আলো— সে তো ভালো
আলো— সে তো ভালো
প্রথমে ‘টুনি’র কথা :—
একটি টুনি-বাল্বের আলো তার পাশে থাকা একটি টিউব লাইটের আলোয় ঢাকা পড়ে যাচ্ছিলো। টিউব লাইট উপহাস করে টুনি-বাল্বকে বললো,
— কি রে, মিটমিট করে দেখছিস কী? আমার আলোয় তুই তো ভেসে যাচ্ছিস—
টুনি বাল্ব হাসলো। উত্তরে বললো,
— বোঝো না কেন, ‘যারা বেশি বাড়ে তারা ঝড়ে বেশি নড়ে’। তুমি যখন ফুস্ হয়ে যাও আমি তখনও আলো দিই। আমি বাঁচি ৫০,০০০ ঘন্টা আর তোমার তোমার আয়ু ২৫,০০০ ঘন্টা। সম্মান দিতে শেখো।
আলোর বিচ্ছুরণ চোখকে ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি, এটি দেখে একটি আলোকবিন্দু আমাকে বললো,
—উজ্জ্বল কিছু ভাবতে হলে আমার কথা ভেবোনা, এর চেয়ে সকলকে ভালোবাসার কথা ভেবো।
উজ্জ্বল কিছু দেখতে হলে আমাকে দেখোনা, নিজের জ্ঞানের পরিধিকে দেখো।
উজ্জ্বল কিছু চাইতে হলে আমাকে চেয়োনা, ভালো মানুষ হতে চেয়ো।
একটি ৫ ওয়াটের কিশোর বাল্ব একা একা বেশ আনন্দ করে জ্বলছিলো।
তার পাশে ৭ ওয়াটের একটি কিশোরী বাল্বকে জ্বালানো হলো।
কিশোরী বাল্ব প্রথমে মুখ খুললো,
— আমি আসার পর তোমার জীবনে রোশনাই ছড়িয়েছে, তা কি তুমি বুঝতে পারছো?
— ভালোই বুঝতে পারছি। তুমি আসার পর নিজের জীবনকে নিষ্প্রভ মনে হচ্ছে। ফিকে হয়ে গেছি।
শহরের মানুষজন এবং কোনো কোনো দেশের সরকার আলো দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রাতকে দিন করে ফেলেছে।
একবার পড়েছিলাম, কাতারের দোহা শহরের আলোয় রাত—দিন হয়ে থাকে। রাতে সেখানে জানালা বন্ধ করে অন্ধকার করে ঘুমাতে হয়।
রাতে স্মার্টফোনের আলোকরশ্মি আপনার চোখের জন্য, শরীরের জন্য কেমন তা তো জানেনই।
আমরা বিচিত্র আলোকে সজ্জিত করছি বাড়ি, রাস্তা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
“ঈশ্বর” ভাবছেন.....
“আমার সৃষ্টিজগত কত আলোকিত হয়ে গেছে। আলো তাদের কাছে এক আরাধ্য বস্তু। অথচ এই মহাবিশ্বের অধিক অংশকে এখনো আমি অন্ধকারে ডুবিয়ে রেখেছি।
মানুষ নিজেকে আলোকিত করে আমাকে অন্ধকারে রেখেছে। যেদিন ওরা অন্ধকারে ছিলো, আমি দিয়েছি আলো— পাথরে পাথরে ঘষে আলো জ্বালিয়েছে ওরা, সে পাথর আমার!”
এক রাতে একটি বাল্বের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় হঠাৎ বাল্বটির ফিলামেন্ট আমাকে বলে উঠলো,
— একটু দাঁড়ান, আমাকে সাহায্য করুন— আমার শরীর দারুণভাবে পাক গেছে!
এক ব্যক্তি জেলের অন্ধকার কুঠুরিতে নিক্ষিপ্ত হলেন। তার একটিমাত্র ভুল হয়েছিলো যার জন্য তিনি আজ অন্ধকারে। তিনি করেছিলেন কি, রাস্তায় আলোর গতিতে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করে ধরা পড়েছিলেন। আর তার ফলে একজনের জীবন প্রদীপ নিভে যায়। সুতরাং তিনি জানেন না, আবার কবে আগের মতো আলোয় ফিরবেন।
দু’জন মনের সমস্যায় জর্জরিত ব্যক্তি কথা বলছিলো।
১ম ব্যক্তি— ভেবে দেখো, সব কেমন উল্টো উল্টো। দিনের বেলায় সূর্যের কী দরকার? তখন তো চারিদিকে আলো। সূর্যের দরকার তো রাতের বেলা। তখন আলো নেই।
২য় ব্যক্তি— ঠিক কথা বলেছো। আর অন্ধকার বলে আসলে কিছু নেই। আলো জ্বলার সাথে সাথেই অন্ধকার যায় কোথায়? মুহূর্তে ভ্যানিশ হয়ে যায় নাকি!
|| তবে আজ থাক ||