Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer
Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer

ABHIK THAKUR

crime

2.5  

ABHIK THAKUR

crime

লাভ-জিহাদ

লাভ-জিহাদ

4 mins
3.6K


আজ রুক্সানার জন্মদিন। এইবারের জন্মদিনটা একটু আলাদা, কারন এটাই ওর জীবনের শেষ জন্মদিন। কাল ভোরেই ওর ফাঁসি হয়ে যাবে। নিজের স্বামী সহ দুই সন্তানকে খুনের অভিযোগে একবছর আগে জেল হয় ওর। গত সপ্তাহে কোর্টের বিচারক ওর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন। দিনটা এখনও মনে আছে ওর। সেদিন ছিল ওদের সপ্তম বিবাহবার্ষিকী। ওর বর, অভিষেক সেদিন অফিস থেকে ছুটি নিয়েছিল। হ্যাঁ, ও এক হিন্দুকে বিয়ে করেছিল। ওদের দুই যমজ মেয়ে, শ্যামা আর রাজিয়াও সেদিন স্কুলে যায়নি। অভিষেক ঠিক করেছিল সবাইকে নিয়ে গাড়ি করে কোথাও লং-ড্রাইভে যাবে। সবাই খুব খুশি ছিল। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আরেক। বেলা দশটার সময় বাড়ির কলিং বেলের আওয়াজে দরজাটা রুক্সানা নিজে হাতেই খুলেছিল। আর দরজা খোলার সাথে সাথেই একটা ভীষণ জোর ঘুষির আঘাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল ও। তারপর আর সেরকম কিছুই মনে ছিলনা। শুধু ভারী গলার আওয়াজে কাওকে বলতে শুনেছিল “তুই আমার ছেলে হয়ে একটা ম্লেচ্ছ ঘরের মেয়েকে বিয়ে করলি কিভাবে? অনেক দিন ধরে তোকে খুঁজেছি, আজ তোর পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে এসেছি।” তারপর কিছু চিৎকার-চ্যাঁচামেচি আর কান্নাকাটির আওয়াজের পর সব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। ওর জ্ঞান ফিরেছিল হাসপাতালের বেডে, চারদিন পরে। সবার মুখে শুনে ও জানতে পারে যে ও নাকি নিজের হাতে ওর বর আর দুই মেয়েকে ছুরি মেরে খুন করেছে। অভিষেক মরার আগে নিজের বাবার কাছে সব বলে গেছে। বিয়ের পর থেকেই নাকি রুক্সানা ওকে মুসলিম হওয়ার জন্যে চাপ দিত। কিন্তু ও রাজি হয়নি, তাই রুক্সানা ওর সাথে খুব বাজে ব্যবহার করত। অভিষেক কয়েকদিন আগে জানতে পারে যে মেয়েদুটির বাবা অন্য কেও। আর তারপর থেকেই রুক্সানা ওকে ব্ল্যাক মেইল করতে শুরু করে, যে ব্যাপারটা কাওকে জানালে ও অভিষেককে খুন করবে। অভিষেক লুকিয়ে বাবাকে ফোনে সব জানিয়েছিল। ছেলের ফোন পেয়েই ওর বাবা আর কাকারা মিলে ছেলেকে উদ্ধার করতে যায়, কিন্তু ওনাদের একটু দেরীই হয়ে গিয়েছিল। রুক্সানা জানতে পেরে যায় যে অভিষেক ওর বাবাকে সব বলে দিয়েছে। তারপর সব্জি কাটার ছুরি দিয়ে প্রথমে অভিষেক ও পরে দুই মেয়েকে খুন করে। অভিষেকের বাবারা ওদের বাড়ি পৌঁছে দেখেন দরজা ভেতর থেকে বন্ধ, দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকতে হয় ওদের। ভেতরে ঢুকতেই ওনারা অভিষেককে রক্তাত অবস্থায় মাটিতে পড়ে কাৎরাতে দেখেন, মরার আগে অভিষেক ওদের সব বলে যায়। মেয়েদুটি নাকি আগেই মারা গিয়েছিল। খুন করার পর রুক্সানা নাকি পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে দুদিন বাদে পুলিশ ওকে বিহারের এক গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। পুলিশ যখন ওকে ধরতে যায় ও নাকি পুলিশের ওপর গুলি চালায়, পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে ও আহত হয় এবং সেই সময় পুলিশ ওকে গ্রেফতার করে। পুলিশ মার্ডার ওয়েপন সেই ছুরিটাও উদ্ধার করে। ফরেন্সিক টেস্টে ছুরির গায়ের আঙ্গুলের ছাপের সাথে রুক্সানার ফিঙ্গারপ্রিন্ট ম্যাচ করে যায়। তারপর রুক্সানাকে খুনি প্রমান করতে বিশেষ অসুবিধে হয়নি। রুক্সানার কেও ছিল না। রুক্সানা কোনদিন ওর বাবাকে দেখেনি, ওর জন্মের আগেই ওর বাবা ওর মাকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওর মা অনেক কষ্ট করে ওকে বড় করেছিল। অভিষেকের সাথে ওর আলাপ কলেজে। অভিষেকেই ওকে প্রোপোস করে। ওরও অভিষেককে ভাল লাগত কিন্তু দুজনের আলাদা ধর্মের জন্যে ও এগোতে চাইত না। কিন্তু একদিন হটাৎ করে ওর মা ট্রাকের তলায় চাপা পরে মারা যায়। তখন অভিষেকই ওকে বলেছিল “আমি আর তোমার কোন কথা শুনব না, আমরা পালিয়ে বিয়ে করছি। আমার বাবা মানবে না, কারন উনি গোঁড়া হিন্দু। আমরা অনেক দূরে চলে যাবো। কেউ আমাদের কোন খোঁজ পাবে না।” মাকে হারিয়ে অথৈ জলে পড়ে রুক্সানা তখন হাবুডুবু খাচ্ছিল, তাই অভিষেকের এই কথায় ও আর না বলতে পারেনি। ওরা পালিয়ে বিয়ে করে অনেক দূরে চলে এসেছিল। অভিষেক একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি জোগাড় করে ফেলে এবং নিজগুণে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কোম্পানির বেশ ওপরে উঠে আসে। এর মধ্যে ওদের কোল আলো করে শ্যামা আর রাজিয়ার জন্ম হয়। দুই মেয়ের এই রকম নাম অভিষেক নিজেই রেখেছিল। প্রতি শুক্রবার করে বউকে মসজিদে নিয়ে যেত নামাজ পড়াবার জন্যে। আবার প্রতি মঙ্গলবার করে রুক্সানা ওকে নিয়ে হনুমান মন্দির যেত। এই মন্দির থেকেই অভিষেকের খোঁজ পায় ওর বাবা। ওর দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় ওকে দেখে ফেলে। তারপর সবকিছু প্ল্যান করে সেরে ফেলতে বেশি সময় লাগেনি অভিষেকের বাবার। মিডিয়ার সামনে অ্যাক্টিংটাও বেশ ভাল করেছিলেন উনি, রুক্সানাই নাকি তার ছেলেকে ভুলিয়ে ভালিয়ে পালিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। তার ছেলে লাভ-জিহাদের শিকার। এই একবছর ও কিচ্ছু বলেনি, পুরো যেন বোবা হয়ে গিয়েছিল। এমনকি একফোঁটা চোখের জলও ফেলেনি। কিন্তু আজ ওর ভীষণ কান্না পাচ্ছে। কিন্তু এ কান্না দুঃখের না, এ কান্না সুখের, কাল যে জন্নতে গিয়ে ওর সাথে অভিষেক আর দুই মেয়ের দেখা হবে। অনেক দিন হয়ে গেল দেখা হয়নি। ফাঁসির দিন সকালে জেলার সাহেব যখন রুক্সানাকে নিতে এলেন, দেখলেন রুক্সানা পালিয়ে গেছে, এই জালি দুনিয়া ছেড়ে জন্নতের রাস্তায় পালিয়েছে সে। আর যেন তর সইছিল না ওর। সেদিন রুক্সানার হাতের শিরা কাটা রক্তে বিচারের বানী সত্যি লাভ-জিহাদের শিকার হয়েছিল, কিন্তু সে কথা কেও কি জানে?


Rate this content
Log in

More bengali poem from ABHIK THAKUR