিয়েছি নিজেকে নিজের মত করে,
যেমনই হোক তারা আমার পরিবার
ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা আমার তাদের জন্য থাকুক চিরকাল।
মেয়ে হলে যে অবহেলা পেতে হয় ,তা বোঝার প্রথমভাগ নিজেকে দিয়ে আর মা কে দেখে বোঝা।।
পথ যে সবে শুরু,দ্বিতীয়ভাগ তো বাকি!
স্কুল, হাইস্কুল আর কলেজের দিনগুলো কেটেছে যেমন তেমন করেই।।
কাজের মধ্যে থাকতে গিয়ে, বন্ধুত্ব হয়েছে গুটিকত
এরই মধ্যে প্রেমের দমকা হাওয়া পেয়ে উড়েছি অনেক, ভাবিনি হাওয়া তো সারাক্ষন চলার নয়
উড়তে গিয়ে চোটও পেতে হয়েছে।হয়ত বলা যায় জখমি ডানা,হঠাৎ নতুন এক আলোড়ন,কাজের পরিবর্তন!
অচেনা জীবন, অচেনা মানুষজন।।
অপরিচিতা আবার তখন পরিচিতা হতে হতে!
থমকে উঠি প্রায় প্রতি পদক্ষেপে, বঞ্চিত হতে হবে এখানেও,
মেয়ে না তুই!উন্নতিরচেষ্টা করলেও উন্নতির দাবিদার এখনো তনয়।।
আমার কাটানো দেড় যুগ,মানুষ এখন অনেকভাবে এগিয়ে,
শুধু মানুষিক দিকে একটু পিছিয়ে।এখনো ভেদাভেদ রাখে ছেলে আর মেয়ে আলাদা করে!
কাজেকর্মে যতই এগোতে যাবে,
পিছাতে হবে মেয়েমহলকে সমাজের ধাক্কায়!আজ আমি ভুক্তভোগী জানি, এরকম অনেক মেয়েরা অবহেলিত হচ্ছে পদে পদে!
মেয়েদের কাজ যে শুধুই হাতাখুন্তি নাড়া নয় আজ যারা বোঝে না, বোঝাও তাদেরকরে দেখাও তাদের,
মেয়ে মানেই কোনো পুতুলখেলা না!মেয়েদেরও প্রান, ইচ্ছা, শক্তি আছে।
তারাও নিজেদের দাবি রাখতে পারে!
মাথা তুলে সমাজে বাঁচতে পারে।।
হিংসার সাথে নয়, অহিংসা নিয়ে ভালোবেসে রেখে দিয়ে ছেলেমেয়ে ভেদাভেদ বন্ধ করো! মুখেমুখে নয় মন থেকে!সবাই মানুষ, বিচার করলে মানুষ হিসেবে করো!