সুকুমার রায়ের গল্প।

দুলিরাম অনেকক্ষণ হাঁ করিয়া দাঁড়াইয়া রহিল, তারপর মুখখানা লাল করিয়া হঠাৎ এক দৌড়ে বাড়ির ভিতর ঢুকিয়া গেল ।

সুকুমার রায়ের গল্প।

আমরা সব রেগে-মেগে লাল হয়ে দাশুকে তেড়ে ধরে বললাম, "হতভাগা, দ্যাখ দেখি সব মাটি করলি, অর্ধেক কথাই বলা হল না ।"

অন্যতম হাস্যরসাত্মক গল্প । ছোটোদের জন্য লেখা অন্যধরনের একটি লেখ্য

সকলে প্রতিজ্ঞা করিলাম, আর তাঁর ক্লাশে গোলমাল করিব না, যত‌‌ই পড়া দিন না, খুব ভালো করিয়া পড়িব।

সুকুমার রায়ের একটি অন্যতম উপন্যাস হলো ব্যাঙের সমুদ্র দেখা

কালাচাঁদ হাঁ হাঁ করিয়া একেবারে তেলে-বেগুনে জ্বলিয়া উঠিল।

বিষ্ণুবাহন বেচারা কিছুই জানে না, সে ভাবিল, শ্রোতাদের কোথাও একটা কিছু ঘটিয়াছে, তাই সকলে হাসিতেছে।

বেলা যতই বাড়িয়া চলিল, জলের জন্য সকলে ততই অস্থির হইয়া পড়িতে লাগিল।

স্ট্যানলি বছরখানেক ঘুরে তাঁর দেখা পেলেন বটে, কিন্তু তখন লিভিংস্টোনের মর-মর অবস্থা।

মানুষের অকৃতজ্ঞতার কথা ভাবিতে ভাবিতে, দারিদ্র্য ও অনাদরের মধ্যেই এই কীর্তিমান পুরুষের জীবন শেষ হইল।

তিনি বলিলেন, রোগের বীজকে কাহিল করিয়া সেই বীজের টীকা দাও—তাহাতেই রোগ সারিবে।

ডারুইনকে যাঁহারা জানিতেন, তাঁহারা বলেন যে, সকলকে প্রাণ দিয়া এমন ভালবাসিতে আর কেহ পারে না।

মূর্খ সৈনিক তৎক্ষণাৎ তলোয়ারের আঘাতে তাঁহার মাথা কাটিয়া ফেলিল।

এক একটা সামান্য ঘটনা থেকে জগতে কত বড় বড় কাণ্ড, কত আবিষ্কার, কত মারামারি, কত যুদ্ধবিগ্রহের আরম্ভ হয়েছে৷

বৈজ্ঞানিকের 'দেখা' আর সাধারণ লোকের দেখায় তফাৎ আছে৷

শিশুর মতো নির্মল সুন্দর জোয়ানকে পশুর মতো খাঁচার মধ্যে পুরে, শিকল দিয়ে তার হাত পা বেঁধে, তার শত্রুরা তাকে ধরে নিয়ে গেল...

প্রায় সওয়া শ বৎসর আগে অর্থাৎ লিভিংস্টোনের অনেক পূর্বে মাঙ্গো পার্ক আফ্রিকার অজানা দেশ দেখতে গিয়েছিলেন।

গরুটা যদি শয়তানি ক'রে ফাঁকি দেয়, তা হলে কলুর ত লোকসান হয়। এই ভেবে তিনি আবার কলুর কাছে ফিরে গেলেন।

এই না ব'লে তারা ওয়াসিলিসার চুল ধরে হিড়্‌হিড়্‌ ক'রে টেনে তাকে বাড়ির বাইরে তাড়িয়ে দিয়ে, ঘরের খিল এঁটে দিল।

এ কবিতার কি আশ্চর্যগুণ— তারপর হ‌‌ইতে কবিতা লেখার ফ্যাশান স্কুল হ‌‌ইতে একেবারেই উঠিয়া গেল।

বর ততক্ষণে আধ কামান অবস্থায় ক্ষেপিয়া পাগলের মত হইয়াছে, কিন্তু নাপিত তাহার কথায় কানও দেয় না।

অমনি লোলির মনে হল যেন তার সমস্ত শরীর ঝিম্‌ঝিম্‌ করছে; তার হাত-পাগুলো সুড়্‌ সুড়্‌ করে বেঁকেচুরে কী রকম ছোট হয়ে যাচ্ছে

সেই যেদিন গাছের ডালে মাছ বসেছিল, নদীতে জাল ফেলে খরগোস ধরলে— সেদিনের কথা তোমার মনে নেই?

“আমি কি অত জানি? দেখলুম ঝিয়েরা কাঁদ্‌ছে, বৌমা কাঁদ্‌ছেন, তাই আমিও কাঁদ্‌তে লাগলুম—ভাবলুম একটা কিছু হয়ে থাক্‌বে।”

আশ্চর্য এই, পালোয়ান এত যে কায়দা আর এত যে প্যাঁচ আমাদের উপর খাটাইত, নিজের বেলায় তার একটিও তাহার কাজে আসিল না।

দাঁড়কাক যদি দ্রিঘাংচু না হয়, আর তাকে মন্ত্র বলতে গিয়ে অন্য লোকে শুনে ফেলে, তা হলেই সর্বনাশ৷

পেটে হাত দিয়ে গড়াগড়ি করে, একবার চিৎ হয়ে, একবার উপুড় হয়ে, তার হাসি আর কিছুতেই থামে না।

সেই ভদ্রলোকটি কুকুরটাকে প্রায়ই রুটিওয়ালার দোকানে 'কেক্‌' আনবার জন্য পাঠাতেন।

ছুটির পর আমরা সবাই মিলিয়া চেষ্টা করিয়াও তাহার দোষ বুঝাইতে পারিলাম না ।

সে মেয়েটিকে মাথায় করে, স্রোত ঠেলে, আঁধার ঠেলে, বরফের মত ঠাণ্ডা নদী মনের আনন্দে পার হয়ে গেল।

এই এক বরে ভিখারি চোখের দৃষ্টি ফিরে পেল, ধনজন পেল, ছেলেপিলে, নাতি-নাতনি পেল, দীর্ঘজীবন পেল।

পণ্ডিতমশাই তখন কি যেন একটা স্বপ্ন দেখিয়া অবাক হ‌‌ইয়া নাক ডাকাইতেছিলেন।

সপ্তাহে একদিন, রাত্রে, অপ্সরাদের সকলকে ইন্দ্রের সভায় হাজির থাকতে হয়।

আজ থেকে আবার সভায় গিয়ে বসব। আর যে টুঁ শব্দটি করবে তার মাথা উড়িয়ে দেব।

তারপর পূর্ণিমার রাতে তানে আর সেই দুষ্টু পরীরা ছুটে বেরুল মাতারিকির তারা ধরতে।

গাধাকে বেশ ক'রে খুর বুলিয়ে কামাতে লাগল। সে তামাসা দেখবার জন্য চারিদিকে ভিড় জমে গেল।

খানিক বাদেই একটা চিৎকার গর্জনের মত শোনা গেল, রাজা দৌড়ে গিয়েই দেখেন পিটার একটা ছুরি নিয়ে তার বোনকে মারল৷

আপনি যত বড়ই দেবতা হন না কেন, সে দেশে বাহাদুরি করতে গেলে শেষে লজ্জা পেতে হবে।

আজ আমায় একটি পয়সা দিন, তারপর ঊনত্রিশ দিন দ্বিগুণ করে দেবার হুকুম দিন।

এই রইল তোমার টাকা! এর চেয়ে আমার গান আর ঘুম ঢের ভাল!

শ্যামচাঁদ হাসিবে কি কাঁদিবে কিছুই ঠিক করিতে পারিল না- ফ্যাল্‌ ফ্যাল্‌ করিয়া তাকাইয়া রহিল ।

সে সৈন্যদল এখনও তাকে খরচ দিয়ে খাইয়ে পড়িয়ে মানুষ করছে।

এক বছরের রাজা সেখানে জন্ম ভরে রাজত্ব করতে লাগলেন।

কত তলোয়ার ঘেঁটে-ঘুঁটে, দেখে আর শুঁকে, চটপট তার বিচার করেন।

হিংসুটি কিনা সবাইকে হিংসে করে, সে তো দিদিকেও হিংসে করত।

দাদার দাদাগিরির অন্ত নেই।

কেদারবাবু বড় বদরাগী লোক। যখন রেগে বসেন, কাণ্ডাকাণ্ড জ্ঞান থাকে না।

সে বসে বসে সুতোর জন্যে কড়া রকমের একটা মাঞ্জা তৈরির উপায় চিন্তা করছে।

সব জিনিস মন দিয়ে দেখতে শেখ, আর ভাল ক'রে বর্ণনা করতে শেখ, তা হলেই তোমার বুদ্ধি খুলবে।

দুই বন্ধু ছিলো , একজন অন্ধ আর একজন কালা।

সে আমাদের বোকা বানাইয়া তামাশা দেখিবার জন্য এমন সকল ফন্দি বাহির করিত যে, আমরা তাহার বুদ্ধি দেখিয়া অবাক হইয়া থাকিতাম।

কিন্তু দেবতাদের মনের ভয় তবুও কিছু কমল না।

স্বয়ং হেডমাস্টার মশাইয়ের ঘর থেকে তার টিফিন খাবার চুরি হয়ে গেছে।

সবাই মিলে উৎ‌সাহ আর আগ্রহে মামা দেখবার জন্য একেবারে ঝুঁকে পড়লাম।

গোপালের ঘুড়ি লাটাই সুতো ইত্যাদি সরঞ্জাম আঠারো দিনের জন্য মামার জিম্মায় বন্ধ রহিল।

দুই দিক হইতেই রেষারেষির চোটে কুকুরটা ছুটিয়া পালাইল।

বুদ্ধিমান উকিলের আর দক্ষিণা পাওয়া হল না।

অর্ফিয়ুস নির্ভয়ে বীণা বাজাইতে বাজাইতে পাতালের দিলে চলিলেন।