Manab Mondal

Abstract Romance Inspirational

4  

Manab Mondal

Abstract Romance Inspirational

খোঁজ

খোঁজ

6 mins
447



তানিয়ার ঘরেই আমাকে আসলে প্রথম দেখেছিলো নীলা। আমার অবশ্য সে কথা মনে ছিলো। ও কথায় কথায় একদিন বলেছিলো সেই কথা। আসলে তানিয়া নীলুকে বলেছিলো আমি নাকি ওর জীবনের সবচাইতে নিরাপদ পুরুষ যে ওর ওপর প্রলুব্ধ হয়ে যাই নি কখনো। ও অবশ্য এর জন্য আমার অজান্তে আমার পরীক্ষা নিয়ে ছিলো। আসলে তানিয়া ছিলো একটা সংগ্রামী মেয়ে। ও তখন একটা একটা প্রাইভেট ব্যাঙ্কে চাকরি করে। লোন ডিপারমেন্টে । ওর কাজ ছিলো লোকজনকে লোন করিয়ে দেওয়া। আসলে এর জন্য ওর একটা লক্ষ পুরণ করতে হতো মাসে মাসে। আমি তখন নতুন কাজ যোগ দিয়েছি জীবন বীমা কোম্পানিতে এডভাইজার হিসাবে। দুই জনেই পরস্পরের ওপর নির্ভর শীল ছিলাম। ঠিকানার প্রমান পত্র হিসাবে lici Bond বা রিসিভ কাজে দিতো। তাই ও আমাকে অনেক কাস্টোমার দিতো।

তবে ঠিক পেশাগত কারণে শুধু মাত্র নয় আগে থেকেই আমরা ভালো বন্ধু ছিলাম। ওর হঠাৎ করেই বিয়ে হয়ে যাওয়ায় মাঝখানে সম্পর্ক ছিলো না। তারপর হঠাৎ করে দেখা হয়েছিল একদিন মেট্রো স্টেশনে ওকে চিনতেই পারিনি। পুরোপুরি কর্পোরেট পোশাকে। ও নিজেই ডেকে কথা বলেছিলো। তাই জানতে পেরেছিলাম। ও ওর বরকে ছেড়ে চলে এসেছে। ওর একটা মেয়ে হয়েছে। আর মেয়ে সহ সঞ্জয় ওকে বিয়ে করবে বলেছে বলেই ও ভরসা করে এসেছে। কিন্তু এক মাস দু মাস ঘুরতে না ঘুরতেই কানাঘুষা শুনলাম ওদের মধ্যে অশান্তি চলছে।

কথা ও বলে নি। আমাদের পরিচিত এক দিদি আমাকে বলেছিলো। সম্পা দিদি আমার কাছে থেকে lici পলিসি করিয়েছেন। তাই ওনার বাড়িতে আসা যাওয়া ছিলো। উনি আবার তানিয়ার থেকে একটা পার্সোনাল লোন করিয়ে ছিলো। ওর মিষ্টি স্বভাবে জন্য ওকে দিদি নিজের বোন হিসেবে দেখতো। সম্পা দিদি সেই দিন বললো "তোমার ভালো বন্ধু , তোমরা কেন বিয়ে করে নিচ্ছো না। সঞ্জয় সাথে ওর ব্রেক আপ হবেই। তানিয়া তোমাকে ভালবাসে। তুমি ওর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা কর।" আমি ওনাকে কোন উত্তর দিতে পারি নি । কিন্তু পরে দিন জানতে পারি তানিয়ার কাছ থেকে যে ওদের ভিতর কোন সম্পর্ক নেই।

ওর পরদিন সকালে হঠাৎ করেই ও আমাকে আমাদের বাড়ি সামনে একটা পার্কে ডেকেছিল।

আমি ওখানে গিয়ে দেখলাম ওর মেয়ে আপন মনে খেলা করছে। ওর সাথে একটা ছোট ব্যাগ। পরে জানতে পারেছিলাম ওতে ওর মেয়ের জামা কাপড় আছে। আসলে সঞ্জয় আগে থেকেই বিবাহিত ছিলো। ও সেটা জানতে পেরেছিলো কিছুদিন আগে। সেটা নিয়ে ওদের মধ্যে চাপ অশান্তি চলছিলো। সঞ্জয় কথা ও তানিয়ার দায়িত্ব নিয়েছে, আশ্রয় দিয়ে এরচেয়ে বেশি কিছু ও দিতে পারবে না। তানিয়ার প্রাক্তন স্বামীর অনেক পয়সা ছিলো কিন্তু চরিত্রটা তার একটু ঢিলে ঢালা ছিলো তাই ও উনাকে ছেড়ে দিয়েছে। আসলে মেয়েরা বোধহয় সব কিছু ছেড়ে দিতে পারে কিন্তু তার স্বামীর ওপর তার একার অধিকার  চায়।

যাইহোক ওর মেয়েটা খুব মিষ্টি। আমার বাবা মা ওর মেয়েকে রাখতে রাজি হয়ে গেল।ও আমাদের বাড়ি কাছাকাছি একটা ঘর ভাড়া নিয়েছিলো। ও আমাকে অনুরোধ যেনো ঘর সাজানোর জন্য একটু হ্যাল্প করি। মানে কিছু জিনিস পত্র ও কিনবে ও তা দিয়ে সাজানো হবে ঘর। ভোর ভোর ও ওর ঘরে আসতে বলেছিলো। ভোরেই আমি পৌছালাম , কিন্তু ও চোখ থেকে তখন ঘুম সরে নি। ও আমাকে বসতে বলে। আবার বিছানায় নিলো। তবে বিছানা বলতে কিছু না। একটা মাদুর। ওর দেখে মায়া হলো। প্রকৃত অর্থেই ও এক কাপড়ে সঞ্জয় এর ঘর ছেড়েছে। সেটা আমার বুঝতে বাকি রইল না। সেইদিন আমাদের বাড়ি থেকে আসার সময় ও আমার একটা জামা চেয়ে নিয়েছিলো। সেটাই ও পরেছে।

আমার জামাটা ওর শরীর ঢাকতে অপারক। তার ওপর ও অন্তর্বাস পরে নি। যদিও ইচ্ছে করে পরে নি এটা নয়। ঘরে কোন আসবাবপত্র ছিলো না। একটা শুরু লাইলন দড়ির উপর ওর অফিসের জামা কাপড় আর অন্তর্বাস শুকাছিলো সেটা আমার চোখ এড়িয়ে যায় নি। ওর যৌবন আটকে রাখা মতো জামাটা নয়। আমি তো রোগা মানুষ ওর জন্য অন্তত একটা xl জামা লাগতো। তারপর অন্তর্বাসহীন । গোপন অঙ্গ টা আর গোপন থাকে না। ওর শরীর আকর্ষণীয় ছিলো। কিন্তু সংযম হারিয়ে ফেলি আমি সেই দিন। নীলাকে সেই কথা ও বলে ছিলো। ও নীলা এ ও স্বীকার করে নিয়েছিলো, ও সেইদিন চাইছিলো আমি কোন ভুল করি। কারণ তাহলে হয়তো ওর আমার দায়িত্ব হয়ে যাবে।

দায়িত্ব কর্তব্য আর সাহায্য দুটি শব্দের মধ্যে পার্থক্য অনেক বোধহয়। তাই সেই তানিয়া চেয়েছিলো আমি ওর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে কোন ভুল করি। কিন্তু একটা মেয়ের শরীর ভোগ না করলে কি তার প্রতি দায়বদ্ধতা জন্ম হয় না? মেয়েদের শরীর উপভোগ করাই একটা পুরুষ কাছে এক মাত্র শর্ত । ও তো আমার ভালো বন্ধু ছিলো। কিন্তু ওর একটা ভুল ধারণা ও সুন্দরী তাই আমি ওর প্রতি দূর্বল এবং তাই ওর সাথে বন্ধুত্ব বজায় রেখে ছিলাম।

তবে জানেন ওই ভোর ওর শরীরটা আমি উপভোগ করি নি বলেও মাঝে মাঝে আমার আপোষ হয়। কারণ হঠাৎ করে ও আবার আমার জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। বিশেষ করে তানিসা কে করে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল ও । তানিসা আমার মেয়ে কিনা সেটার রহস্য উদঘাটন করতে চাই না আমি। কিন্তু তানিসা তো আমার মেয়ের মতো হয়ে গেছিলো। তাকে ও কেন কেড়ে নিলো। ছেলেবেলার দুরন্ত দুষ্টুমি কি বড়ো বেলায় সাজে বলুন। আমি ওকে খুঁজে বেড়াই এখনো শুধু এ শহরে নয়। ভারতের যে শহরে যাই সেই শহরেই। যেমন ওকে খুঁজে ছিলাম ওকে প্রথম।

আমি তখন সবে কলেজ ভর্তি হয়েছি । এগারো ক্লাসে পড়া থেকে একটা নিরামিষ উপন্যাসিক প্রেম এসেছিল আমার জীবনে। তখনও আমাদের জীবনে ফোন আসে নি। তাই চিঠী বিনিময় প্রথা চলতো। আমি বিজয়া চিঠি লিখতাম নিয়মিত। চিঠিটা নাকি সারা স্কুল পড়ার পর ও হাতে পড়তো। আমি এই জন্য খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলাম। যদিও তখন আমি উদিয়মান কবি হিসেবে পরিচিত পেয়েছি একটু আধটু, পাড়ায় পাড়ায় মঞ্চে কবিতা বলে বেড়াতাম। যদিও আমার লক্ষ্য ছিলো অমৃতা ঐ চিঠি পড়ুক। অমৃতা আমার পাড়া মেয়ে আমার তুতো প্রেম। হঠাৎ একদিন ওর জোর হাগ করা সময় ও বাধা দিয়েছিল । তাই ওকে জ্বালাতেই আমি বিজায়া চিঠি দিতাম। 

কিন্তু হঠাৎ অমৃতা ছল ছল জল চোখে একটা চিঠির হাতে ধারালো আর বললো বিজায়াকে যেনো আমি না ঠকাই। চিঠিটা খুলে যখন পড়লাম দেখালাম বেশ আবেগ দিয়ে লিখেছি বিজয়া। তার সার অংশ সে আমাকে কোন দিন ভালোবাসে নি ভালোবাসে না,ভালোবাসবেও না। তিন তিনটে না থাকলে সবাই জানে সে অভিমানী। আর এই অভিমানের কারণ খুঁজতে গিয়ে প্রথম শুনলাম তানিয়ার নাম। সে ওদের দুইজনের কাছে দাবি করেছে আমি ওর বয় ফ্রেন্ড। বিজায়া মতো সুন্দরী মেয়ের সাথে ব্রেকআপ হওয়াও আমার কাছে কোন গুরুত্ব ছিলো না , কিন্তু অমৃতা চোখের জলটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। তাই ঐ অচেনা তানিয়াকে আমি খোজ করতে থাকি। কারণ অমৃতাকে বোঝাতে হতো আমাকে। আমি শুধু ওকেই ভালো বাসি।

যাইহোক তানিয়ার সাহায্য নিয়ে আমি অমৃতাকে বোঝাতে পেরেছিলাম আমি যে শুধুমাত্র ওকেই ভালোবাসি। আর তানিয়া সাথে এভাবেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। অবশ্য তানিয়া সাথে পরে আমার অন্য একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে সেটা হলো ছাত্র শিক্ষক এর সম্পর্ক। তখন অনলাইন ব্যাবস্থা চালু হয়নি। ও আমার প্রথম ছাত্রী যে মাধ্যমিক দিচ্ছে। তাই একটা উৎসাহ ছিলো। তাই সন্ধ্যাও ওর রেজাল্ট খবর না পেয়ে আমি হাজির হলাম ওর বাড়িতে। কিন্তু ওর বাড়ি পরিবেশটা ভুতুড়ে। ও ঘরে ঢুকতেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করল। আমার সাবজেক্ট গুলোও ভালো নম্বর পেলেও। সঞ্জয় এর কাছে যে সাবজেক্ট গুলোও পড়ছিলো সে গুলো অকৃতকার্য হয়েছে ও। 

হবে বা না কেন? তানিয়া মা ছোট বেলায় মারা গিয়েছিল। ওর বাবা আর বিয়ে করে নি। ব্যবসার কাজে সারাদিন বাড়িতে থাকতো না। আর সেই সুযোগে ওরা পড়াশোনার নামে ফষ্টি নষ্টি করতো। যাইহোক ওর বাবা রাগ অপমানে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। ও অনুরোধ করলো ও আমার বাড়িতে থাকি। ও ঘরে ঢুকতেই যখন আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলো তখনই কেন যেন ওর মসৃন শরীর ছোঁয়ায় আমার চরিত্রের পতন ঘটেছিল। আমার মধ্যে ওর শরীরের প্রতি একটা লোভ জন্মেছিলো। আর সেই দিন রাত্রের সুযোগটার সৎ ব্যবহার করেছিলাম। আর সত্যি কথা বলতে লাভবান হয়েছিলাম কারণ ওকে নিয়ে হঠাৎই ওর বাবা কোলকাতা ছেড়ে দিয়ে অশোক নগর চলে যায়। আর সেখানেই ও বিয়ে হয়ে যায় দুই মাসের মধ্যে।কাজের সুত্রে অশোকনগরে গিয়ে আমার ওর প্রাক্তন স্বামীর সাথে দেখা হয়। মানুষটা খারাপ নয়। তানিয়াকে ভালোওবাসে। কিন্তু গন্ডগোলটা অন্য জায়গায়, ওনার মুখে জানতে পারলাম, আমি নাকি ওদের বিচ্ছেদের কারণ। আমি ফোন করে তানিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম। তানিসা কি সত্যিই আমার মেয়ে? ও কোন উত্তর দিলো না। বাড়ি এসে শুনলাম তানিয়া তানিসা কে নিয়ে চলে গেছে। ওদের আমি আর খুঁজে পাই নি। তাই খুঁজে পাই তানিসার আসল পরিচয়,,,,,


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract