Sutapa Roy

Crime Thriller Children

3  

Sutapa Roy

Crime Thriller Children

সুরাহা

সুরাহা

3 mins
231



সকাল সকাল রিকের ফোন পেয়ে বিষ্টু চঞ্চল হয়, আবার  কোথাও কোন গোয়েন্দাগিরির সূত্রপাত হল ভাবে-"না"- ও প্রান্ত থেকে শুনল,-"আজ মন-এর জন্মদিন, ওকে সারপ্রাইজ গিফ্ট কিছু দেওয়া দরকার।" দুজনে এইসব আলোচনা করছে, এরমধ্যে যাকে কেন্দ্র করে আলোচনা, সেই মন-এর ফোন এলো। বাবামায়ের সঙ্গে কালীঘাটে জন্মদিন উপলক্ষ্যে পূজো দিতে যাচ্ছে, রিক আর বিষ্টুও যদি যায় ও খুব খুশী হবে। মন্দিরে যাওয়ার ব‍্যাপারে দুবাড়ি থেকে বিশেষ আপত্তি এলো না। নতুন জামা পরে মনকে পুরো পরী লাগছে, তিনজনে আনন্দ করে গাড়িতে উঠল, মন-এর পুচকি ভাইটা বাড়িতে ওর ঠাম্মার কাছে থাকল। বিষ্টু, রিককে দেখে মনের মা খুব খুশী হলেন।


বিশেষ কোন তিথি ছিল না বলে মন্দির চত্বর ফাঁকাই ছিল; মনকে নিয়ে ওর বাবা মা মন্দিরের ভেতরে পূজো

দিতে গেলেন। রিক আর বিষ্টু চারদিক ঘুরে ঘুরে দেখছিল, ওদেরই বয়সী একটা ছেলে শতচ্ছিন্ন জামা পরে ওদের সামনে এসে দাঁড়িয়ে পয়সা চাইল। বিষ্টু পকেট হাতড়ে দশটাকার একটা নোট পেয়ে ছেলেটাকে দিল; রিক জিজ্ঞেস করল-" তুমি স্কুল যাও?" ছেলেটা ঘাড় নেড়ে উত্তর দিল-"না।" বিষ্টু জিজ্ঞেস করল-"তুমি কোথায় থাকো?"- ও চারপাশ দেখে নিয়ে বলল-" টিরু চাচার ডেরায়।" রিক বলল-" তোমার মা, বাবা, ঘরবাড়ি নেই?" ছেলেটা বলল-" ছিল কিনা মনে পড়ে না।"

রিক জানতে চাইল-" ওখানে তুমি একা থাকো?"উত্তরে জানল, ওখানে ওরই বয়সী আরো ছেলেরা আছে। রিকের মাথায় ব‍্যাপারটা গেড়ে বসল, বিষ্টুকে বলল- "মনরা পূজো দিয়ে বেরোবার আগে চল ওদের ডেরা থেকে ঘুরে আসি।" ছেলেটা আঁতকে উঠল-" না না টিরু চাচা বাইরের লোককে ওখানে ঢুকতে দেয় না, যেও না,বিপদে পড়ে যাবে।" রিকের জেদ চেপে গেল, বিষ্টুকে সঙ্গে নিয়ে গোয়েন্দা ইন্সপেক্টর মামা রঙ্গনকে ফোন করল।উল্টো দিকে মামা জিজ্ঞেস করলেন-" তুই এখন কোথায়,বাড়িতে নেই?" রিক ওদের বেরোনোর কথা সংক্ষেপে বলে, ভিখারি ছেলেটার বিষয়ে বলতে লাগল। মামা বারণকরলেন-" ওখানে খতরনাক লোকেদের ডেরা আছে, তুইএখনি এসবের মধ্যে ঢুকিস না।" 


মনদের পূজো দেওয়া শেষ হয়ে গ‍্যাছে, মন-এর জন্মদিনের আনন্দটাই মাটি হয়ে গেল, রিকরা ওই ছেলেগুলোর কথাই ভাবতে থাকল, গাড়িতে চুপিচুপি মনকেও খানিকটা বলল। রঙ্গন সন্ধ‍্যেবেলায় দিদির বাড়ি

একবার ঢু মারতে আসেন, আজ এসেই রিককে মনমরা দেখলেন। বুঝলেন এই কেসের সুরাহা না হওয়া অব্দি রিকের কোনকিছুতেই মন বসবে না। মামা কথা দিয়ে গেলেন উনি ইনভেস্টিগেশনের ব‍্যবস্থা করছেন।

পরদিন রিক বায়না ধরল-" তুমি তো ছেলেটাকে চিনতে পারবে না, আমি, বিষ্টু আর মনও যাই তোমার সাথে।" 

অগত‍্যা মামা ওদের তিনজনকেই নিতে এলো। কালীঘাটে পৌঁছে দেখল, ছেলেটা আজকেও আরো কয়েকটা ছেলের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে ভিক্ষে করছে। রিকদের দেখে ওরা

চলে যেতে গেল, রিকরা গিয়ে আশ্বস্ত করল যে কোন ভয়ের

কারণ নেই। সঙ্গে পুলিশ আর অ‍্যারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে,

ওরা শুধু দেখিয়ে দিক সবকিছু। ছেলেগুলো একটা পানের দোকান দ‍েখাল, ওখানেই টিরুকে পাওয়া যাবে।

পুলিশ দেখে টিরু আর দুই শাকরেদ পালাতে গেল, রিক ছুঁড়লো একটা ঢিল, সোজা টিরুর কপালে, গলির শেষে রঙ্গনের কব্জায় বাকী দুজন। দুজন কনষ্টেবল এলাকায় আগে থেকেই ছিল, তাই আসামীদের হাতের বাঁধন বেশ মজবুতই হল, ছেলেগুলোকে আটকে ভিক্ষে করানোর দায়ে পৌঁছল শ্রীঘরে। ছেলেগুলোকে হোমে পাঠানো হল।রিক, বিষ্টু, মন ছেলেগুলোর মুক্তিতে খুব খুশী হল,

মনে মনে চাইল, ওরা যেন একদিন ওদের বাবামায়ের কাছে ফিরতে পারে। জন্মদিনে মন-এর আনন্দ পূর্ণতা পেল। সন্ধ‍্যেবেলায় তিন ক্ষুদের ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠান করতে আর কোন বাধা রইল না।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Crime