ড্রিম ট্রাভেল
ড্রিম ট্রাভেল
দিনে দুপুরে, লোহার পালঙ্কে লম্বা নিদ্রায় ডুবে আছি, এমন সময় অনুভব করলাম, হৃদস্পন্দনের গতি ধীরে ধীরে বাড়ছে। বন্ধ দুই চোখের অভেদ্য পর্দার আড়ালে ভেসে উঠছে অস্পষ্ট গুটিকতক দৃশ্য, যার বাস্তবিক অস্তিত্বের সন্ধান, অসাধ্য, অসম্ভব।
আমি রিচার্ড হাডসন, হলফ করে বলতে পারি, বর্তমানে আমি যা দেখছি, সত্যি দেখছি। আমার চোখের সামনে এখন একটি গির্জার দরজা। আর তার ভিতর থেকে মাঝে মাঝে ভেসে আসছে টুং টাং শব্দ।
আকাশে চাঁদ নেই। আশ্চর্যের বিষয়, মেঘহীন আকাশে একটি তারাও নেই। চারিদিকে কেবল শূন্যতা। আর সেই শূন্যতা ভেদ করে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে এই গির্জা।
ভিতরে পা রাখতেই 'ধড়াম' শব্দে গির্জার দরজা বন্ধ হলো। আর ঠিক তখনই, শূন্যতা ভেদ করে জ্বলে উঠলো একটি মোমবাতি।
মনে সাহস এনে যত এগোলাম স্পষ্ট দেখলাম, যীশুর পায়ের সামনে রাখা মোমের অর্ধেক এখন জ্বলছে। আর তার ঠিক পিছন থেকে ফুটে উঠছে লাল দুই আলো। যেন দুটো চোখ জ্বলছে, আর সেই দুইচোখে প্রতিফলিত হচ্ছে হিংসা।
মুহূর্তের মধ্যে আরও দুটো আলো জ্বলে উঠলো। খানিক পর আরও দুটো। এইভাবে জোড়া জোড়া চোখ মিলে যখন ডজনে এসে থামলো, ঠিক তখন, গলার কাছটা দলা পাকিয়ে এল আমার। মনে হলো...আমার ডান কাঁধে খোঁচা খোঁচা নখ...
নিজের শরীরটাকে এক হ্যাঁচকায় সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে টাল সামলাতে না পেরে মুখ থুবড়ে পড়লাম মার্বেলের উপর।
হুড়মুড় করে উঠে বসলাম। গায়ে হাত রেখে ডেকে চলেছে আমার চার বছরের মেয়ে লিলি। ওর হাতে একটি আর্ট পেপার। যার উপর আঁকা আছে কাঁচা হাতে আঁকা একটি ছেঁড়া গাউন পরা নারীমূর্তি। বড় নখওয়ালা হাতের একটাতে মোমবাতি, অন্যহাতে ঘন্টা। চোখদুটো লাল। এদৃশ্য দেখে অসহ্য যন্ত্রণায় বুকটা চেপে ধরলাম। ডাক্তার জেনি বলেছিলেন, বেশী উত্তেজিত হলেই হার্ট ব্লক হবার সম্ভাবনা প্রবল।
সমাপ্ত...