Poulomee Cherry

Tragedy Action Thriller

4.0  

Poulomee Cherry

Tragedy Action Thriller

আজকের দিনের গপ্পো

আজকের দিনের গপ্পো

3 mins
372


একটা ভিডিও দেখেছিলাম। তাতে কয়েকজন অ্যামেরিকান বন্দুকের দোকানে দাঁড়িয়ে বন্দুক কিনছিল। একজন সাংবাদিক তাদের মধ্যে একটি লোককে জিজ্ঞেস করছিল, যখন সারা পৃথিবী এই দুর্যোগের সময়ে খাদ্য মজুদ করছে, তখন আপনি বন্দুক কিনছেন কেন। লোকটি জবাব দিয়েছিল, আমার খাদ্য মজুদ করা হয়ে গেছে, কিন্তু আর ক'দিন পরেই সবার কাছেই খাদ্যশস্য এবং অর্থ ধীরে ধীরে শেষ হবে। আর তখনই সেইসব মানুষ বেরিয়ে পড়বে খাদ্যের সন্ধানে যাদের শেষ হয়েছে, এবং হয়ত তাদের মধ্যে কেউ কেউ গায়ের জোরে ছিনিয়ে নিতে চাইবে আপনার কাছে থাকা খাদ্য। তখন আপনি নিজেকে এবং আপনার কাছে থাকা অর্থ এবং খাদ্য রক্ষা করবেন কি ভাবে? 


শুনতে কষ্ট হচ্ছে, রাগও হচ্ছে হয়ত। মনে হচ্ছে মানুষ কতটা নির্দয়ভাবে চিন্তা করে। মানবিকতা কি মরে গেছে, কেন মানুষ ভাগাভাগি করে নিতে পারেনা। এইসব চিন্তাভাবনা সত্যিই সুস্থ চিন্তাভাবনা.. কিন্তু যদি কখনো এইরকম পরিস্থিতিতে পড়েন তখন দেখবেন যে বা যারা ছিনিয়ে নিতে চাইবে তারা এইসব মানবিকতার ভাষা, তত্ত্বকথা বুঝতে চাইছেনা একেবারেই। তারা তখন ক্ষুধার ভাষা বুঝবে এবং ছিনিয়ে নিতে চাইছে। তবে এ-ও আবার শর্তসাপেক্ষ। 


তবে আমি বিশ্বাস করি তাকে প্রতিরোধ করার ভাষা বন্দুক কখনোই হতে পারেনা। আমিও আপনাদের সাথে একমত, ক্ষুধার্ত মানুষ, বন্দুকের গুলির শিকার হতে পারেনা। তাদের পেটে অন্ন চাই। কিন্তু সরকার যদি অর্থনীতিতে পর্যাপ্ত অর্থের যোগান দিয়ে তাকে চাঙ্গা না করতে পারে, তখনই গোলযোগ শুরু হবে। এই ছিনিয়ে নেওয়ার প্রবণতা কিন্তু শুধু গায়ের জোরে হবেনা। এ হবে ধুর্ততার সাহায্যে, অসভ্যতা অসততার সাহায্যে। ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ী থেকে শুরু করে অত্যাবশকীয় সামগ্রী, বড়সড় ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং সরকার নিজেও নানারকম ট্যাক্সের এবং অনুদানের আকারে আপনার কাছ থেকে টাকা নিতে শুরু করতে পারে। 


এদিকে আপনারা শুনতে পাচ্ছেন প্রচুর মানুষ এর মধ্যে কাজ হারাচ্ছেন , আর কাজ কমতে থাকলে বেঁচে থাকার তাগিদে প্রচুর মানুষ বেছে নিতে শুরু করবে এমন পথ যা'কে আমরা সমাজের ভাষায় ভাল বলিনা। তবে এমন মানুষও পাবেন যিনি এই দুর্যোগের বাজারে ঠিক খুঁজে নেবেন নতুন কিছু করার আইডিয়া, যা বিশ্বকে সাহায্য করবে এবং তাকে করবে সফল। সেইসব মানুষ নিজেও বাঁচবে আর তার উদ্যোগ বাঁচাবে হাজার লাখ মানুষের জীবন। সময় বলবে সেইধরণের মানুষ কতজন উঠে আসবে সমাজ থেকে।


তবে এইটা নিশ্চিত যে প্রতারক এবং জালিয়াতেরা আরো সক্রিয় হয়ে উঠবে আরেক নতুন ধরনের ভাইরাসের মতো। ব্যবসা, চাহিদা কমতে থাকলে কমে যাবে কাজ। নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নিতে চেষ্টা শুরু হবে। ঠিক যেমন কিছু কল আসে আপনাদের কাছে। আপনার ব্যাঙ্কে এত টাকা দেওয়া হচ্ছে সরকারের তরফ থেকে। টাকাটা ঢুকতে গেলে আপনার মোবাইলে একটা ওটিপি যাবে, আপনি শুধু আমাদের ঐ ওটিপিটা বলে দিন, টাকা আপনার ব্যাঙ্কে ঢুকে যাবে এক্ষুণি। সেইসব কল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।


আসলে টাকা ঢুকে যাবেনা। আসলে টাকার বদলে আপনি ঢুকে যাবেন অতল অন্ধকারের গহ্বরে। আপনার সব টাকা ধুয়েমুছে নিয়ে যাবে জালিয়াতেরা। ইমেইল আসতে পারে, ফোন কল আসতে পারে, SMS আসতে পারে, অথবা আসতে পারে আজকের যুগের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। বলা হতে পারে করোনা সম্পর্কিত তথ্য চাইছে সরকার। সেইভাবে নিয়ে নেওয়া হতে পারে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য। অথবা বলা হতে পারে সরকার আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা দিতে চাইছে। একটা ওটিপি যা আপনার মোবাইল নাম্বারে এক্ষুণি আসবে, তা আমাদের জানিয়ে দিন, আমরা টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করব।


Rate this content
Log in