জন্মদিন
জন্মদিন
প্রথম, রাতে নেমেছিল দিবাকর,
সিড়িবাঁধে,হাতকেড়ে বলেছিল,"আসছি বারোটায়, ঘুমিও না"...
সূয্যদিনে সঙ্গম যেন একলা পথে বনে,
বন্ধ জানলায় হ্যাজাকবাতি জ্বলে থাকে,
দূরে গেছে ঘরের লোক - আজ দিন কেন নাছোড় প্রদীপ!!
নামোনা সন্ধ্যা - আঁচল ধসে বসে আছে বুক ৷
অবুঝ বলে - শাবক কেন ঘরে? নারী হও আজ রাতে,
ফেলো,ছাড়ো, এস নিচে,
শরীর গর্ভ চায় না,এ দায় শুধু
'প্রকৃতির' শাসনে পুরুষ রাজা ৷
হোক না জ্ঞাতি,শরীর-মনে যুগ পিছিয়ে এসেছে আমাতে,
বিকেল গড়ালে মনটা পুড়ছে সবুজ,
ন'মাসির বাচ্চা বেরোলো মড়া.
অদৃষ্ট, কেন করোনি বাঁজা ৷
হলুদকড়া,তিন্নিবাটি; আরশোলা যেন মত্ত রাখাল-
এদিক ওদিক,ঝাঁটাটা দে তো-
রাতনিশুতি,ঘুমোনা পশু৷
ভেবে দেখে ওষুধের ডিবে, তবে রে দামাল,
দুবড়ি গুলে গিলিয়েছি-
পাড়া নিঝুম ৷
ছোট্ট মুখে রং দ্যাখো,
শুধায় - "মা, এত বাতি কেন? আজ কি ? পুজো ?"
মনে হয় বলি - কামদেব ৷
পাছে বলে ঠাকুর্দাকে ! ভ্যাদা ন্যাওটা ৷
____________________________
ঘর বুঝি মোমের শশ্মানঘাট,
সারি ধরে জ্বলবে লাশ, মুখাগ্নি দেবে দিয়াশালাই ,
খাড়া দাড়িয়ে কেমন পোড়ে রানি, দেহে তাঁর জগৎজ্যোতি,
মোমের চিতায় লাগেনা কাঠ ।
* * * *
সাঁঝ-তীরের কাব্য ? রাতসমুদ্রে মাংসল চটিবই,
গোলাপ নয়,চটকানো দ্বেষ,
কোমর খুবলে নেয় আঙ্গুলের আঁশ,স্তনে দেয় দাঁত-
বৃন্তের গোমূখ শুষে নিল লৌহকপাট,
নাভিতে কুকুর চাটে, ছিঁড়ে আনে কেশ ৷
শয্যা অন্ধমরু- বধির,অসীম;
চাদরে বালিয়াড়ি,বিষুব-যৌন ঝড়,
যোনি এক পতিতার নাম, জরায়ু জন্মায় না এখানে,
বীর্যস্খলনে নপুংসক অদ্ভুত আদিম ৷
_____________________________
অবেলায় খোলাচিঠি ডাকে-
প্রশ্ন করেছি 'কেন?'
রাতের সিলিংয়েে গলে আসে দিন,
শরীর কিনে নেয় প্রাচীন
দিব্য জরা।
ইচ্ছে যায় না বুক দিতে,সমাজ কাশে,
বিবাহ,দাণ্পত্য,মাতৃত্ব বেরোয় থুতু দিয়ে..
কালো পাখির পালকে খুস্কি, দুঃস্হ প্রেম বাতাসে মেখে,
স্বাধীন ভোরে ওড়ে।
বেলুন বাড়ন্ত,তুলো ঘুমিয়ে থাকে,
তবু বসন্ত সাঁজে,হালকা হাসে- এসেছি।
দোলা বলে, কেমন লাগে উষ্ণতা!!
একমেয়ের মা।
মা?
অণ্কশায়িনীর স্তন পুরুষ ভোগে নৈবেদ্য,
পিপাসা ব্রাত্য,বাসনাভৃত্য।
নির্লিপ্ত ধর্ষণে দেহ বিবর।
______________________________
আজ স্ত্রী নারী.
যুবতী,কিশোরী;
সীতার রক্ষা-বুদবুদ লক্ষণরেখা,
রাবণের ক্ষমতা মূক-বধির,
শূর্পনখা প্রশংসাধীর,
রাম শোনে সবটা!
* * * *
দিবাকর তুমি এসো,
উজার হয়ে ভালোবাসো,
পুরুষ তুমি শরীরে,
শুধু একবার, প্রেম যদি হয় ক্ষীণ মরুসাগর,
হও নারী মনে।
* * * * *
আকশের প্রেমে জ্বলা রামধনু,নোনা বর্ষায় তপ্তঅভিসার,
শুয়ে থাকে বুকের উপর করুণমানসীী।
_______________________________
একতারা মনে পড়ে দিবাকর-
দুলিগায়ে শ্যামা বসল খালপাড়ে,সাতরং ঘুলছে জল-ঘোলাটে,
বাসন্তী দুঃখ যেমন মিশেছে মলাটে,
কলচে মাছ বুঝি আসে শলাকায়,
তারপর সন্ধ্যায় নিত্যদার রেলের বাসায়।
ঠিকাকাজে বেলাগেলে টানবে বিছানায়,
নিঃশেষে গিলে ঘুমায় ধনী,
হপ্তাভর চালের পয়সা তাকিয়া তলায়।
আর ছিল পরশপাথর,
খ্যাপা ছিল নিজমনে,শিকলি পায়ে ফেরে নিশাচর,
বেড়াঘরে ছিটিয়ে থাকে সূয্যের বরফি,
আগামী শুয়ে নেই পৃথিবীর তলে।
আমাদের ছেলেবেলা কেমন শরৎ-অতীত,
সির্ণি পড়েনা পাতে একখোলা,পূর্ণিমা কত সাদাগোল,
আশ্বিন এলে, দাসী বলে-
শোনো কাশফুল,মাকে বোলো ভক্তি মেগেছে আসন,
আমি রয়েছি দুয়ারে,
রেখোনা মাগো চরণ তোমার ভূমিতে,
কাজ্ঞাল ধূলা ভরবে চকিতে,
আঁচল বিছায়ে বসেছে শতসীতা,
দিব সতীর পা মুছায়ে।
_______________________________
ফুল ছিল না স্বার্থপর,
মানুষ বলে, সাজাব ঘর,
সুগণ্ধ কষাব এটে
কাঁটা নেই,ভ্রমর বেঁছে নেয় কাঁকর,
ভক্তির চেয়ে মুক্তি যদি বড়,
ভগবান কেন আসনা গাছতলায়..
-----------------------------------------------------
রসুল হাত পাতে,
কেমন দ্যাখো মণিচারা,
আঠারোতে শখপীড়া,
নতুন যেন প্রাণ।
দেয়াশিনী মাগি কথা বলে না,
পাথরকাড়া ফুল দিয়ে,হাতে লেখে দু-কথা।
রাখো ধরে মাথায় সাঁঝে-রাতে,
বোলো মুখে 'পথকাঁটা দূর হোক' আগে,
আঁটবে নিয়তি বাঁধন,ফল হাতে হাতে।
মেনেছি দিবাকর।
মানেনি ভাগ্য,বাঁচেনি শরীর,
লাল চেলি, লাল বালি,
কেড়েছে গান,শুষেছে প্রাণের মাটি,
বাসরে নীলবৃষ্টি গলে,মণিচারা ভেজে কদাকার,
বাল্যপ্রেমে কবিতা দুমড়ে আছে,
ইতি। হাসে কোমল ঝুলকালি।
দেহ মেলে না। ইঁদুর কাঁটে শশী-যৌবন,
অণ্কে পেতে নেয় উন্মুক্ত লাশ ব্যবহারী দাণ্পত্য,
'স্বামী' - সমাজ শেখায় 'বল স্বেচ্ছায় সমর্পিত আামি'.
ভেবেছো কি সার কখনও মূর্খ,
ছিড়েছো স্তন,খুড়েছো যোনি,
রেখেছো কি কান বুকে?
--------------------------------------------------
মেয়ে বলে, "কিছু সাদা ফুল রেখো,আর আকন্দ গাথা,
বেলপাতা শুনেছি তোমাদের আল্লার খাস।
ভালো দিন ছিল।
বলে বানু,
"শোনো বাতি-
রাতকাঁচা পাখি কাঁদে বাদুড় চোঁখ বুজেঁ,
শুকতাঁরা,ধ্রুবতাঁরা-
কেমন জমে থাকে সন্ধ্যার এলোপটে,
স্ফটিকের মতো আকাশের ছানে,
সূর্য্য এলে গলে যায়,
মরে যায়
স্বপ্ন-"
স্বপ্ন ফেরেনা রাতের কোঠায়।
মুসলমান জাতে,শিবপূজা করবি কিরে?
রুকবানু শোহার নামে জানে গ্রামে।
প্রেম মানেনা দিবাকর-তার 'ধর্ম' ছিল না কোনওকালে,
কুঞ্জবাড়ির ছোটছেলে ধীমান,
আসত বিকালে পানিবাগানে,
বুকে মাথা ঠেকিয়ে শুধায় বানু,
"মিলব কি তবে মোরা এ জনমে"
ভেজাত চোখের জলে পুরুষের বুক,
যেমন সাগর উছলে পড়ে পাহাড়ের রানে।
"শিবরাত্রির ব্রত রাখো,পাবে মোরে সাত জনমে" বলে প্রেমিক।
রাবণী মেঘ আসে, শিবরাত্রি কাছে,
ঋজু আশ তরলপাতায় শুয়ে,
এমন রাতুল চরণ তোমার মহাদেব,
তবে কেন লিঙ্গ পূজে মানুষী?
দেবতার প্রেম কি প্রকৃতি্র ডাক?
অণ্কশায়িনী দেবীও?
যোনিতে দাপট বুঝি দেবতার গ্রাস...
বোঝেনা দিবাকর-
ভালোবাসায় ষোলোবছর ধর্ম জানে শুধু একটা- রঙে সে লাল-
অণ্দরে সবুজ,দালানে গেরুয়া প্রহরীর সাজে,
সন্ধ্যা গেলে মেয়ে বেরোলো পিছন দুয়ার দিয়ে,
থালি হাতে।
হিন্দু মেয়ের বোরখা লাগেনা,
চেয়ে দ্যাখো রীত দিবাকর,
ধর্মের বসন আজ নগ্ন করেছে অণ্তরে,
লুকাতে যায়,ধরা পড়ে,
ধর্মের লেঠেল উত্তরীয় কষে পুছে'
"ম্লেচ্ছ মাগি,মন্দির মাড়াস কোন সাহসে?"
বানু শুধে,
"করেছো প্রেম তুমি ঠাকুর?"
"পুড়েছো সে ধর্মের আগুনে?"
"মানুষ ভেবে,মানুষ হয়ে যদি সইতে না পারে,
ভগবান,মানুষের পূজা লইবে কোন ভারে?"
লাঠি ওঠে নামে,
মুসলমানীর রক্ত মন্দিরের ধাপে,
বিলেতে যায় হিন্দু প্রেমিক।
জানো দিবাকর-
ভক্তি যেদিন পেলো মুফতে লেঠেল,
মানুষ মেলালো জাত,
আবেগে,শোণিতে,অশ্রুতে আমি-তুমি একাকার,
সেদিন প্রেমের রঙ গাঢ় লাল,
সেদিন ধর্মের এন্তেকাল।