🤐 প্রতিবাদ করতে নেই

সবসময় সবকিছুর প্রতিবাদ করতে নেই -

পাড়ার মোড়ে বখাটে ছোড়াদের

ইভটিজিংয়ের শিকার হলেও

প্রতিবাদ করতে নেই । 

বাড়ির সামনে মহিলা সমাবেশে

পরনিন্দা - পরচর্চার হাসাহাসির

প্রতিবাদ করতে নেই । 

শ্বশুর - শ্বাশুড়ীর সামনে বৌমা হয়ে

স্বামীর অপরাধের প্রতিবাদ করতে নেই । 

স্বামী মদ্যপ অবস্থায় ফিরে 

অত্যাচার করলেও প্রতিবাদ করতে নেই । 

স্বামী পুরুষটি অসৎ বন্ধু ও পরকীয়ায়

উন্মত্ত হলেও প্রতিবাদ করতে নেই । 

অফিসের বসের নোংরা ইঙ্গিতের

প্রতিবাদ করতে নেই । 

মাইনে সঠিক সময়ে না পেলেও

প্রতিবাদ কিন্তু করতে নেই । 

অফিসে কিছু ব্যক্তি মিলে নিত্য

অপমান করে কোণঠাসা করে দিলেও

প্রতিবাদ করতে নেই । 

কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য

ঘুষ না দেওয়ার দন্ড স্বরূপ

এক টেবিল থেকে আরেক টেবিল ঘোরালেও

প্রতিবাদ করতে নেই । 

ধারের অর্থ উদ্ধার করতে গিয়ে

পাওনাদারদের চটিজোড়া ক্ষয় হয়ে গেলেও

প্রতিবাদ করতে নেই । 

সবসময় সবকিছুর প্রতিবাদ করতে নেই ! 

পুলিশদের সততার সম্বন্ধে প্রশ্ন করে

তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও আইনি ফাঁকের

প্রতিবাদ করতে নেই । 

মন্ত্রী - আমলাদের দূর্নীতি ও কেচ্ছার

প্রতিবাদ করতে নেই । 

সমাজের উৎকৃষ্ট লোকদের

নিকৃষ্ট কাজের পাহাড় জমে উঠলেও

প্রতিবাদ করতে নেই । 

সরকারি হাসপাতালে বেডের অভাবে

মাটিতে শুয়ে চিকিৎসার পরিবর্তে

ভৎর্সনার প্রতিবাদ করতে নেই । 

বেসরকারি হাসপাতালে সামান্য রোগের

অসামান্য উপর্যুপরি টাকার বিলের

প্রতিবাদ করতে নেই । 

রুপোলি পর্দার অন্তরালে থাকা

নামজাদা তারকাদের কোটি কোটি টাকার

শুল্ক ফাঁকির প্রতিবাদ করতে নেই । 

বড়ো বড়ো পরিচালকদের হাতছানি ও

লালসার শিকার হয়ে রুপোলি পর্দার

অসামান্যা নায়িকা হয়ে ওঠার প্রস্তাবের

প্রতিবাদ করতে নেই । 

বুদ্ধিজীবী পরিচালক 

বিশিষ্ট তারকাদের সমারোহে , 

ভারতবর্ষের হাড় - হাভাতে মানুষের

জীবন নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করে -

দেশকে লজ্জায় সম্মুখীন করে  

দেশ - বিদেশব্যাপী পুরস্কার অর্জন করে , 

তা দেখে ভারতবর্ষের অপমানে

ভারতীয় হয়েও প্রতিবাদ করতে নেই । 

যত্রতত্র বিপদে পড়া নারীদের

লজ্জায় পড়তে দেখেও , লজ্জা বস্ত্র ছিঁড়ে

 শরীরটা রক্তাক্ত হতে দেখেও

প্রতিবাদ করতে নেই । 

মোটের উপর ঘরে - বাইরে কোথাও

কোনো কিছুর প্রতিবাদ করতে নেই , 

প্রতিবাদ করলেই জুটবে

অপমান - তিরস্কার অথবা

একঘরে হয়ে থাকার শাস্তি , 

কখনো কখনো গুলিবিদ্ধও হতে পারেন । 

তাই মুখ থাকতেও বোবা এবং

চোখ থাকতেও অন্ধ হয়ে থাকুন , 

প্রতিবাদ করেছেন কি মরেছেন ! 

কি দরকার ঘরের খেয়ে 

বনের মোষ তাড়ানোর ? 

তার চেয়ে বরং ঘরে থেকে উদরপূর্তি করুন

           আর 

নাকে সর্ষের তেল দিয়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে

দেশটা কবে আরও উন্নত হবে ? 

ভাবতে ভাবতে, সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখুন । 

আর ঘুম ভেঙে উঠে আমাদের দেশটাকে

আরও উচ্ছন্নে যেতে দিন , 

মনে মনে ভাবুন , পরের দেশ পরমানন্দ

যতো উচ্ছন্নে যায় ততোই আনন্দ । 

আমাদের দেশ অনস্ক্রিন আর অফ্স্ক্রিন

তাড়কাখচিত মহাদেশ , 

আমাদের সকলেরই যেন

সোনালী চামড়ার মুখোশের আড়ালে

ঘৃণ্য - কালো - নৃশংস মুখ -

আর দামি দামি জীর্ণ বেশ । 

মুখ বুজে সহ্য করে , প্রতিবাদ না করে

আরও , আরও , আরও 

উন্নত হোক আমাদের এই বসুন্ধরা , 

আমাদের এই মাতৃভূমি , 

সকল দেশের রানী সে যে -

আমাদের জন্মভূমি ।